X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

থেরেসা মের বিষয়ে অনাস্থা বাড়ছে ব্রিটিশ এমপিদের, আস্থা ভোটের ডাক

বিদেশ ডেস্ক
১৬ নভেম্বর ২০১৮, ১৮:৩৭আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০১৮, ১৮:৩৭
image

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা (নো কনফিডেন্স) জানিয়ে কনজারভেটিভ পার্টির চেয়ারম্যান গ্রাহাম ব্র্যাডিকে চিঠি পাঠিয়েছেন বেশ কয়েক জন এমপি। গত জুন মাসে এমন কয়েকটি চিঠি পাঠানোর কথা জানা গেলেও সম্প্রতি আরও বেশ কয়েকজন এমপি আস্থা ভোট ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন। ঠিক কত জন এমপি চিঠি পাঠিয়েছেন চেয়ারম্যান ব্র্যাডি তা না জানলেও এমপিদের কয়েকজন নিজেরাই সেটা প্রকাশ করেছেন।  বার্তা সংস্থা রয়টার্স উল্লেখ করেছে, ৪৮ জন অনাস্থা জানিয়ে চিঠি পাঠালেই থেরেসা মের বিরুদ্ধে ভোটের আয়োজন করা হবে। ৩১৫ জন এমপির মধ্যে  ১৫৮ জন এমপি বিরুদ্ধে ভোট দিলেই নেতৃত্ব থেকে সরে যেতে হবে তাকে। থেরেসা মের বিষয়ে অনাস্থা বাড়ছে ব্রিটিশ এমপিদের, আস্থা ভোটের ডাক

থেরেসা মে যেভাবে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছেন তা নিয়ে মতবিরোধে তার সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে পদত্যাগ করেন ব্রেক্সিট বিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস, তার পরপর ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। নভেম্বরের ৯ তারিখে পদত্যাগ করেন যুক্তরাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী জো জনসন। গত ১৫ নভেম্বর পদত্যাগ করেন ব্রেক্সিট বিষয়ক মন্ত্রী ডোমিনিক রাব, স্টেট ফর ওয়ার্ক অ্যান্ড পেনসন মন্ত্রী এসথার ম্যাকভে, ব্রেক্সিট মন্ত্রণালয়ের আরেক মন্ত্রী সুয়েলা ব্রাভেরম্যান এবং নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শৈলেশ ভারা। আপত্তির মূল বিষয় হয়ে দেখা দিয়েছে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের জন্য প্রযোজ্য শুল্কের বিধানটি।  নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্যের অংশ হলেও থেরেসা মের সর্বশেষ ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন পরিকল্পনায় অঞ্চলটিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শুল্ক ব্যবস্থা কার্যকর রাখার কথা বলা হয়েছে।

এমপি জ্যাকব রেস-মগ তার চিঠিতে লিখেছেন, ‘রাজনীতিবিদদের প্রতিশ্রুতির প্রতি নিবেদিত থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়া উচিত না যা তারা পূরণ করতে পারবেন না। আফসোসের বিষয়, বর্তমান পরিস্থিতি তেমন নয়।’

এমপি হেনরি স্মিথ লিখেছেন, ‘দুঃখের সঙ্গে আপনাকে জানাতে হচ্ছে, কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থেরেসা মের প্রতি আমি আস্থা হারিয়ে ফেলেছি।’

এমপি শেরিল মুরের ভাষ্য, ‘প্রধানমন্ত্রী মের ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের জন্য নির্ধারিত নীতির প্রতি আমার আস্থা নেই এবং তাই তার নেতৃত্বের বিষয়ে ভোটাভুটি আয়োজনের প্রস্তাব করছি।’

এমপি অ্যান মারি বৃহস্পতিবার তার চিঠি দিয়েছেন। তিনি বিবিসিকে বলেছেন,  ‘আমি মনে করি বর্তমান প্রেক্ষিতে থেরেসা মে যথার্থ নেতা নন এবং আমি তার বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আয়োজনের অনুরোধ করেছি। আমি একা নই এমন প্রস্তাবের পক্ষে। আমাকে খুবই দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে এমন চিঠি লিখতে হয়েছে। কিন্তু এখন অন্য যেকোনও কিছুর চেয়ে দেশ বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’

এমপি লি রাওলিও বৃহস্পতিবার মের প্রতি অনাস্থা ভোটের আয়োজন করতে চিঠি দিয়েছেন। তিনি আইটিভিকে বলেছেন, ‘আমি চিঠিটি পাঠিয়েছি কারণ আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রী তার গৃহীত নীতি পরিবর্তন করবেন না। ভালো হতো যদি তিনি তা করতেন।’

এমপি স্টিভ বেকার ২২ অক্টোবর অনাস্থা ভোটের জন্য চিঠি পাঠিয়েছেন। তার ভাষ্য, ‘আমি বুঝি যে তাকে অপসারণের প্রস্তাব গৃহীত হবে না। কিন্তু ক্রমাগত পাহাড়ের দিকে জাহাজকে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এমন ক্যাপ্টেনকে তো সমর্থন করা যায় না। আর তাই আমি দুঃখের সঙ্গে নো কনফিডেন্স ভোটের দাবি করেছি।

এমপি সিমন ক্লার্কও বৃহস্পতিবার সাংবাদিদের জানিয়েছিলেন, তিনি আস্থা ভোটের দাবি জানিয়েছেন।

গত অক্টোবরে অনুষ্ঠিত কনজারভেটিভ পার্টির বার্ষিক সম্মেলনের ঠিক আগে এমপি জেমস ডুডরিজ থেরেসা মের নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এমন একজন কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যকেও দেখিনি যিনি মনে করেন আগামী নির্বাচনে থেরেসা মে আমাদের নেতৃত্ব দিতে পারবেন। পরিস্থিতি যখন এমন, তাখন আমাদের আমাদের উচিত এখনই পরিবর্তন সাধিত করা এবং এমন কাউকে নেতৃত্বে নিয়ে আসা যিনি যথাযথভাবে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন।’

এমপি অ্যান্ড্রু জেকিন্স গত জুন মাসে আস্থা ভোটের দাবি জানিয়ে লেখা তার চিঠির সমর্থনে বলেছিলেন, ‘তিনি এর বিরোধিতা করতে পারেন। কিন্তু আমি দৃঢ়ভাবে মনে করি, তিনি জিততে পারবেন না। এখনই সময় ব্রেক্সিটের স্বপ্নকে রক্ষা ও আমাদের দলকে রক্ষার জন্য নতুন নেতা নির্বাচন করা।’

এমপি অ্যান্ড্রু ব্রিজেন আস্থা ভোটের দাবি জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন গত জুন মাসে। তার ভাষ্য, ‘আমরা শুধু তার কাছে চেয়েছি যে তিনি যেন তার ঘোষিত প্রতিশ্রুতির প্রতি নিষ্ঠাবান থাকেন। আমরা তাকে অনুরোধ করেছিলাম আমাদের দেশের মুদ্রা, সীমান্ত ও আইনের ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনতে কাজ করার জন্য। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, তার দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো আসলে ভণ্ডামি ও ধোঁকা দেওয়ার কৌশল।’

এরা ছাড়াও এখন পর্যন্ত ব্রিটিশ পার্লামান্টের সদস্য  ফিলিপ ডেভিস, পিটার বোন, নাদিন ডোরিস, মার্টিন ভিকার্স, অ্যাডাম হলওয়ে, জন হোইয়াইটিঙ্গেল, লরেন্স রবার্টসন, মার্ক ফ্রাংকয়েস ও মারিয়া কলফিল্ড প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের বিরুদ্ধে আস্থা ভোটের আয়োজনের অনুরোধ করে চিঠি পাঠানোর কথা প্রকাশ করেছেন।

/এএমএ/
সম্পর্কিত
ইউক্রেনকে ৬২ কোটি ডলারের অস্ত্র সহায়তা দেবে যুক্তরাজ্য
ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে অন্তত ৫ অভিবাসী নিহত
ইউরোপে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তাপমাত্রা বাড়ছে
সর্বশেষ খবর
ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য খালাস করে গেলেন যে নারী ট্রাকচালক
ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য খালাস করে গেলেন যে নারী ট্রাকচালক
বাবার সঙ্গে অভিমান করে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার অভিযোগ
বাবার সঙ্গে অভিমান করে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার অভিযোগ
প্রেম নাকি বিয়ে, মুখ খুললেন ইলিয়ানা
প্রেম নাকি বিয়ে, মুখ খুললেন ইলিয়ানা
কুড়িগ্রাম জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালককে শোকজ
কুড়িগ্রাম জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালককে শোকজ
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা