ভারতের আসামে নাগরিক তালিকার (এনআরসি) চূড়ান্ত খসড়া থেকে বাদ পড়া ৪০ লাখ মানুষের মধ্যে এ পর্যন্ত মাত্র সাড়ে তিন লাখ মানুষ নিজেদের ভারতীয় নাগরিক দাবি করে অন্তর্ভুক্তির আবেদন করেছে। নতুন করে অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদনের নির্ধারিত আড়াই মাস সময়সীমার মধ্যে প্রায় দুই মাস শেষ হতে চললেও আবেদনের বাকি রয়েছে সাড়ে ৩৬ লাখ মানুষ। পাশাপাশি, ‘অবৈধ নাগরিক’ হওয়া সত্ত্বেও বেশ কিছু ব্যক্তির নাম প্রাথমিক খসড়ায় স্থান পেয়েছে অভিযোগ করে তাদেরকে বাদ দেওয়ার জন্য আবেদন জমা পড়েছে। এমন আবেদনের সংখ্যা ১০০ থেকে কিছু কম। নাগরিক তালিকা প্রণয়ন সংশ্লিষ্ট সূত্রকে উদ্ধৃত করে ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই এসব কথা জানিয়েছে।
৩০ জুলাই আসামের রাজধানী গৌহাটি থেকে রেজিস্ট্রার জেনারেল অব ইন্ডিয়া চূড়ান্ত জাতীয় নাগরিকত্ব নিবন্ধন তালিকা উন্মুক্ত করেন। নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা ৩ কোটি ২৯ লাখ অধিবাসীর মধ্যে ২ কোটি ৮৯ লাখকে চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই তালিকায় স্থান পায়নি রাজ্যটির ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭০৭ জন বাসিন্দা। তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব এখন প্রশ্নের মুখে। আসামে এদের এখন সরাসরি ‘অবৈধ বিদেশি’ বলেই চিহ্নিত করা হচ্ছে। তাদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর দাবিও উঠছে কোনও কোনও মহল থেকে। এ অবস্থায় আসামে নাগরিক তালিকায় নতুন করে নাম তোলা এবং এ সংক্রান্ত আপত্তি জানানোর জন্য নতুন তারিখ ঘোষণা করে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানায়, ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে পরবর্তী ৬০ দিন ধরে এই প্রক্রিয়া চলবে। সে অনুযায়ী ২৫ নভেম্বরের মধ্যে এ সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে ১ নভেম্বর আপত্তি জানানোর সময়সীমা আরও বাড়িয়ে ১৫ ডিসেম্বর করে আদালত।
সে সময়সীমা শেষ হতে আর এক মাসেরও কম সময় বাকি আছে। বাদ পড়াদের বেশিরভাগই এখনও অন্তর্ভুক্তির আবেদন জানায়নি।
সূত্রকে উদ্ধৃত করে পিটিআই জানিয়েছে শনিবার (১৭ নভেম্বর) দিল্লিতে আসামের নাগরিকপঞ্জির বিষয়ে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ, আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনেওয়াল, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব রাজিব গৌবা, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর ডিরেক্টর রাজিব জৈন। নাগরিকপঞ্জিতে অন্তর্ভুক্তির আবেদন বা অভিযোগ এখনও পর্যন্ত বেশ কম জমা পড়ার বিষয়টি সেখানে আলোচিত হয়েছে।