সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডে সৌদি যুবরাজের সংশ্লিষ্টতা বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিবৃতিকে লজ্জাজনক আখ্যা দিয়েছে ইরান। ওই বিবৃতিতে সৌদি সহিংসতার ঘটনা বর্ণনায় ইরানকে অভিযুক্ত করায় ট্রাম্পকে উপহাস করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ।
গত ২ অক্টোবর ইস্তানবুল কনস্যুলেটে নিহত সৌদি সাংবাদিক খাশোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে মঙ্গলবার বিবৃতি দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের বিরুদ্ধে সৌদি আরব ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ওপর মার্কিন সমর্থনকে ন্যায় সঙ্গত প্রমাণ করতে গিয়ে বিবৃতি ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন। ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হিসেবে সৌদি আরবকে তুলে ধরতে গিয়ে ট্রাম্প লিখেছেন, বিশ্ব এক বিপদজনক জায়গা! বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উগ্রপন্থী ইসলামী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়েরে নেতৃত্বে সৌদি রাজতন্ত্র কোটি কোটি ডলার ব্যয় করেছে, যেখানে ইরান মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বহু আমেরিকান ও নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে।
মঙ্গলবারে টুইটারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ লিখেছেন, ‘খুবই অদ্ভূতভাবে ট্রাম্প তার লজ্জাজনক বিবৃতির প্রথম অনুচ্ছেদ সৌদির সহিংসতার ঘটনায় ইরানকে দায়ী করতে যত ধরণের কুকর্মের কথা চিন্তা করতে তার সবই ব্যবহার করেছেন’। তিনি লেখেন, ‘সম্ভবত আমরা ক্যালিফোর্নিয়ার আগুনের জন্যও দায়ী কেননা আমরা বনাঞ্চল সমতল করতে সহায়তা করিনি- যেমন ফিনল্যান্ডের বাসিন্দারা করে’। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার বনাঞ্চলে মারাত্মক দাবানল সৃষ্টি হয়। ওই এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ট্রাম্প বনবিভাগকে দাবানলের জন্য দায়ী করেন। তিনি বলেন, ফিনল্যান্ডে দাবানল কম হয় কারণ তারা ‘বন পোড়াতে ও পরিষ্কার’ করতে অনেক সময় ব্যয় করে। তার এই বক্তব্য ঘিরে সমালোচনা শুরু হয়। আর সেদিকেই ইঙ্গিত করে তাকে খোঁচা দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ইরান ও সৌদি আরব আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বি। মধ্যপ্রাচ্যের সিরিয়া ও ইয়েমেন যুদ্ধ ছাড়াও ইরাক ও লেবাননে বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মধ্যেই তাদের অবস্থানও বিপরীতমুখী। প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েই ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন ট্রাম্প। ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়ে ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। ইরান বিরোধী তৎপরতায় সৌদি আরবকে ঘনিষ্ঠ মিত্র বিবেচনা করে হোয়াইট হাউস।