গত এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত অতিক্রম করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি ট্রেন। শুক্রবার সকালে রাজধানী সিউলের দক্ষিণ থেকে ২৮ জন প্রকৌশলীকে নিয়ে ট্রেনটি রওনা দেয়। সীমান্তবর্তি পানমুন স্টেশন থেকে ট্রেনটিকে বহন করা শুরু করে উত্তর কোরিয়ার ইঞ্জিন। আগামী ১৮ দিন ধরে ট্রেনের প্রকৌশলীরা উত্তর কোরিয়ার ১২ কিলোমিটার পথের রেল সেবার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন। তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির সংবাদদাতা জানিয়েছেন, এই সফরে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রকৌশলীরা শুধু পরিদর্শনই করতে পারবেন কোনও কিছু ছুঁয়ে দেখতে পারবেন না।
গত বছর এপ্রিলে দুই কোরিয়ার প্রথম ঐতিহাসিক শীর্ষ বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার নেতা নিজ দেশের ট্রেন ব্যবস্থা উন্নত করতে দক্ষিণ কোরিয়ার সহায়তা চান। ওই সময়ে নিজ দেশের ট্রেন সেবাকে বিব্রতকর বলে বর্ণনা করেন। দেশটির কোনও কোনও রেলওয়ে অবকাঠামো ২০ শতকের প্রথম দিকে নির্মিত হওয়ায় দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে হলেও তাত আমূল পরিবর্তন আনতে হবে।
সিউল থেকে বিবিসির সংবাদদাতা লরা বাইকার জানিয়েছেন, এখনই দক্ষিণ কোরিয়ার প্রকৌশলীরা উত্তর কোরিয়ার ট্রেন সার্বিস মেরামত শুরু করতে পারবেন না। এজন্য তাদের জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে বিশেষ অনুমতি নিতে হবে। ওই নিষেধাজ্ঞায় উত্তর কোরিয়ায় জ্বালানী এবং নির্দিষ্ট যন্ত্রপাতি নেওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার পুনরেকত্রীকরণ বিষয়ক মন্ত্রী চো মিয়ং গিয়ন বলেন, এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো বিভক্তি কমিযে আনা এবং কোরিয় উপত্যকার নতুন ভবিষ্যত উন্মুক্ত করা। দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ তাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, একটিক সংযুক্ত রেলওয়ের মাধ্যমে উত্তর ও দক্ষিণ একযোগে সমৃদ্ধ হবে। এবং কোরিয়ান উপত্যকায় শান্তি স্থাপনের ক্ষেত্র সংহত হবে। রেলপথের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ট্রেন উত্তর পূর্ব এশিয়া এবং বিশ্বে শান্তি এবং সমৃদ্ধ বয়ে নিয়ে যাবে।
গত এক বছর ধরে দুই কোরিয়ার মধ্যে সম্পকর্ উন্নয়ন অব্যাহত থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা স্থগিত আছে। গত জুনে সিঙ্গাপুর সম্মেলনে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে আলোচনাকে সম্মান না দেখানোর অভিযোগ করে আসছে পিয়ংইয়ং ও ওয়াশিংটন।
তবে এমন পরিস্থিতি সত্ত্বেও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন জানিয়েছেন, রেলওয়ে প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তিনি। যুক্তরাষ্ট্র এই রেল জরিপে সমর্থন দিলেও মুন জায়ে ইনের সামনে বেশ কয়েকটি জটিলতা রয়েছে। এই প্রকল্প এগিয়ে নিতে হলে যুক্তরাষ্ট্রকে উত্তর কোরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন করতে হবে তাকে।