সিরিয়ার মানবিজ শহরে প্রবেশ করেছে দেশটির সরকারি বাহিনী। তুর্কি অভিযান মোকাবিলায় সহায়তা করতে সশস্ত্র কুর্দি সংগঠনগুলোর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে এ পদক্ষেপ নিয়েছে সিরীয় সরকার। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা জানিয়েছে, শুক্রবার (২৮ ডিসেম্বর) মানবিজে সিরীয় পতাকা উড়িয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।
সম্প্রতি সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার পর কুর্দি নিয়ন্ত্রণাধীন মানবিজ অঞ্চলে ঢুকে পড়ে তুরস্কের সেনাবাহিনী। কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানোর হুমকি দেওয়া হয়।তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ব বার্তা সংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,দেশটির সেনা সদস্য ও সরঞ্জাম বহনকারী ট্রাক,দুটি ট্যাঙ্ক ও অন্য সাঁজোয়া যান মঙ্গলবার (২৫ ডিসেম্বর) মানবিজের পশ্চিমাঞ্চলীয় আরিমাহ গ্রামে ঢুকে পড়ে। মানবিজের কেন্দ্রস্থল থেকে গ্রামটির দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার।
‘তুর্কি অভিযান’ ঠেকাতে সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারের সহায়তা চায় কুর্দি সংগঠন ওয়াইপিজি (পিপল’স প্রটেকশন ইউনিট)। এর পর পরই মানবিজে সিরীয় সরকারি বাহিনী প্রবেশ করে। ওড়ানো হয় সিরীয় পতাকা। সানার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মানবিজে অবস্থানরত সকল সিরীয় নাগরিক ও অন্যদের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছে সিরিয়ার সেনাবাহিনী।
মানবিজের নিয়ন্ত্রণ মূলত কুর্দি সংগঠন ওয়াইপিজি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সের (এসডিএফ) হাতে। সিরিয়ায় আইএস বিরোধী যুদ্ধে ওয়াইপিজি নেতৃত্বাধীন এসডিএফকে বহুদিন ধরেই সমর্থন দিয়ে আসছে ওয়াশিংটন। তবে কুর্দিদের বিরুদ্ধে তুরস্কের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। দেশটি কুর্দিদের সন্ত্রাসী মনে করে। আঙ্কারার দাবি, সিরিয়ায় কুর্দিদের সংগঠন ওয়াইপিজি আসলে তুরস্কে কুর্দিদের নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন পিকেকের শাখা। কুর্দি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত পিকেকে তুরস্ক, ইরান, ইরাক ও সিরিয়ার অংশবিশেষ নিয়ে কুর্দিস্তান নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী। তিন দশক ধরে তুরস্কের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছে পিকেকে। ১৯৮৪ সাল থেকে এ বিদ্রোহে অন্তত ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
গত ১৯ ডিসেম্বর সিরিয়া থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মানবিজে টহলে থাকা মার্কিন সেনারা এখনও সেখানে আছে নাকি তাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জানা যায়নি মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের প্রতিক্রিয়াও।