সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের পর এবার সিরিয়ায় দূতাবাস খোলার ঘোষণা দিল কুয়েত। সিরিয়ায় প্রায় আট বছর আগে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার পর অন্য অনেক দেশের মতো কুয়েতও তাদের দামেস্ক দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছিল। সিরিয়ার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সরকারি সূত্র শুক্রবার জানিয়েছে, আগামী ১০ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে দামেস্কে কুয়েতের কূটনৈতিক মিশনের কাজ পুনরায় শুরু হবে।
উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি)-র অন্য সদস্য দেশগুলোর ধারাবাহিকতায় ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে দামেস্কের দূতাবাস বন্ধ করে দেয় কুয়েত। পরের মাসে সিরিয়াও কুয়েতে তার কূটনৈতিক মিশন বন্ধ করে দেয়। ২০১১ সালের মার্চ মাসে সিরিয়ায় সহিংসতা শুরু হয়েছিল।
বাহরাইন সরকার সিরিয়ায় নিজের দূতাবাস আবার চালু করার ঘোষণা দেয়ার একই দিন কয়েক ঘণ্টা পর কুয়েতের পক্ষ থেকে দূতাবাস চালু করার ঘোষণা দেয়া হলো। এর একদিন আগে সংযুক্ত আরব আমিরাত দামেস্কে আনুষ্ঠানিকভাবে তার দূতাবাসের কার্যক্রম শুরু করে।
গত ১৬ ডিসেম্বর গত কয়েক বছরের মধ্যে আরব লীগের কোনও সদস্য দেশের নেতা হিসেবে প্রথমবারের সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশির দামেস্ক সফর করেন। সফরে তিনি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন।
বৈঠকে সুদানের প্রেসিডেন্ট আশা প্রকাশ করে বলেন, সিরিয়া খুব শিগগিরই মধ্যপ্রাচ্যে নিজের ভূমিকা পালন শুরু করতে পারবে। তিনি এক্ষেত্রে খার্তুমের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। সুদানের প্রেসিডেন্টের ওই সফরের পর সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও কুয়েত সিরিয়ায় দূতাবাস খোলার সিদ্ধান্ত নেয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে আরব বিশ্বের মূলধারায় ফিরিয়ে নেওয়ার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তার অংশ হিসেবেই আরব দেশগুলো ফের দামেস্কে দূতাবাস চালু করছে। সিরিয়ায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট ফর্ড বলেন, সিরিয়ায় আমিরাতের দূতাবাস পুনরায় চালুর অর্থ হচ্ছে দেশটি আবারও দামেস্কে তাদের প্রভাব বিস্তার করতে চায়।
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান করা এই বিশেষজ্ঞ বলেন, আমার মনে হয়, খুব শিগগিরই তারা দামেস্কের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করবে। মূল উদ্দেশ্য, ইরানের প্রভাব কমানো। ফর্ড বলেন, ইরানের চেয়ে অনেক বড় বেসরকারি খাত রয়েছে আরব আমিরাতের। সিরিয়ার পুনর্গঠনে সেটাই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরবের এক কূটনীতিক রয়টার্সকে বলেন, আরব লীগের বেশিরভাগ সদস্য রাষ্ট্রই সিরিয়াকে সদস্যপদ দিতে আগ্রহী।
সাত বছরের গৃহযুদ্ধ শেষে এখন সিরিয়ার বেশ কয়েকটি বড় শহরের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছে প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদের সরকার। ২০১১ সালে যেসব এলাকায় তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল সেসব এলাকা তিনি এখন কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন তার ওপর মনোযোগ বেড়েছে। যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত বিরোধীদের শক্ত ঘাঁটিগুলোতে থাকা বিরোধীদের দমনে আসাদ মনোযোগী হতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। সূত্র: পার্স টুডে, আল জাজিরা।