ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরে শনিবার ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানে গুলিতে চার স্বাধীনতাপন্থী সশস্ত্র ব্যক্তি হয়েছে। এই ঘটনায় সেখানে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। কাশ্মিরের পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট এখবর জানিয়েছে।
গত এক দশকের মধ্যে চলতি বছরেই সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের প্রানহানি ঘটেছে বিরোধপূর্ণ কাশ্মিরে। এবছর সেখানে ৫ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মানবাধিকার গ্রুপগুলো বলছে নিহতদের মধ্যে ২৬৯ জন সশস্ত্র স্বাধীনতাকামী ও ১৫৬ জন বেসামরিক নাগরিক রয়েছে।
শনিবার ভোরে কাশ্মিরের দক্ষিণাঞ্চলীয় পুলাওয়ামা জেলায় স্বাধীনতাপন্থীদের একটি অবস্থান ঘিরে ফেলার কথা জানায় ভারতের নিরাপত্তাবাহিনী। কাশ্মির পুলিশ জানায়, সেখানে বন্দুকযুদ্ধে চার স্বাধীনতাকামী নিহত হয় তবে নিরাপত্তাবাহিনীর কোনও সদস্য হতাহত হয়নি। স্থানীয়দের দাবি, সরকারি বাহিনী এক বেসামরিক নাগরিকের বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটায়। ওই সময়ে আরও দুটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, হাজার হাজার বাসিন্দা স্বাধীনতাপন্থীদের পালাতে সহায়তা করতে এগিয়ে আসার পর বিক্ষোভ শুরু হয়। পাথর ছোড়া বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে সরকারি বাহিনী শটগান ও গুলি ও টিয়ার গ্যাস ছোড়ে। এতে অন্তত ছয়জন আহত হয়।
২০১৬ সালের ৮ জুলাই বন্দুকযুদ্ধের নামে কাশ্মিরের স্বাধীনতাকামী তরুণ হিজবুল কমান্ডার বুরহান মুজাফফর ওয়ানিকে হত্যা করে ভারতীয় সেনারা। ওই হত্যাকাণ্ডের পর কাশ্মিরের জনগণ প্রতিবাদে ফুঁসে উঠে। এ হত্যাকাণ্ডের জেরে নারী ও শিশুসহ শতাধিক মানুষ নিহত ও ১২ হাজার মানুষ আহত হন। নিরাপত্তা বাহিনীর ছররা গুলির আঘাতে চোখ হারান শত শত মানুষ। ওই সময় থেকেই সোফিয়ান, পুলওয়ামা ও অনন্তনাগ এলাকা স্বাধীনতাকামীদের শক্ত ঘাঁটি হয়ে উঠে। কাশ্মিরে বিদ্রোহীদের সমর্থনে তরুণদের রাজপথে নামার প্রবণতা দিনকে দিন বাড়ছে। নিরাপত্তা অভিযানের মধ্য দিয়ে বিদ্রোহী হত্যার সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোতে অতীতের তুলনায় প্রতিবাদ জোরালো হতে দেখা গেছে। তাছাড়া স্থানীয় নিরস্ত্র বাসিন্দাদেরকে দেখা গেছে বিদ্রোহীদের আশ্রয় দিতে। একই সময়ে সেখানে ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযান ক্রমাগত জোরদার হয়েছে। নিরাপত্তা অভিযানের নামে সেখানে প্রায়ই ঘটছে বেসামরিক হত্যার ঘটনা।