X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

পার্লামেন্টের ভোটে হেরে উভয় সংকটে থেরেসা

বিদেশ ডেস্ক
০৯ জানুয়ারি ২০১৯, ১১:২৭আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০১৯, ১৫:৩৬
image

ব্রেক্সিট প্রশ্নে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে থেরেসা মে যে চুক্তি করেছেন, তা নিয়ে বিরোধী লেবার পার্টির পাশাপাশি মতভেদ রয়েছে তার নিজ দল কনজারভেটিভ পার্টির অভ্যন্তরেও। ৬০০ পৃষ্ঠার ওই চুক্তি বাস্তবায়নে পার্লামেন্টের অনুমোদন পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। এমন অবস্থায় কোনও চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের প্রশ্ন সামনে চলে এসেছে। তবে, পার্লামেন্টের ব্রেক্সিট বিরোধী অংশ খুব সহজে তা হতে দিতে চান না। চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের পথে বাধা সৃষ্টি করতে তারা গত বছরের বাজেট বিল সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছে। বাজেটে সরকারকে কর সংক্রান্ত যে প্রশাসনিক ক্ষমতা দেওয়া আছে, তাতে সংশোধনী আনার প্রস্তাব দিয়েছে ব্রেক্সিটবিরোধীরা। সংশোধনীতে প্রশাসনিক ক্ষমতার পরিবর্তে পার্লামেন্টের অনুমোদনের অপরিহার্যতা আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

থেরেসা মে

২০১৯ সালের ২৯ মার্চের মধ্যে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হয়ে যাওয়ার কথা। বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক কেমন হবে তা নিয়ে জোটটির সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছেন থেরেসা। সে ব্রেক্সিট চুক্তি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অনুমোদন করানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে ব্রেক্সিট চুক্তি চূড়ান্ত করা নিয়ে বার বারই হোঁচট খেয়ে যাচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ব্রেক্সিট চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়ে দ্বিমতকে কেন্দ্র করে পদত্যাগ করেছেন দুই দুইজন ব্রেক্সিটবিষয়ক মন্ত্রী। অন্য মন্ত্রণালয়েরও কয়েকজন সরে দাঁড়িয়েছেন। পদত্যাগ করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনও। তুমুল বিরোধিতার মধ্যে থেরেসার ব্রেক্সিট চুক্তিটি পার্লামেন্টে অনুমোদন পাওয়া না পাওয়াজনিত অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে। তবে অনুমোদন না পেলে চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করা হতে পারে। একে নো ডিল ব্রেক্সিট নামে ডাকা হচ্ছে। তবে এ প্রশ্নেও রয়েছে বিরোধিতা। নো ডিল ব্রেক্সিট পরবর্তী পরিস্থিতিতে থেরেসা মে যেন বিপাকে পড়েন তা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ব্রেক্সিট বিরোধীরা। শুধু বিরোধীরাই নয়, নিজ দল কনজারভেটিভ পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতারাও এরইমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, তারা নো ডিল ব্রেক্সিট প্রশ্নে থেরেসার পাশে নেই।

কোনও চুক্তি ছাড়াই ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে আসার বিরোধিতাকারী এমপিরা মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) অর্থ বিল সংশোধনের পক্ষে ভোট দেন। ৩০৩-২৯৬ ভোটে লেবার নেতা কুপার উত্থাপিত প্রস্তাবটি পাস হয়। হাউস অব কমন্সে দেওয়া বক্তব্যে কুপার বলেন, হাউসের এমপিরা চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের বিপদ থাকার আশঙ্কার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন। ‘আমার আশঙ্কা, আমরা ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছি এবং সে পরিস্থিতি মোকাবিলার ক্ষমতা পার্লামেন্টের হাতে থাকবে না। আমি মনে করি, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে না দেখে আমাদের কিছু করা উচিত।’ বলেন কুপার।
এ সংশোধনী অনুযায়ী, চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিটের পর কর আইনে পরিবর্তন আনতে হলে ব্রিটিশ সরকারকে পার্লামেন্টের অনুমোদন নিতে হবে। কর আইন পরিবর্তনে সরকার প্রশাসনিক ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবে না। এ সংশোধনীর কারণে কর সংগ্রহের ক্ষেত্রে সরকারকে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হবে না। তবে ব্রেক্সিটের কর সংক্রান্ত আইনে ছোটখাটো পরিবর্তন আনতেও (ইইএ’র জায়গায় ইউকে লিখতেও) সরকারকে প্রতিবন্ধকতার মধ্যে থাকতে হবে।এর নেপথ্য ভূমিকা পালনকারী আইনপ্রণেতাদের আশা, সংশোধিত বিলটি পাস হওয়ায় ব্রেক্সিট ঠেকাতে আইনসভার মাধ্যমে আরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। 

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে একটি গণভোটের মাধ্যমে ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাজ্য। গত বছর নভেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রস্তাবিত চুক্তি অনুমোদন করেছেন সংগঠনটির নেতারা। ২৬ পৃষ্ঠার ঘোষণাপত্রসহ ৬০০ পৃষ্ঠার ওই চুক্তিটি বাস্তবায়িত হতে গেলে অবশ্যই তাতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অনুমোদন পেতে হবে। ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্য ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার তারিখ নির্ধারণ করেছে। 

গত ১১ ডিসেম্বরই ব্রেক্সিট চুক্তির চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য ভোটাভুটির কথা থাকলেও টোরি এমপি ও লেবার পার্টির এমপিদের কাছ থেকে পরাজয়ের আভাস পাওয়ার পর সে ভোটাভুটি বাতিল করেন থেরেসা। আগামী মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) থেরেসা মে’র ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হবে। এখনও প্রধানমন্ত্রী মে’র ব্রেক্সিট চুক্তির বিরোধিতা করে যাচ্ছেন এমপি’রা। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের ২০ জন এমপিও সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এর মধ্যে সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মাইকেল ফ্যালন ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী জাস্টিন গ্রিনিংও রয়েছেন। এ পরিস্থিতির কারণে শেষ পর্যন্ত চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে ব্রেক্সিটের পক্ষের নেতারা বলছেন, যেকোনোভাবেই হোক ব্রেক্সিট বাস্তবায়িত হবে।

/এফইউ/
সম্পর্কিত
রুশ গুপ্তচর সন্দেহে জার্মানিতে গ্রেফতার ২
ইইউ দেশগুলোকে ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র-বিধ্বংসী অস্ত্র পাঠাতে হবে: বোরেল
ইউক্রেনীয় পাইলটদের প্রশিক্ষণরোমানিয়াকে তিনটি এফ-১৬ দিচ্ছে নেদারল্যান্ডস
সর্বশেষ খবর
ভাগ্নিকে শায়েস্তা করতে নাতিকে হত্যা
ভাগ্নিকে শায়েস্তা করতে নাতিকে হত্যা
৫ বছর বন্ধ সুন্দরবন টেক্সটাইল, সংকটে শ্রমিকরা
৫ বছর বন্ধ সুন্দরবন টেক্সটাইল, সংকটে শ্রমিকরা
বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপের ফাইনাল আজ
বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপের ফাইনাল আজ
টিভিতে আজকের খেলা (২০ এপ্রিল, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (২০ এপ্রিল, ২০২৪)
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া