ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বের হয়ে যেতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র খসড়া চুক্তির ওপর ভোট দেওয়া শুরু করেছেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। ব্রেক্সিট ইস্যুতে পাঁচ দিনের বিতর্কের পর স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত আটটা থেকে (বাংলাদেশ সময় বুধবার রাত ২টা) ভোট দেওয়া শুরু করেন আইনপ্রণেতারা। বিতর্কের সমাপনী ভাষণে আইনপ্রণেতাদের খসড়া চুক্তিতে সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, চুক্তি অনুমোদন না পেলে ব্রিটিশ জনগণ শ্রদ্ধা হারানোর ঝুঁকিতে পড়বে। অপরদিকে বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, জোড়াতালি দেওয়া এই চুক্তি যুক্তরাজ্যের জন্য অন্ধকারে বেপরোয়া লাফ দেওয়ার শামিল হবে।
২০১৯ সালের ২৯ মার্চের মধ্যে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হয়ে যাওয়ার কথা। পরবর্তী সম্পর্কের রূপরেখা নিয়ে জোটটির সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মে। সেই খসড়া চুক্তি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও চুক্তি নিয়ে দ্বিমতের কারণে পদত্যাগ করেছেন ব্রেক্সিটবিষয়ক দুইজন মন্ত্রী। অন্য কয়েকজন মন্ত্রীসহ পদত্যাগ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। তুমুল বিরোধিতার মধ্যে থেরেসার ব্রেক্সিট চুক্তি পার্লামেন্টে অনুমোদন না পাওয়ার আশঙ্কাই প্রবল। তিন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি ও দ্যা ইন্ডিপেনডেন্টের খবর বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে ভয়াবহ পরাজয়ের মুখে রয়েছেন থেরেসা মে।
ব্রেক্সিট খসড়া চুক্তি ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে পঞ্চম দিনের সমাপণী ভাষণ দেন। এদিন সন্ধ্যা ৬.২০ মিনিটে ভাষণ শেষ করেন তিনি। তবে চূড়ান্ত ভোটাভুটির আগে আইনপ্রণেতারা বেশ কয়েকটি সংশোধনীতে ভোটাভুটির মাধ্যমে চুক্তিতে পরিবর্তন বা বাতিলের ওপর ভোট দেন। এই ভোটাভুটি শুরু হয়েছে সন্ধ্যা সাতটায়। তিন থেকে চারটি সংশোধনীর ওপর ভোটাভুটির মাধ্যমে খসড়া চুক্তি পরিবর্তনের সুযোগ ছিল আইনপ্রণেতাদের হাতে। প্রতিটি সংশোধনীর ওপর ১৫ মিনিট ধরে ভোটাভুটি হয়।
৬৫০ আইনপ্রণেতার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে স্পিকার ও তার ৩ সহযোগী মিলে ৪ জনের ভোট দানের অধিকার নেই। আইরিশ রিপাবলিকান পার্টির আইনপ্রণেতারা তাদের আসনে বসেন না। সে কারণে ৬৩৯ ভোটের মধ্যে ৩২০ আইনপ্রণেতাদের ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত হবে। দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি ও দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের খবর অনুযায়ী ২৬২ আসনের লেবার দলের ভোটাধিকার থাকা ২৫৬ জনের প্রায় সব আইনপ্রণেতাই থেরেসার বিপক্ষে ভোট দিতে যাচ্ছেন। এদিকে ৩১৮ আসনসম্পন্ন কনজারভেটিভ পার্টির ভোট সংখ্যা ৩১৬টি। দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, এদের মধ্যে ১০০ জন থেরেসার বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে আশঙ্কা করা হচ্ছে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হবেন থেরেসা মে।