X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি বাংলাদেশিদেরও সহায়তা দেবে টিডিএস

বিদেশ ডেস্ক
১৭ জানুয়ারি ২০১৯, ২০:০৮আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০১৯, ২০:১০
image

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক এনজিও ‘টেরেস ডি হোমস’ (টিডিএস) মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয় বাংলাদেশিদের ওপর চাপ পড়ার কথা উল্লেখ করেছে তাদের এক প্রতিবেদনে। সংস্থাটি রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য, সুপেয় পানির সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা কার্যকর করার সেবা দিয়ে আসছে। এখন স্থানীয় বাংলাদেশিদের জন্যও সেবা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে তারা। রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি বাংলাদেশিদেরও সহায়তা দেবে টিডিএস

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সন্ত্রাসবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের নামে শুরু হয় নিধনযজ্ঞ। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হতে থাকে ধারাবাহিকভাবে। এমন বাস্তবতায় নিধনযজ্ঞের বলি হয়ে রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। আগে থেকে উপস্থিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় দশ লাখে। এসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে বসবাস করছে। তাদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে বহু সংস্থা।

বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের শিবিরে প্রসূতি ও শিশু স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা সংস্থা টিডিএস নূর নামের একজন নারীর কথা জানিয়েছে, যিনি রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পর একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। জন্মের পর শিশুটি শীর্ণকায় ছিল। টিডিএসে চিকিৎসার পর তার অবস্থার উন্নতি হয়। নূর তার শিশুকন্যা আয়েশার বিষয়ে মন্তব্য করেছেন, ‘টেরেস ডি হোমসের চিকিৎসা পাওয়ার আগে সে শীর্ণকায়, দুর্বল ও প্রায়ই অসুস্থ থাকত।’

টিডিএসের হেলথ প্রোজেক্টের ব্যবস্থাপক আইরিশ মারিয়াদ বলেছেন, ‘প্রায় চার লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা শিশুর অধিকাংশই ব্যাপক মাত্রায় পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। শিশুর জন্মের প্রথম এক হাজার দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাদের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে। এই স্তরে পুষ্টিহীনতায় তাদের ওপর চরম প্রভাব পড়তে দেখা যায়; দেরিতে গড়ে ওঠে শরীর, বাধাপ্রাপ্ত হয় বুদ্ধির বিকাশ। পুষ্টিহীনতার কারণে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় তারা রোগ-বালাইয়ের শিকার হয় অনেক বেশি।’ এখন পর্যন্ত টিডিএসের পুষ্টি সহায়তা কেন্দ্র ২০ হাজার শিশুকে চিকিৎসা দিয়েছে।

পুষ্টিহীনতার পাশাপাশি রয়েছে সুপেয় পানির সংকটের বিষয়টি। জুন ও সেপ্টেম্বরে বন্যা ও কলেরার মতো মহামারি দেখা দেয়। রোহিঙ্গা শিবিরে তাই সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিতে কাজ করছে টিডিএস। ক্লোরিন দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করার মতো প্রকল্প যেমন চলছে, তেমনি স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট স্থাপন ও সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করছে সংস্থাটি। তাদের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ৩০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গার জন্য সুপেয় পানির সরবরাহ এবং পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।

রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে নিপীড়িত হওয়ার কারণে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। অন্যদিকে স্থানীয়দের সঙ্গে তৈরি হচ্ছে তাদের মানসিক দূরত্ব। টিডিএসের মানসিক চিকিৎসা বিভাগের সমন্বয়ক সাকিব নাজমুল মন্তব্য করেছেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশিদের মধ্যে হতাশা আছে। প্রথমে তারা রোহিঙ্গাদের স্বাগত জানিয়েছিল। কিন্তু তারাও তো দরিদ্র। অথচ এখানে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে এখন। টেরেস ডি হোমস জানিয়েছে, এ সমস্যার সমাধানে সংস্থাটি এবার বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা উভয় পক্ষের জন্যই প্রকল্প গ্রহণ করতে চায়। তাদের লক্ষ্য একটি টেকসই ব্যবস্থা।

/এএমএ/
সম্পর্কিত
চীনে আমেরিকার কোম্পানিগুলোর প্রতি ন্যায্য আচরণের আহ্বান ব্লিঙ্কেনের
উখিয়া ক্যাম্পে রোহিঙ্গা যুবককে কুপিয়ে হত্যা
কক্সবাজার জেলার রোহিঙ্গা ভোটারদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
সর্বশেষ খবর
সৌন্দর্যের সংজ্ঞা বদলাতে চান ম্রুনাল
সৌন্দর্যের সংজ্ঞা বদলাতে চান ম্রুনাল
পিএসজির অপেক্ষা বাড়িয়ে দিলো মোনাকো
পিএসজির অপেক্ষা বাড়িয়ে দিলো মোনাকো
অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে আটকা পড়েছে শতাধিক পাইলট তিমি
অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে আটকা পড়েছে শতাধিক পাইলট তিমি
যুদ্ধ কোনও সমাধান আনতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী
যুদ্ধ কোনও সমাধান আনতে পারে না: প্রধানমন্ত্রী
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলেন তিন বিচারপতি
আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলেন তিন বিচারপতি