X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জিম্বাবুয়ের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের ‘কাঠামোবদ্ধ নির্যাতনের’ অভিযোগ

বিদেশ ডেস্ক
২৩ জানুয়ারি ২০১৯, ২০:৪৪আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০১৯, ২০:৫৭

বিক্ষোভ দমনে সেনাবাহিনীর অভিযানে কাঠামোবদ্ধ নির্যাতন ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে জিম্বাবুয়ের মানবাধিকার কমিশন। সরকারের নিয়োগকৃত মানবাধিকার গ্রুপটি বিক্ষোভ দমনে সেনা সদস্যের ব্যবহার করায় কর্তৃপক্ষের কঠোর নিন্দা করেছে। তেলের দাম দ্রুত বৃদ্ধির প্রতিবাদে এক সপ্তাহেরও আগে দেশটিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। সরকারের এক মুখপাত্র ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেছেন, যখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখন কঠোর হওয়ার দরকার রয়েছে। তবে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নির্যাতন সহ্য করা হবে না জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মানগাগওয়া।

জিম্বাবুয়ের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের ‘কাঠামোবদ্ধ নির্যাতনের’ অভিযোগ

চলতি মাসের শুরুতে তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট মানগাগওয়া। তেলের ঘাটতি মেটানোর লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলেও নাজুক অর্থনেতিক পরিস্থিতিতে থাকা দেশটির বহু অধিবাসী পড়েন বিপাকে। হঠাৎ করে তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে অনেকেই কাজে যাওয়ার বাস ভাড়াও যোগাড় করতে পারছেন না। এই কারণে প্রথমে হারারে ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর বুলাওয়েতে বিক্ষোভ শুরু হয়। মানবাধিকার কমিশনের বিবৃতিতে এস সপ্তাহের বিক্ষোভে আটজন নিহত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে অন্য খবরে অন্তত ১২ জন নিহত এবং বহু সংখ্যক মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়ার কথা বলা হয়েছে।

রাজধানী হারারের বিভিন্ন অঞ্চলে সেনাবাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালানোর খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার হারারেতে মিনিবাস চালকদের একটি জমায়েতে সেনা সদস্যদের পেটাতে দেখার কথা জানিয়েছে বিবিসি। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, তিনি এবং তার সঙ্গে আরও প্রায় ৩০ জনকে ঘিরে রাখা হয় এবং  সেনা সদস্যরা তাদের দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পেটায়। বিক্ষোভ সংশ্লিষ্টতায় ৬০০ জনেরও বেশিজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর মানবাধিকার গ্রুপ ও বিরোধী আইনজীবীরা বলেছেন অনেককেই বিনা বিচারে আটক করা হয়েছে। ২০১৬ সালে রবার্ট মুগাবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া প্রখ্যাত অধিকার কর্মী পাস্তুর ইভান মাওয়ারিকে গত ১৬ জানুয়ারি গ্রেফতার করে আটক রাখা হয়েছে।

বিক্ষোভ শুরুর পর গত সপ্তাহ থেকে অন্তত আটজনের মৃত্যুর কথা জানিয়ে জিম্বাবুয়ের মানবাধিকার কমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বেশিরভাগই তাজা গুলির ব্যবহারে নিহত হয়েছে। সেনা ও পুলিশ বাহিনীর পোশাকধারী ও সশস্ত্র সদস্যরা কাঠামোবদ্ধ নির্যাতনের উসকানি দিয়েছে বলেও বিবৃতিতে অভিযোগ তুলেছে মানবাধিকার কমিশন।

মানবাধিকার কমিশন বলেছে, যেসব স্থানে ব্যারিকেড স্থাপন করা হয়েছে বা বিক্ষোভকারীরা যেসব এলাকার আশেপাশে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বা লুট করা হয়েছে সেসব এলাকার মানুষদের লক্ষ্য করে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নির্যাতন করেছে।

মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদনে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের রাতের বেলায় বেসামরিক নাগরিকদের বাড়িতে প্রবেশ করার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাড়িতে প্রবেশ করে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা পুরুষ, শিশু এমনকি ১১ বছরের বালককে মাটিতে ফেলে দিয়ে পিটিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বেসামরিকদের বিশৃঙ্খলা দমন করতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করায় প্রাণহানি ও শারিরীকভাবে মারাত্মক আহত ও মানবাধিকার হরণের ঘটনা ঘটেছে। তা সত্ত্বেও সরকার সেনা মোতায়েন অব্যাহত রেখেছে’।

চলমান বিক্ষোভ সামাল দিতে দাভোস ইকোনোমিক সম্মেলনে যোগ না দিয়েই গত সোমবার দেশে ফিরেছেন ৭৬ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট মানগাগওয়া।  ওই সম্মেলনে তিনি জিম্বাবুয়েতে বিনিয়োগের আহ্বান জানাবেন বলে আশা করা হচ্ছিল। রাজধানীতে ফিরে তিনি জিম্বাবুয়ের ভঙ্গুর অর্থনীতি ঠিক করতে সব পক্ষকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। একাধিক টুইট বার্তায় তিনি বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতা এবং অসদাচরণ অগ্রহণযোগ্য এবং নতুন জিম্বাবুয়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। প্রয়োজন পড়লে দায়ীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

বিবিসি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ১৪ মাস আগে প্রেসিডেন্ট মানগাগওয়াকে ক্ষমতায় বসাতে সাহায্য করেছিল সেনাবাহিনী। তবে সহিংসতা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সেনাবাহিনীর ওপর প্রেসিডেন্টের নিয়ন্ত্রণকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

/জেজে/
সম্পর্কিত
নাইজেরিয়ায় বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত কারাগার, পালালো শতাধিক বন্দি
ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে অন্তত ৫ অভিবাসী নিহত
আটলান্টিক মহাসাগরে পাওয়া ৯ মরদেহের পরিচয় নিয়ে যা বললো ব্রাজিল
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!