যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ভেনেজুয়েলার শীর্ষ সামরিক প্রতিনিধি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারের পক্ষ ত্যাগ করেছেন। কর্নেল জোস লুইস সিলভা নামে ওই কূটনীতিক বলেছেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি বিরোধীদলীয় নেতা জুয়ান গুইদোকেই স্বীকার করে নিয়েছেন। চলমান রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে প্রেসিডেন্ট মাদুরো সেনাবাহিনীর আনুগত্য দাবি করলেও প্রথমবারের মতো কোনও সেনা কর্মকর্তা প্রকাশ্যে পক্ষত্যাগের ঘোষণা দিলেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
গত বছর বিরোধীদের বর্জনের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক নির্বাচনে জয়ী হয়ে চলতি মাসে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগে মাদুরো বিরোধী এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে গত বুধবার নিজেকে ভেনেজুয়েলার ‘অন্তবর্তী প্রেসিডেন্ট’ দাবি করেন বিরোধী দলীয় নেতা জুয়ান গুইদো। এর কয়েক মিনিটের মাথায় তাকে স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। বিরোধীদের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়ে সেখানকার কূটনীতিকদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশে ফেরার নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট মাদুরো।
শনিবার সন্ধ্যায় সেই সময়সীমা শেষ হলেও ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন কূটনীতিকদের ফেরার আদেশের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। পরস্পরের দেশে ‘স্বার্থগত কার্যালয়’ খুলতে কূটনীতিকদের ৩০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। কূটনীতিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেলে পরস্পরের দেশে মৌলিক কিছু যোগাযোগ রাখতে চাইলে ‘স্বার্থগত কার্যালয়’ খোলা হয়ে থাকে।
এরইমধ্যে রবিবার প্রকাশ পায় কর্নেল জোস লুইস সিলভার পক্ষত্রাগের ঘোষণা। ওয়াশিংটন দূতাবাসে ধারণকৃত এক ভিডিওতে কর্নেল সিলভা ভেনেজুয়েলায় অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছেন। ‘সামরিক বাহিনীতে কর্মরত ভাইদের’ জুয়ান গুইদোকে বৈধ প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠায় সামরিক বাহিনীর মৌলিক ভূমিকা রাখতে হবে। ভায়েরা, দয়া করে আমাদের জনগণের ওপর হামলা করবেন না’। পরে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে কনস্যুলার কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত তার ‘দুই ভেনেজুয়েলান ভাই’ও গুইদোকে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
জুয়ান গুইদো কর্নেল সিলভাকে ধন্যবাদ জানিয়ে অন্যদেরও তার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে ভেনেজুয়েলার প্রতিরক্ষামন্ত্রী কর্নেল সিলভাকে বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দিয়েছেন।
মাদুরোর বিরুদ্ধে ভেনেজুয়েলার হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করলেও তার প্রতি সমর্থন ধরে রেখেছে সেনাবাহিনী। চলমান রাজনৈতিক সংকটে সেনাবাহিনীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। তাদেরকে ‘ভেনেজুয়েলার মানুষের পাশে থাকার’ আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মাদুরো।