X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসনে মার্কিন সমর্থনের বিরুদ্ধে রায় যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের

বিদেশ ডেস্ক
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৮:৫৯আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৫:২৮

ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসনে মার্কিন সমর্থনের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা। বুধবার প্রতিনিধি পরিষদে ইয়েমেনে সৌদি-আমিরাতের আগ্রাসনের ওপর থেকে মার্কিন সমর্থন প্রত্যাহার সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে ২৪১-১৭৭ ভোটে পাস হয় প্রস্তাবটি। এ ঘটনাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসনে মার্কিন সমর্থনের বিরুদ্ধে রায় যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের প্রতিনিধি পরিষদে প্রস্তাবটি পাস হওয়ায় প্রস্তাবটি এখন সিনেটে পাঠানো হবে। সেখানে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সিনেটররা ছাড়াও ট্রাম্পের নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির অনেক সিনেটরও ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসনে মার্কিন পৃষ্ঠপোষকতার বিরোধী।

এর আগে গত ডিসেম্বরেও একই ধরনের একটি প্রস্তাব পাস করে সিনেট। তবে ওই বছরের মতো কংগ্রেস মুলতুবি হয়ে যাওয়ায় বিষয়টি আর সামনে অগ্রসর হয়নি।

ডেমোক্র্যাটিক পার্টি থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য জিম ম্যাক গভর্ন বলেন, ইয়েমেনে নিক্ষেপ করা প্রায় সব বোমাই যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি। সেখানে বিয়ের অনুষ্ঠানেও বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না মানুষের বাড়িঘর থেকে শুরু করে হাসপাতাল পর্যন্ত। এমনকি জানাজা, শরণার্থী শিবির ও স্কুল বাসেও বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। আকাশ থেকে এভাবে বোমা নিক্ষেপের ফলে প্রতিনিয়ত ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছেন বেসামরিক ব্যক্তিরা। ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসনে মার্কিন সমর্থনের বিরুদ্ধে রায় যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের

এদিকে আইনপ্রণেতাদের উদ্যোগ সত্ত্বেও ইয়েমেনে সৌদি জোটের আগ্রাসনে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন বন্ধ করতে নারাজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইতোমধ্যেই আগ্রাসনে মার্কিন সমর্থন বন্ধে আনা প্রস্তাবটির বিরুদ্ধে ভেটো দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

ট্রাম্পের ভেটো উপেক্ষা করে প্রস্তাবটিকে কংগ্রেসে পাস করাতে হলে দুই কক্ষেই দুই তৃতীয়াংশ ভোট নিশ্চিত করতে হবে ডেমোক্র্যাটদের। প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও সিনেট এখনও রিপাবলিকানদের দখলে। তবে সিনেটের অনেক রিপাবলিকান সদস্যও আগ্রাসনে মার্কিন পৃষ্ঠপোষকতার বিরোধী। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এই প্রস্তাব যথার্থ নয়। কেননা, ইয়েমেন যুদ্ধে মার্কিন বাহিনী শুধু বিমানের জ্বালানি ও অন্য সহায়তা দিচ্ছে, তারা সরাসরি যুদ্ধ করছে না।

ট্রাম্প প্রশাসন মনে করে, প্রস্তাবটি চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে তা সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এর ফলে জঙ্গিবাদের বিস্তার রোধে মার্কিন সক্ষমতা ক্ষুণ্ন হবে।

এর আগে ইয়েমেন ইস্যুতে সৌদি নেতৃত্বাধীন যুদ্ধজোট ছেড়ে বেরিয়ে যায় মরক্কো। এ ঘটনার জেরে গত ৭ ফেব্রুয়ারি মরক্কো সৌদি আরবে নিযুক্ত তাদের রাষ্ট্রদূতকে দেশে ফেরার আদেশ দেয়। ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসনে মার্কিন সমর্থনের বিরুদ্ধে রায় যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের

২০১৪ সালে ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। হুথি বিদ্রোহী ও ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রেসিডেন্ট সালেহর সমর্থকরা জোটবদ্ধ হয়ে রাজধানী সানা দখল করলে দেশটির প্রেসিডেন্ট হাদি সৌদি আরবে নির্বাসনে যান। যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ২০১৫ সালের মার্চ মাস থেকে ইয়েমেনে হামলা চালানো শুরু করে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। তাদের উদ্দেশ্য, দেশটির আন্তর্জাতিক পরিসরে বৈধ হিসেবে স্বীকৃত প্রেসিডেন্ট আবু রাব্বু মানসুর হাদির সরকারকে স্থিতিশীল করা। ওই যুদ্ধজোটের অংশ ছিল মরক্কো।

আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইয়েমেন যুদ্ধ থেকে নিজেদের প্রত্যাহারের বিষয়ে মরক্কোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাসের বৌরিতা মন্তব্য করেছেন, ইয়েমেনের যুদ্ধক্ষত্রে চলতে থাকা ঘটনাপ্রবাহ, বিশেষ করে সেখানে দেখা দেওয়া মানবিক বিপর্যয় তাদের এই সিদ্ধান্ত গ্রহণকে প্রভাবিত করেছে। বস্তুত সৌদি নেতৃত্বাধীন বাহিনীর হামলায় ইয়েমেনের আনুমানিক ৮৫ হাজার শিশু খাদ্যাভাবে মৃত্যুবরণ করেছে। ২ কোটি ৯০ লাখ নাগরিকের মধ্যে এক কোটি ৪০ লাখই রয়েছে অনাহারে। খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৬৮ শতাংশ। জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। অথচ ইয়েমেন মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ। ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসনে মার্কিন সমর্থনের বিরুদ্ধে রায় যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের

মরক্কোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া সাক্ষাৎকার প্রচারিত হওয়ার পর সৌদি আরব একটি তথ্যচিত্র প্রচার করতে শুরু করে, যাতে দেখানো হয় স্পেনীয়রা চলে যাওয়ার পর মরক্কো পশ্চিম সাহারা অঞ্চলে আগ্রাসন চালিয়েছিল। এর প্রেক্ষিতে মরক্কো সৌদি আরব থেকে তার রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নেয়। মরক্কো মনে করে, পশ্চিম সাহারা এলাকাটি তার অংশ।

/এমপি/
সম্পর্কিত
মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধে জাতিসংঘের ভোটে রাশিয়ার ভেটো
বাংলাদেশকে ‘সিকিউরিটি প্রোভাইডার’ দেশ হিসেবে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, শতাধিক শিক্ষার্থী গ্রেফতার
সর্বশেষ খবর
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
‘বিএনপি যে কোনও উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে’
‘বিএনপি যে কোনও উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে’
ফেসবুকে নিজের সমালোচনা দেখে হাসি পায় সাকিবের
ফেসবুকে নিজের সমালোচনা দেখে হাসি পায় সাকিবের
উপজেলা নির্বাচনে পলকের হস্তক্ষেপ ঠেকাতে হাইকোর্টে রিট
উপজেলা নির্বাচনে পলকের হস্তক্ষেপ ঠেকাতে হাইকোর্টে রিট
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
সিনিয়র শিক্ষককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি জুনিয়র শিক্ষকের
সিনিয়র শিক্ষককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি জুনিয়র শিক্ষকের
ভুল সময়ে ‘ঠিক কাজটি’ করবেন না
ভুল সময়ে ‘ঠিক কাজটি’ করবেন না