ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় হামলার ঘটনায় পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী জয়েশ-ই-মোহাম্মদকে দায়ী করে আসছে দিল্লি। দলটির নেতা মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইসলামবাদের প্রতি দাবি জানিয়ে আসছে ভারত। তবে এবার উল্টো এ হামলার ঘটনায় নিজ দেশের পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমালোচনায় সরব হলেন জয়েশ নেতা মাসুদ আজহার।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিজের সাপ্তাহিক ভাষণে ভারতকে ভয় পাওয়ার জন্য ইমরান খানের সরকার ও দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলোর সমালোচনা করেছেন মাসুদ আজহার। তিনি বলেন, পুলওয়ামার ঘটনার পর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হুমকির জবাবে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া ছিল নিষ্প্রভ।
এর আগে তিনি বলেছিলেন, পুলওয়ামায় হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করা উচিত নয়।
মাসুদ আজহার বলেন, পুলওয়ামায় হামলা চালিয়েছেন একজন কাশ্মিরি। স্বভাবতই এ হামলায় পুরো দুনিয়া কাঁদছে।
এদিকে অবিলম্বে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে কাশ্মির ত্যাগের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সেখানকার স্থানীয় সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিন। সংগঠনের শীর্ষ নেতা রিয়াজ নাইকু হুমকি দিয়েছেন, সেনারা কাশ্মির না ছাড়লে তাদের কফিন মিছিলও থামবে না। সুদীর্ঘ এক অডিও বার্তায় নাইকু বলেছেন, কাশ্মির না ছাড়লে পুলওয়ামার ঘটনার মতো করেই নতুন নতুন ঘটনায় ভারতকে ‘কাঁদতে’ হবে।
১৪ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) পুলওয়ামাতে আরডিএক্স বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি নিয়ে ‘সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স’র গাড়ি বহরে আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়। এতে বহরের ৭০টি গাড়ির মধ্যে একটি বাস সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়ে যায়। প্রাণ হারায় বাহিনীর অন্তত ৪৪ সদস্য। হামলার দায় স্বীকার করে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদ। পুলওয়ামা হামলার প্রতিক্রিয়ায় স্থানীয় হিজবুল মুজাহিদিনের অপারেশনাল কমান্ডার রিয়াজ নাইকু সেনাবাহিনীর উদ্দেশে বলেছেন, ‘যতোক্ষণ না তোমরা কাশ্মির ছাড়ছ, এভাবেই কাঁদতে হবে তোমাদের। যতোক্ষণ তোমরা এখানে থাকবে, ততোক্ষণ তোমার সেনাদের কফিন ভরতে থাকবে মরদেহে।’
১৯ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) রিয়াজ নাইকু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে তার এই অডিও বার্তাটি জনসম্মুখে আনেন। একইদিনে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল কে এস ঢিলোঁ সেনাপ্রধানের পূর্ববর্তী অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে হুমকি দেন, কাশ্মিরে কেউ অস্ত্র হাতে তুলে নিলেই তাকে গুলি খেতে হবে। জঙ্গিবিরোধী অভিযান পরিচালনার সময় বেসামরিকদের হস্তক্ষেপ না করার হুমকিও দেন তিনি। এরআগে সেনা অভিযানে বাধা দিলে কঠোর পরিণতি বরণ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল বিপীন রাওয়াত। অভিভাবকদের আহ্বান জানিয়েছিলেন, তরুণদের সঠিক পথে ফেরাতে। কাশ্মিরের সাম্প্রতিক বাস্তবতা পর্যালোচনা করে বিশ্লেষকরা বলছেন, সামরিক পথে কাশ্মির সংকটের সমাধান আসবে না। তবুও বলপ্রয়োগের নীতির পথেই এগোচ্ছে ভারত। সূত্র: আউটলুক ইন্ডিয়া।