গাজা সীমান্তে বিক্ষোভ করার সময় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে তিন কিশোরসহ চার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৪০ জনেরও বেশি। ‘গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন’ এর বর্ষপূর্তিতে বিক্ষোভ করার সময় ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান হতাহতের এ সংখ্যা জানিয়েছে।
১৯৭৬ সাল থেকে প্রতিবছর ৩০ মার্চ ইসরায়েলের দখলদারিত্বের প্রতিবাদে ‘ভূমি দিবস’ পালন করছে ফিলিস্তিনিরা। ওইদিন নিজেদের মাতৃভূমির দখল ঠেকাতে বিক্ষোভে নামলে ইসরায়েলি সেনাদের হাতে ৬ ফিলিস্তিনি নিহত হন। তাদের স্মরণেই পালিত হয় ভূমি দিবস। ২০০৭ সাল থেকে গাজা অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। সেখানকার ৭০ শতাংশ মানুষই ফিলিস্তিনের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিতাড়িত হয়ে সেখানে এসে বাস করছেন। গত বছর ওই দিনটি স্মরণে গাজায় ফিলিস্তিনিদের পক্ষ থেকে গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন নামে বিশাল বিক্ষোভের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা ওই বিক্ষোভে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নতুন করে প্রাণ হারায় ১৮৯ জন ফিলিস্তিনি। শনিবার (৩০ মার্চ) গ্রেট মার্চ অব রিটার্নের বর্ষপূর্তিতে ফিলিস্তিনিরা আবারও গাজা সীমান্তে বিক্ষোভের আয়োজন করে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এদিনের বিক্ষোভেও গুলি ছুড়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে চার ফিলিস্তিনি নিহত হয়। আর বিক্ষোভ শুরুর আগেই ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে একজন।
পূর্ববর্তী বিক্ষোভের চেয়ে এবার প্রাণহানির সংখ্যা কমিয়ে আনতে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে একটি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করেছিল মিসর। হামাস জানিয়েছিল, সীমান্ত বেড়ার দিকে যেন বিক্ষোভকারীরা না যায় তা নিশ্চিত করবে তারা। বিনিময়ে ইসরায়েল সীমান্তবেড়া থেকে দূরে থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি ছুড়বে না। এ ধরনের কোনও চুক্তি হওয়ার কথা জানায়নি ইসরায়েল। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, ৪০ হাজার ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী সীমান্তের বিভিন্ন জায়গায় জড়ো হয়েছে। সীমান্ত বেড়া অতিক্রম করে বিক্ষোভকারীরা পাথর ও বিস্ফোরক নিক্ষেপ করেছে বলে অভিযোগ তাদের।
শনিবার বিক্ষোভ শুরুর আগে এক ফিলিস্তিনি তরুণকে গুলি করে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী। নিহত তরুণের নাম মোহাম্মদ সাদ (২১)।শনিবারের কর্মসূচিকে সামনে রেখে আয়োজিত মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন সাদ। ইসরায়েলি সীমান্তের কাছে পৌঁছানোর পর তাদের দিকে ছররা গুলি ছোড়ে দেশটির সেনা সদস্যরা। এতে মাথায় গুলি লাগে সাদের। এ সময় ইসরায়েলি সীমান্ত থেকে ১০০ মিটারেরও বেশি দূরে ছিলেন তিনি।