X
শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

প্রথমবারের মতো কৃষ্ণগহ্বরের ছবি দেখলো মানব জাতি

বিদেশ ডেস্ক
১০ এপ্রিল ২০১৯, ২০:২১আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০১৯, ২০:৫১

মহাকাশে প্রথমবারের মতো কৃষ্ণগহ্বরের ছবি তুলতে সমর্থ হয়েছেন নভোচারীরা। ফলে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এই রহস্যময় ‘দানব’র ছবি দেখলো মানব জাতি। এটি আকারে চার হাজার কোটি কিলোমিটার, পৃথিবীর আয়তনের তুলনায় প্রায় ৩০ লাখ গুণ। বিজ্ঞানীরা একে ‘দানব’ বলে অভিহিত করছেন।

প্রথমবারের মতো কৃষ্ণগহ্বরের ছবি দেখলো মানব জাতি মহাকাশের এক অনন্ত বিস্ময় এই ব্ল্যাকহোল। ব্ল্যাকহোলকে কৃষ্ণবিবর, কৃষ্ণগহ্বর ইত্যাদি বলা হয়। জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটি অনুসারে, কৃষ্ণগহ্বর মহাকাশের এমন একটি বিশেষ স্থান, যেখান থেকে কোন কিছু, এমনকি আলো পর্যন্ত বের হয়ে আসতে পারে না। ব্ল্যাকহোল এমন একটি জায়গা, যেখানে খুবই অল্প জায়গায় অনেক অনেক ভর ঘনীভূত হয়ে রয়েছে। এটা এতই বেশি যে কোন কিছুই এর কাছ থেকে রক্ষা পায় না, এমনকি সর্বোচ্চ গতিসম্পন্ন আলোও।

বিজ্ঞানীরা জানান, পৃথিবীর আটটি স্থান থেকে খুবই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টেলিস্কোপ দিয়ে এর ছবি তোলা হয়। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব ৫০০ মিলিয়ন ট্রিলিয়ন কিলোমিটার। বুধবার অ্যাস্ট্রোফিজিকাল জার্নাল লেটার নামে এক জার্নালে বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়।

এই পরীক্ষার নেতৃত্ব দেওয়া নেদারল্যান্ডসের রাডবাউড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হেইনো ফাল্ক বলেন, এম৮৭ নামের গ্যালাক্সিতে এই কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান মিলেছে। তিনি বলেন, এর আয়তন আমাদের পুরো সৌরজগতের চেয়ে বড়।

তিনি জানান, এর ভর সূর্যের চেয়ে ৬৫০ গুণ বেশি। আমাদের ধারণা, এটিই সবচেয়ে ভারি কৃষ্ণগহ্বর। এটা একটা দানব।

প্রকাশিত ছবিতে একটি উজ্জ্বল আগুনের বলয় দেখা যায়। অধ্যাপক ফালক বলেন, এটি অন্ধকার এক গর্ত ঘিরে রেখেছে। এই গর্তে প্রচুর গ্যাস পতিত হওয়া উজ্জ্বল হয়ে ‍উঠেছে। ওই অন্ধকার গর্তই এর কেন্দ্র।

গবেষক দলের সদস্য ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক ড. জিরি ইউনসি বলেন, এই ছবিটি যেন বিজ্ঞানীদের তাত্ত্বিক ধারণা ও হলিউডের নির্মাতাদের কল্পনারই প্রতিফলন। কৃষ্ণগহ্বর সাধারণ বস্তু দ্বারা গঠিত হলেও এতে সময় ও স্থানের অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে।

নক্ষত্র যখন জ্বালানি পুড়িয়ে শেষ করে ফেলে, তখন তা সংকুচিত হতে থাকে। সাধারণ গ্যালাক্সিগুলোর মাঝে অবস্থানরত বড় বড় নক্ষত্র তাদের বিবর্তনের সর্বশেষ পরিণতিতে ব্ল্যাকহোল সৃষ্টি করে। নক্ষত্রগুলো অনেক বেশি সংকুচিত হয়েই ব্ল্যাকহোলের জন্ম দেয়।

এই ব্ল্যাকহোলের ভেতরে ঢুকে নক্ষত্রসহ যাবতীয় মহাজাগতিক বস্তু অদৃশ্য হয়ে যায়। সেগুলো আসলে কোথায় যায় সেটিই রহস্যময়। এর মধ্য দিয়ে পৃথিবীর মতো অন্য কোনও জায়গায় যাওয়া যায় কিনা, সেটি নিয়েও আলোচনা আছে।

গাণিতিক তথ্যের ভিত্তিতে ১৯৮২ সালে প্রথম একটি ছবি আঁকা হয় কৃষ্ণগহ্বরের। জঁ পিয়ের ল্যুমিয়ের ছবিটি এঁকেছিলেন। তবে সেটি ছিল কল্পনাপ্রসূত। কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে শেষ বয়সে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী অধ্যাপক স্টিফেন হকিং নতুন একটি তথ্য দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, ধ্রুপদি তত্ত্ব অনুযায়ী কৃষ্ণগহ্বর থেকে কোনও কিছুই বেরিয়ে আসার উপায় নেই। কিন্তু কোয়ান্টাম তত্ত্ব অনুযায়ী, কিছু শক্তিও বেরিয়ে যেতে পারে। হকিংয়ের এমন মন্তব্যের পর কৃষ্ণগহ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

/এমএইচ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ভারতের বিরুদ্ধে অভিযানকে ১৯৭১ সালের প্রতিশোধ বললেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী
ভারতের বিরুদ্ধে অভিযানকে ১৯৭১ সালের প্রতিশোধ বললেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী
সংযুক্ত আরব আমিরাত-যুক্তরাষ্ট্রের ২০০ বিলিয়ন ডলার চুক্তি ঘোষণা
সংযুক্ত আরব আমিরাত-যুক্তরাষ্ট্রের ২০০ বিলিয়ন ডলার চুক্তি ঘোষণা
সাম্য হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারে আল্টিমেটাম,  শাহবাগ থানা ঘেরাও
সাম্য হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারে আল্টিমেটাম, শাহবাগ থানা ঘেরাও
গণঅনশনের পরও দাবি না মানলে বড় কর্মসূচি
গণঅনশনের পরও দাবি না মানলে বড় কর্মসূচি
সর্বাধিক পঠিত
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের সতর্ক করে জরুরি নির্দেশনা মাউশির
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের সতর্ক করে জরুরি নির্দেশনা মাউশির
কমলো স্বর্ণের দাম, কার্যকর শুক্রবার থেকে
কমলো স্বর্ণের দাম, কার্যকর শুক্রবার থেকে
ফ্যাক্টরি পোড়ানোর হুমকি দেওয়া সেই বিএনপি নেতাকে বিমানবন্দর থেকে আটক
ফ্যাক্টরি পোড়ানোর হুমকি দেওয়া সেই বিএনপি নেতাকে বিমানবন্দর থেকে আটক
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল অধ্যাদেশ অনুমোদন
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল অধ্যাদেশ অনুমোদন
বাংলাদেশসহ ৫ রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশের অনুষ্ঠান স্থগিত করলো ভারত
বাংলাদেশসহ ৫ রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশের অনুষ্ঠান স্থগিত করলো ভারত