সৌদি আরবের প্রতি নিজের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ‘মেইক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’র এক র্যালিতে তিনি বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক খাতে সৌদি আরবের কাছ থেকে অর্থ পেতে তিনি তার কৌশল অব্যাহত রাখবেন। উইসকনসিনের গ্রিন বে’তে এক র্যালিতে ট্রাম্প বলেন মার্কিন কোম্পানিগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ টাকার পণ্য কেনায় সৌদি সরকারকে সমর্থন করা অব্যাহত রাখবেন তিনি।
গত বছর অক্টোবরে ইস্তানব্যুল কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের পর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে সৌদি-মার্কিন সম্পর্ক। তুরস্কের অভিযোগ, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কঠোর সমালোচকে পরিণত হওয়া সৌদি সরকারের এক সময়ের উপদেষ্টা খশোগিকে ইস্তানব্যুলের দূতাবাসে হত্যা করে টুকরো টুকরো করে সৌদি আরবের একটি দল। এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তবে সৌদি নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
‘মেইক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’র র্যালিতে সমর্থকদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, ‘তাদের (সৌদি আরব) কিছু না থাকলেও টাকা আছে, ঠিক? তারা আমাদের কাছ থেকে বিপুল টাকার পণ্য কেনে, তারা ৪৫ হাজার কোটি ডলারের পণ্য কিনেছে। অনেকেই আছে সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করতে চায়...আমি তাদের হারাতে চাই না’। তবে ট্রাম্প কোথা থেকে ৪৫ হাজার কোটি ডলারের হিসাব নিয়েছেন তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে পলিটিফ্যাক্ট নামে একটি পর্যবেক্ষক ওয়েবসাইট এই পরিমাণকে এর আগে মিথ্যা বলে অভিহিত করেছিল।
র্যালিতে সৌদি বাদশাহ সালমানের সঙ্গে সাম্প্রতিক এক ফোনকলের ঘটনা বর্ণনা করেন ট্রাম্প। ওই ফোনকলে সৌদি বাদশাহর কাছে মার্কিন নিরাপত্তার বিনিময়ে আরও বেশি অর্থ দাবি করেন। ট্রাম্প বলেন, ‘একটি দেশ রক্ষায় আমরা ৪৫০ কোটি ডলার ব্যয় করছি, আর তারা ধনী। সেকারণে আমি তাকে ফোন করলাম। বললাম শোন এটা ভালো কথা না। তারা ধাক্কা খেল কারণ গত ২৫ বছরে তারা এধরণের ফোনকল পায়নি, তাই না!’
সমর্থকদের উদ্দেশে ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘আমি বললাম প্রতিবছর আমরা ৪৫০ কোটি ডলার খরচ করছি, এটা আর আমরা করতে পারবো না। এটা পাগলামো। সৌদি বাদশাহ হতাশ আর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে বললো এটা ঠিক না। আমি বললাম, অবশ্যই ঠিক। সে বললো আমরা তোমাদের আরও ৫০ কোটি ডলার বেশি দেব...আমি বললাম আমি আরও চাই। আমরা দরকষাকষি করলাম। ফলে এক ফোনকলেই তারা আমাদের ৫০ কোটি বেশি ডলার দিতে রাজি হয়ে গেল। আমার লাগলো মাত্র একটা ফোনকল’। ট্রাম্প বলেন, বাদশাহ তখন জানতে চাইলো কেন আমি ফোন করেছি কারণ কেউ এধরণের ফোন করেনি। জবাবে ট্রাম্প বলেন, তার কারণ তারা ছিল স্টুপিড!
খাশোগি হত্যার পর ট্রাম্প বলেছিলেন, আমরা যদি বোকার মতো এসব চুক্তি বাতিল করি তাহলে রাশিয়া এবং চীন বিপুল লাভবান হয়ে যেতে পারে। আর তারা নতুন পাওয়া এই বাণিজ্যে খুবই খুশি হয়ে যাবে। এটা হবে যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে তাদের জন্য দেওয়া বিশেষ উপহার।