ইন্ডিপেনডেন্ট মিডিয়া ক্লাবের উদ্যোগে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ‘মুক্ত গণমাধ্যম দিবস’র গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে হাউস অব লর্ডস-এ বুধবার এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে সরকারের কমনওয়েলথ ও ইউনাইটেড নেশনস বিষয়ক মন্ত্রীসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা অংশ নেন। সভায় বক্তারা ভুয়া খবর, সাইবার হামলা, সেন্সরশিপ আর সহিংসতার মতো ঝুঁকি মোকাবিলায় করণীয় বিষয়ে আলোচনা করেন। দেশে দেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের সমালোচনা করেন তারা।
১৯৯১ সালে ইউনেস্কোর ২৬তম সাধারণ অধিবেশনের সুপারিশ অনুযায়ী ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ৩ মে তারিখটি 'ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে' অথবা ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস’র স্বীকৃতি পায়। সেই থেকে প্রতি বছর গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংক্রান্ত মৌলিক নীতিমালা অনুসরণ, বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মূল্যায়ন এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ক্ষতিগ্রস্ত ও জীবন হারানো সাংবাদিকদের স্মরণ ও তাদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
এবারের মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালিত হচ্ছে ইথিওপিয়ায়। ১ মে থেকে ৩ মে পর্যন্ত এবারের দিবসটি পালন করা হচ্ছে। দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে ‘নির্বাচন ও গণতন্ত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা’। এর অংশ হিসেবে ১ মে বুধবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডস-এ লর্ডসভার সদস্য রবার্ট ইমিস ওমের সভাপতিত্বে ডিজিটাল গনমাধ্যমের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা নিয়ে গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিবিসির বাংলা বিভাগের প্রধান সাবির মোস্তফার সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন কমনওয়েলথ ও ইউনাইটেড নেশনস বিষয়ক মন্ত্রী লর্ড তারিক মাহমুদ আহমেদ, আইএমসি সভাপতি ও বিবিসি বাংলার ঊর্ধ্বতন প্রযোজক মাসুদ হাসান খান, চ্যানেল ফোর নিউজের ফ্রিল্যান্স প্রযোজক বেকি হর্সব্রো, তুরস্কের টিআরটি ওয়ার্ল্ডের সাংবাদিক শামীম আরা চৌধুরী, বাংলা ট্রিবিউনের লন্ডন প্রতিনিধি মুনজের আহমদ চৌধুরী,একাত্তর টেলিভিশনের তানভীর আহমেদ, বিবিসি নিউজের মাহফুজ সাদিক, সাপ্তাহিক জনমতের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ নাহাস পাশা, সাংবাদিক ও গবেষক বুলবুল হাসান, সাংবাদিক জুবায়ের বাবু, আমাদের নতুন সময়ের লন্ডন প্রতিনিধি সাইদুল ইসলামসহ ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের বহু পেশাদার সাংবাদিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন: স্বাধীন গণমাধ্যম হলো গণতন্ত্রের প্রতীক। তবে বিশ্বের নানা দেশে জবাবদিহিতাহীন প্রতিষ্ঠানগুলো বাক-স্বাধীনতা ও সত্য প্রকাশে বাধা দিচ্ছে। প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে। সাংবাদিকতা এখন এক বিপদজনক পেশায় পরিণত হয়েছে। সারাবিশ্বেই সাংবাদিকরা ভুয়া খবর, সাইবার হামলা, সেন্সরশিপ এবং সহিংসতার মতো অভূতপূর্ব ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছে।
আলোচনায় বক্তারা সাংবাদিকদের পেশাগত সততা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ার গুরুত্ব তুলে ধরেন।