বেশ কিছু দিন ধরেই কারাবন্দি পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট নওয়াজ শরিফের অসুস্থতার কথা জোরেশোরে আলোচনায় আসছে। এরইমধ্যে আদালতের এজলাসেই মৃত্যুবরণ করেছেন মিসরের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি। অভিযোগ উঠেছে, যথাযথ চিকিৎসা সেবা না দেওয়ার কারণেই মুরসির জীবনহানি হয়েছে। নওয়াজের স্বজনরাও অভিযোগ করে আসছেন, মুসলিম লীগের এই নেতাকে যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে না। মুরসির মৃত্যুর পর তার কন্যা মরিয়ম নওয়াজ বলেছেন, পাকিস্তান মিসর না, আর তাই নওয়াজকে তিনি মুরসির পরিণতি বরণ করতে দেবেন না।
সেনাবাহিনী কর্তৃক ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই মিসরীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন মুরসি। গত ৭ মে তিনি আদালতে নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কাও প্রকাশ করেছিলেন। বলেছিলেন, তার জীবন হুমকির মুখে। ১৭ জুন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, ‘আদালতের এজলাসে হঠাৎ পড়ে গিয়ে’ মুরসির মৃত্যু হয়েছে। মুরসির মৃত্যুর নেপথ্যে সরকারের অবহেলাকে কারণ মনে করা হচ্ছে। অনেকেই বলেছেন, তাকে যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেওয়ার বদলে কর্তৃপক্ষ বরং তার স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করেছে।
মুরসির প্রসঙ্গ টেনে এক সংবাদ সম্মেলনে মরিয়ম নওয়াজ বলেছেন, ‘নওয়াজ শরিফের অবস্থা ভালো না। কারাগারে থাকা চিকিৎসকরা জানেনও না যে এই সপ্তাহে তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিলো। তার কোনও চিকিৎসাও করা হয়নি'। ৬৯ বছর বয়সী নওয়াজ শরিফ আল-আজিজিয়া দুর্নীতি মামলার দায়ে লাহোরের কোটলাখপাত জেলে সাত বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। মরিয়মের অভিযোগ, নওয়াজ শরিফের মতো ব্যক্তির চিকিৎসায় গুরুত্ব দিচ্ছেন না ডাক্তাররা। তিনি বলেন, তার শারীরিক প্রকৃত অবস্থার ৮০ ভাগ আমাদের সামনে আনা হচ্ছে। অথচ হার্ট অ্যাটাকের কারণে তার রক্তে ত্রোপোনিনের মাত্রা অনেক বেশি পাওয়া গেছে।
মরিয়ম নওয়াজ বলেন, 'এমন নয় যে তার চিকিৎসা সম্ভব নয়, কিন্তু ডাক্তররা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। এজন্য আমরা আদালতের কাছে অনুরোধ করেছি যেন তাকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নেওয়া হয়।' তবে বৃহস্পতিবার চিকিৎসার জন্য নওয়াজ শরিফের জামিন আবেদন খারিজ করে দেন দেশটির হাইকোর্ট। মরিয়ম দৃঢ়কণ্ঠে বলেছেন, 'আমরা তিনবারের প্রধানমন্ত্রীকে মুরসির পরিণতি বরণ করতে দেবো না। এটা মিসর না এবং তিনিও মুহাম্মদ মুরসি না।'