রবিবার টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে সৌদি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আদেল আল জুবায়ের বলেন, নৌ চলাচলের স্বাধীনতার ওপর যে কোনও হামলা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। ইরানকে অবশ্যই এটা বুঝতে হবে যে বিভিন্ন জাহাজ আটকে দেওয়া, গতিপথ রোধ করার মতো কর্মকাণ্ড অগ্রহণযোগ্য, যা সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ঘটেছে। এ ধরনের আচরণের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে।হরমুজ প্রণালীতে যুক্তরাজ্যের তেল ট্যাংকার আটকের ঘটনায় ইরানের প্রতি নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব। ইরানের এ ধরনের কর্মকাণ্ড গ্রহণযোগ্য নয় উল্লেখ করে দেশটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সৌদি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আদেল আল জুবায়ের। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার হরমুজ প্রণালীতে যুক্তরাজ্যের একটি তেল ট্যাংকার আটক করে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি। তেহরানের দাবি, হরমুজ প্রণালীতে আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক আইন লঙ্ঘনের দায়ে ট্যাংকারটি আটক করা হয়েছে।
আইআরজিসি-র বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরানের হরমুজগানের বন্দর ও সামুদ্রিক যান চলাচল বিষয়ক সংস্থার অনুরোধে 'স্টেনা ইমরো' নামের একটি ব্রিটিশ তেল ট্যাংকার আটক করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক আইনের প্রতি সম্মন না দেখানোয় ইরানের ওই সংস্থা তেল ট্যাংকারটিকে আটকের অনুরোধ জানায়। ট্যাংকারটি উপকূলে আনা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া চলছে। এটিতে তল্লাশি চালানো হবে।
হরমুজ প্রণালীতে ইরানি ড্রোন ধ্বংসের মার্কিন দাবি প্রত্যাখ্যানের কিছু সময় পরই ব্রিটিশ তেল ট্যাংকার আটকের খবর দেয় তেহরান। এর আগে গত ৪ জুলাই যুক্তরাজ্য নিয়ন্ত্রিত জিব্রাল্টার প্রণালী থেকে ইরানি তেলবাহী সুপার ট্যাংকার গ্রেস-ওয়ান আটক করে ব্রিটিশ মেরিন সেনারা। ইতোমধ্যেই জাহাজের সব ক্রুকে মুক্তি দিয়েছে জিব্রাল্টার কর্তৃপক্ষ। তবে জাহাজটির বিষয়ে এখনও তদন্ত চালাচ্ছে তারা।
বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই ফোনে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফের সঙ্গে কথা বলেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট। ফোনালাপে ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেন, ট্যাংকারের তেল কোথা থেকে এসেছে তা নিয়ে যুক্তরাজ্যের কোনও মাথাব্যথা নেই। বরং আমাদের চিন্তার বিষয় হচ্ছে এই তেল কোথায় যাচ্ছে। এটি সিরিয়ায় যাবে না এমন গ্যারান্টি পেলেই ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ ট্যাংকারটি ছেড়ে দেবে।
দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপের পর তেল ট্যাংকার ইস্যুতে যুক্তরাজ্যকে কোনও ছাড় না দেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন দেশটিতে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত। এর মধ্যেই শুক্রবার হরমুজ প্রণালীতে ইরানি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের ওই দাবি প্রত্যাখ্যানের কিছু সময় পরই ব্রিটিশ তেল ট্যাংকার আটকের খবর দেয় তেহরান। এ নিয়ে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে নতুন করে বিরোধে জড়ায় ইরান। এরমধ্যেই রবিবার তেহরানের কর্মকাণ্ডকে গ্রহণযোগ্য হিসেবে আখ্যায়িত করলো যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র সৌদি আরব।