X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

জর্ডান সফরে তুরস্কের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত

বিদেশ ডেস্ক
২৪ জুলাই ২০১৯, ০৪:৫৪আপডেট : ২৪ জুলাই ২০১৯, ১৬:২২

জর্ডান সফরে রয়েছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলুসহ দেশটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। হাইপ্রোফাইল এ সফরে তুর্কি প্রতিনিধি দলে আরও রয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী, গোয়েন্দা প্রধান ও সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ। মঙ্গলবার জর্ডানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন তারা। এসব বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদারের উপায় নিয়ে কথা বলেন উভয় দেশের প্রতিনিধিরা। এমন সময়ে উচ্চপর্যায়ের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো, যার কিছুদিন আগেই তুরস্কের মিত্র কাতারের সঙ্গে ফের পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে জর্ডান। ফলে এই দুই ঘটনা কাকতালীয় না হয়ে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত হিসেবে দৃশ্যমান হতে পারে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

জর্ডান সফরে তুরস্কের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত তুরস্ক ও জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উভয় দেশ পারস্পরিক বন্ধন আরও গভীর করে তোলা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারণ এবং আঞ্চলিক ইস্যুগুলোতে সহযোগিতা আরও জোরদারের ব্যাপারে সম্মত হয়েছে।

২০১৭ সালের ৫ জুন কাতারবিরোধী অবরোধের ঘোষণা দেয় সৌদি আরব, মিসর, বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। সৌদি জোটের অবরোধে জর্ডান অংশ না নিলেও রিয়াদের প্রভাব বলয় অস্বীকার করতে পারেনি দেশটি। ফলশ্রুতিতে কাতার থেকে নিজ দেশের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নেয় জর্ডান। এর দুই বছরের মাথায় ২৩ জুলাই দোহায় নতুন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেয় দেশটি।

মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে সৌদি-আমিরাতি বলয়ের বাইরে তুরস্ক ও কাতারের মৈত্রী ইতোমধ্যেই রিয়াদের অস্বস্তি, এমনকি রীতিমতো ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান সৌদি জোটের কাতারবিরোধী অবরোধ প্রায় একাই নস্যাৎ করে দিয়েছেন। কিছু দিন আগেই সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন তুরস্কের মিত্র সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশির। ওই অভ্যুত্থানে সমর্থন দেয় সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এখন জর্ডান যদি শেষ পর্যন্ত সৌদির বদলে তুরস্কের দিকে ঝুঁকে পড়ে, সেটা নিঃসন্দেহে মধ্যপ্রাচ্য এমনকি পুরো মুসলিম বিশ্বেই রিয়াদের প্রভাবকে কিছুটা হলেও ক্ষুণ্ন করবে। কেননা, ইতোমধ্যেই পুরো আরব বিশ্বেই তুর্কি প্রভাব বাড়ছে।

জর্ডানের জন্য অবশ্য সৌদি বলয় থেকে বেরিয়ে আসাটা খুব সহজ হবে না বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। কেননা, ঋণ জর্জরিত অর্থনীতির বোঝা কমাতে সৌদিসহ মধ্যপ্রাচ্যের রাজতান্ত্রিক দেশগুলোর ওপর আম্মানের নির্ভরশীলতা রয়েছে। এমনকি ২০১৮ সালে সৌদি জোটের চাপে তুরস্কের সঙ্গে স্বাক্ষরিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিও বাতিল করে জর্ডান। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অবশ্য সৌদি বলয়ের দেশগুলোও জর্ডানকে কয়েক বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসেছে।

জর্ডান সফরে তুরস্কের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত সৌদি বলয়ের দেশগুলোর পররাষ্ট্র নীতি এখন আবর্তিত হচ্ছে ইরানকে ঘিরে। অনেক কর্মকর্তা ইতোমধ্যেই ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার কথা বলছেন। ইতোমধ্যেই সৌদি আরবের মিত্র বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ খালিদ বিন আহমাদ আল খলিফা ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। টুইটারে দেওয়া পোস্টে ইসরায়েলি মন্ত্রী এ বৈঠকের কথা নিশ্চিত করেন। আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করার কথাও বলেন তিনি। এরমধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনকে পরিত্যাগের বিষয়টি সামনে উঠে এসেছে। এ বিষয়টিও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে পরিচিত জর্ডানকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। ট্রাম্পের ওই পরিকল্পনার বিরোধিতাও দেশটিকে তুরস্ক ও কাতারের দিকে ঠেলে দিতে পারে। কেননা, তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বরাবরই ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য অধিকারের বিষয়ে সোচ্চার। কাতারও বরাবরই ফিলিস্তিনিদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে। ফলে পবিত্র আল আকসা মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণকারী জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর জন্য ফিলিস্তিন ইস্যুটিও তাৎপর্যপূর্ণ। বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর আশঙ্কা, ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে পবিত্র এ মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণকারী হিসেবে তার আর দায়িত্ব পালনের সুযোগ থাকবে না।

অন্যদিকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জর্ডানের সাধারণ মানুষের মধ্যে তুরস্কের প্রভাব বেড়েছে। দেশটির অনেক মানুষ সাবেক উসমানীয় খিলাফতের ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোতে ঘুরতে যান। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও ব্যক্তিগত বিনিয়োগও বেড়েছে।

 

/এমপি/এমওএফ/
সম্পর্কিত
ইরানের ওপর কোনও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়নি: ইরানি কর্মকর্তা  
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
সর্বশেষ খবর
লোকসভা নির্বাচন: রাস্তার দাবিতে ভোট বয়কট করলেন গ্রামবাসী
লোকসভা নির্বাচন: রাস্তার দাবিতে ভোট বয়কট করলেন গ্রামবাসী
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী স্মরণে কাল নাগরিক সভা
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী স্মরণে কাল নাগরিক সভা
শেষ ম্যাচে জিতে সুপার লিগে গাজী গ্রুপ
শেষ ম্যাচে জিতে সুপার লিগে গাজী গ্রুপ
কারাগার এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী
কারাগার এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী
সর্বাধিক পঠিত
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?