নোবেল পুরস্কারের বিকল্প হিসেবে পরিচিত সুইডেনের ‘রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন দেশটির কিশোরী জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থানবার্গ। এক বিবৃতিতে রাইট লাইভলিহুড কর্তৃপক্ষ জানায়, বৈজ্ঞানিক সত্যকে প্রতিফলিত করে জলবায়ু পরিবর্তনে জরুরি পদক্ষেপ নিতে রাজনৈতিক দাবিকে জোরালো ও উৎসাহিত করায় থানবার্গ এই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় রাজনীতিবিদদের ভূমিকা নিতে বাধ্য করতে এক বছর আগে সুইডেনের স্কুলশিক্ষার্থী গ্রেটা থানবার্গ শুরু করেন তরুণদের আন্দোলন। গত বছর বিশ্বজুড়ে স্কুলে ধর্মঘট পালনের পর বড়দেরও তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। তার সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিশ্বের বিভিন্ন শহরে জড়ো হয় লাখ লাখ মানুষ। তারা ওই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেন। সবশেষ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ব্যর্থ হওয়ায় সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের ব্যাপক সমালোচনা করেন ১৬ বছরের এই সুইডিশ কিশোরী।
গ্রেটা ছাড়াও এই তালিকায় আরও তিনজন রয়েছেন। তারা হলেন, ব্রাজিলের আদিবাসী ইয়ানোমামি জনগোষ্ঠীর নেতা দেবি কোপেনাওয়া, চীনের মানবাধিকার আইনজীবী জিও জিয়ানমেই ও পশ্চিম সাহারার মানবাধিকারকর্মী আমিনাতো হায়দার। পুরস্কারের অর্থ হিসেবে এই চার বিজয়ী এক মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনা পাবেন।
সোমবার জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলনে বক্তৃতার শুরুতেই প্রচণ্ড আক্রমণাত্মকভাবে কথা বলা শুরু করেন থানবার্গ। সোমবার নিউনিয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে আয়োজিত জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দেয় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান, ব্যবসায়ী নেতা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। দিনব্যাপী এই সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে করণীয় ঠিক করতে মতামত রাখেন তারা।
সরাসরি বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে আবেগপূর্ণ বক্তব্যে গ্রেটা থানবার্গ বলেন, ‘সবকিছুই ভুলভাল চলছে। আমার এখানে থাকার কথা নয়। সমুদ্রের অপর পাড়ে আমার স্কুলে ফিরে যাওয়ার কথা, তবুও আপনারা আশার জন্য আমাদের তরুণদের কাছে আসেন। কতটা দুঃসাহস আপনাদের?’ সুইডেনের এই স্কুলশিক্ষার্থী বলেন, ‘ফাঁকা বুলি দিয়ে আমার স্বপ্ন আর শৈশব কেড়ে নিয়েছেন আপনারা।’ বিশ্বনেতাদের দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের পর্যবেক্ষণ করতে থাকবো।’
দ্য রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ডের প্রবর্তক সুইডিশ জার্মান ডাকটিকিট বিশারদ জ্যাকভ ভন ওয়েক্সকাল। পরিবেশ এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়নে অবদানের জন্য নোবেল ফাউন্ডেশন পুরস্কার প্রবর্তন করতে অস্বীকার করলে তিনি ১৯৮০ সালে তা চালু করেন।