ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ মালুকুতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩০-এ পৌঁছেছে। রবিবার সংস্থাটি জানায়, ভূমিকম্পের ফলে হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) মালুকুর দীপগুলোর ওই ভূমিকম্পে ব্যাপকমাত্রায় ভূমিধস ও ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া, জলবায়ু ও ভূ-প্রকৌশল সংস্থাকে (বিএমকেজি) উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় ভোরে অনুভূত এ ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিলো ৬ দশমিক ৫। দুর্যোগ সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পটির উৎপত্তি প্রাদেশিক রাজধানী আমবোন থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে ছিলো। এতে শত শত ঘরবাড়ি, সরকারি স্থাপনা ও অবকাঠামো ধ্বংস হয়।
গত বৃহস্পতিবার ইন্দোনেশিয়ার সরকারি কর্মকর্তারা মৃতের সংখ্যা ২০ বলে জানিয়েছিলেন। তবে ধ্বংসস্তুপ থেকে উদ্ধারের পর মৃতের সংখ্যা ৩০-এ পৌঁছেছে। এ ভূমিকম্পে ১৫০ জনের বেশি আহত হয়েছে। জাতীয় দুর্যোগ সংস্থার মুখপাত্র আগুস উইবোও বলেন, এখনও কমপক্ষে দুই লাখ মানুষ সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে।
আমবোনের দুর্যোগ সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অনেকে আবার হাসপাতাল ও আশ্রয় কেন্দ্রের কাছে তাঁবু গেড়ে অবস্থান করছে। ভূমিকম্পের পরপরই সুনামির আশঙ্কায় নিচু ভূমির লোকজনকে উপরের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল প্যাসিফিক রিং অব ফায়ারের (প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলা) ওপর অবস্থানের কারণে ইন্দোনেশিয়ায় প্রায়ই বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়। গত বছর মালুকুর পশ্চিমে সুলাওয়েসি দ্বীপে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে পালু শহর বিধ্বস্ত হয়। ভূমিকম্পের পর শহরটিতে সুনামি আঘাত হানে। এতে চার হাজারেরও বেশি লোকের মৃত্যু হয়। এর আগে ২০০৪ সালে সুমাত্রা দ্বীপের উপকূলে সাগরের তলদেশে সংঘটিত এক ভূমিকম্পে পর সৃষ্ট সুনামিতে ভারত মহাসাগরের উপকূলজুড়ে ১৪টি দেশের দুই লাখ ২৬ হাজার লোক নিহত হয়েছিলো, তাদের মধ্যে এক লাখ ২০ হাজার জন ছিল ইন্দোনেশিয়ার।