যুক্তরাজ্যের রাজপরিবারের পুত্রবধূ ও ডাচেস অব সাসেক্স মেগান মার্কেল বলেছেন, প্রিন্স হ্যারিকে বিয়ের আগেই বন্ধুদের কাছ থেকে সতর্ক বার্তা পেয়েছিলেন তিনি। বন্ধুরা তাকে সতর্ক করেছিল, হ্যারিকে বিয়ে করলে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডগুলো থেকে রুঢ় আক্রমণ আসতে পারে। গত রবিবার রাতে যুক্তরাজ্যের টিভি চ্যানেল আইটিভিতে প্রচারিত এক তথ্যচিত্রে এসব কথা বলেছেন ৩৮ বছর বয়সী সাবেক এই অভিনেত্রী। এছাড়াও ওই তথ্যচিত্রে নিজের ওপরের চাপ নিয়েও কথা বলেছেন তার স্বামী প্রিন্স হ্যারি। আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলে এই দম্পতির সাম্প্রতিক সফরকে ঘিরে প্রচারিত হয় ‘হ্যারি অ্যান্ড মেগান: অ্যান আফ্রিকান জার্নি’ শীর্ষক ওই তথ্যচিত্রটি।
২০১৮ সালের মে মাসে বৃটিশ রাজপরিবারের ইতিহাসে অনন্য এক জাকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে পরস্পরের জীবনসঙ্গী হন প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মার্কেল। সেন্ট জর্জ চ্যাপেলে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও অভিজাত ৬০০ অতিথির উপস্থিতিতে বিয়ের বন্ধনে জড়ান তারা। রাজপরিবারের এই নতুন দম্পতি তখন থেকে পরিচিত হয়ে আসছেন ডিউক ও ডাচেস অব সাসেক্স হিসেবে।
রবিবার রাতে প্রচারিত তথ্যচিত্রে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য হিসেবে সংবাদমাধ্যমের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা সদ্যোজাত শিশু আর্চির মা হিসেবে নিজের সংগ্রামের কথাও বলেছেন মেগান মার্কেল। তিনি বলেন, “আমি যখন প্রথমবার আমার এখনকার স্বামীর সঙ্গে দেখা করেছিলাম তখন আমার বন্ধুরা সত্যিই খুশি হয়েছিলো কারণ আমিও খুশি ছিলাম। কিন্তু আমার ব্রিটিশ বন্ধু আমাকে বলেছিল, ‘আমি নিশ্চিত সে খুবই ভালো কিন্তু তোমার এটা করা উচিত হয়নি কারণ ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডগুলো তোমার জীবন ধ্বংস করে দেবে’। আর আমি খুবই সরলভাবে বলেছিলাম, ‘তোমরা কী নিয়ে কথা বলছো? কোনও কিছু আগে থেকে ধারণা করা যায় না। আমি ট্যাবলয়েডে নেই’।”
আবেগপূর্ণ ওই তথ্যচিত্রে মেগান বলেন, খুব বেশি মানুষ আমাকে জিজ্ঞেস করে না আমি ভালো আছি কিনা। স্বামী প্রিন্স হ্যারি প্রসঙ্গে মেগান মার্কেল বলেন, ‘সৎভাবে বলি আমি বহুবার এইচ’কে বলেছি-আমি ওই নামেই তাকে ডাকি- কোনওভাবে শুধু বেঁচে থাকাটাই যথেষ্ট নয়, এটা জীবনের অর্থ নয়। জীবনে সমৃদ্ধ হতে হয়’।
তথ্যচিত্রে ব্রিটিশ সিংহাসনের ষষ্ঠ উত্তরসূরি ও ডিউক অব সাসেক্স প্রিন্স হ্যারি নিজের ওপরের চাপ নিয়ে কথা বলেন। ভাই প্রিন্স উইলিয়াম প্রসঙ্গেও কথা বলেন তিনি। বলেন, ‘আমরা ভাই। সবসময়ই ভাই থাকবো। নিশ্চিতভাবে আমাদের পথ এখন আলাদা কিন্তু সবসময়ই আমি তার পাশে থাকবো আর আমি জানি সেও আমার পাশে থাকবে’।
১৯৯৭ সালে প্যারিসে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান প্রিন্স হ্যারি ও প্রিন্স উইলিয়ামের মা প্রিন্সেস অব ওয়েলস ডায়ানা। স্ত্রীও তার মায়ের মতো একই চাপ অনুভব করবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ৩৫ বছর বয়সী হ্যারি বলেন, সবসময়ই আমি আমার পরিবারকে সুরক্ষা দেবো আর এখন আমার সুরক্ষা দেওয়ার মতো একটা পরিবার আছে।