ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার বিপন্নতা ও আসামের নাগরিক তালিকা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কলকাতাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) কংগ্রেসের এক বৈঠকে আসামের ১৯ লাখ মানুষের রাজ্যছাড়া হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া সংক্রান্ত ভারপ্রাপ্ত সহ সচিব অ্যালিস জি ওয়েলস সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানো, গোরক্ষকদের নির্বিচারি কর্মকাণ্ড ও ধর্মান্তরবিরোধী আইনের প্রসঙ্গ তুলে ভারতকে প্রশ্নের মুখে ফেলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৩১ আগস্ট প্রকাশিত ভারতের আসাম রাজ্যের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) থেকে বাদ পড়েছেন রাজ্যের ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন বাসিন্দা। কংগ্রেসে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এবং নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক সাব-কমিটির সভায় অ্যালিস জি ওয়েলস বলেছেন, ‘আসামের ১৯ লাখ মানুষ দেশহীন হওয়ার আশঙ্কায় দিন গুনছেন। কারণ, তাদের নাগরিকত্ব নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।’ এনআরসি নিয়ে ভারতের রাজনীতি সরগরম বহু দিন ধরেই। তবে তা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মুখ খোলাটা তাৎপর্যপূর্ণ।
শুধু এনআরসি নয়, ওই বৈঠকে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসা ও বৈষম্য, বিশেষত মুসলিম ও দলিতদের উপরে গোরক্ষকদের আক্রমণ, নয়টি রাজ্যে ধর্মান্তর-বিরোধী আইনসহ সব নিয়েই ভারতকে কার্যত কাঠগড়ায় তুলেছেন অ্যালিস। তার মতে, উল্লিখিত প্রত্যেকটি উদাহরণই ভারতে সংখ্যালঘুদের আইনি রক্ষাকবচের পরিপন্থী। অ্যালিস বলেন, ধর্মাচরণের স্বাধীনতা এবং অরক্ষিতদের রক্ষা করার কথা ভারত সরকারকে মনে করিয়ে দিয়েছে আমেরিকা। এই ‘অরক্ষিত’দের কথা বলতে গিয়েই আসামের নাগরিকদের কথা তোলেন তিনি।
কংগ্রেসের ওই বৈঠকে সব ধরনের হিংসার নিন্দা এবং দোষীদের চিহ্নিত করারও তাগিদ দেন অ্যালিস। তিনি বলেন, ‘অন্য সব দেশের মতো ভারতের সঙ্গেও আমরা মানবাধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে আলাপ-আলোচনা চালাই। বিদেশে বসবাসকারী মার্কিন নাগরিকদের, যাদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে, স্বার্থ রক্ষা করাকে আমরা অগ্রাধিকার দিই। তাই কোনও অভিভাবক তার সন্তানকে অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে (বিবাহবিচ্ছিন্ন দম্পতিদের ক্ষেত্রে), এই ধরনের ঘটনা ঘটলে আমরা ভারতকে তার গুরুত্ব বোঝানোর চেষ্টা করি। আশাও করি, তারা এই ধরনের ঘটনা রুখতে চেষ্টা চালাবে।’