X
মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪
৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিজেপির হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নের হাতিয়ার হবে রাম মন্দির?

আরশাদ আলী
১০ নভেম্বর ২০১৯, ১৮:২৯আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০১৯, ১৮:৫৭

তিন দশক ধরে ভারতের ধর্ম ও রাজনীতিতে বাবরি মসজিদ ইস্যুটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ভারতের সর্বোচ্চ আদালত বিতর্কিত ওই ভূমিতে রাম মন্দির নির্মাণের নির্দেশনা দেওয়ায় ক্ষমতাসীন বিজেপির আধিপত্য আরও নিরঙ্কুশ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই রায় পর্যালোচনা করে বিশ্লেষকরা বলছেন, রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে আরও মসৃণ হতে যাচ্ছে শাসকের মতাদর্শ হিসেবে হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নের পথ। ক্রমশ প্রান্তিক হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে সেখানকার মুসলিমদের। ধীরে ধীরে তাদের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা হবে। এদিকে অর্থনৈতিক ইস্যু থেকে জনগণের নজর ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগও সফলতা পাবে। এই রায়ের ধারাবাহিকতায় অন্যান্য মসজিদেও হিন্দুত্ববাদের নজর পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

১৯৯২ সালে করসেবকরা বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলে

ভারতীয় শাসকদের মতাদর্শ হিসেবে হিন্দু জাতীয়তাবাদের প্রতিষ্ঠা

১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা অর্জনের সময় ভারতে হিন্দু জাতীয়তাবাদ ছিল একটি প্রান্তিক মতাদর্শ। এর কয়েক দশক পর প্রধান হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল জন সংঘের উপস্থিতি ছিল খুব কম এবং কয়েকটি রাজ্যেই তা সীমাবদ্ধ ছিল। এমনকি ১৯৮৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে জন সংঘের উত্তরসূরী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) মাত্র দুটি আসনে জয় পেয়েছিল।

১৯৮০-র দশকে রাম জন্মভূমি আন্দোলন পুরো পরিস্থিতি পাল্টে দেয় এবং হিন্দুত্ববাদকে মূলধারায় নিয়ে আসে। ওই সময় এই আন্দোলন কংগ্রেস থেকে বিজেপির বিপুল রাজনৈতিক সমর্থন পায়। যা শুরু হয় মসজিদে হিন্দু মূর্তি স্থাপন এবং চূড়ান্ত হয় বাবরি মসজিদ ধূলিস্যাত করার মধ্য দিয়ে।

এরপরই হিন্দুত্ববাদ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে শক্তিশালী অবস্থান নেয়: কঠোর গো-মাংসবিরোধী ও ধর্মান্তরবিরোধী আইন প্রণয়ন এবং ভারতীয় ইউনিয়নের মূল স্তম্ভ হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষতাকে খারিজ করা হয়।

এখন সুপ্রিম কোর্ট যখন রাম জন্মভূমির রায়ে বাবরি মসজিদের স্থলে রাম মন্দির নির্মাণে রায় দিয়েছেন তখন হিন্দু জাতীয়তাদের ঊর্ধ্বোগতি পূর্ণতা পেলো। ধর্ম ও রাষ্ট্র কেমন ঘনিষ্ঠভাবে একীভূত হয়েছে তা বুঝতে আদালতের রায়টি যথেষ্ট। আদালত কোনও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে মন্দির নির্মাণের দায়িত্ব দেননি। একটি ট্রাস্ট গঠন করে মন্দির নির্মাণের দায়িত্ব দিয়েছেন খোদ মোদি সরকারকে। আইন বিশেষজ্ঞ ফয়জান মুস্তাফা রায় সম্পর্কে বলেছেন, মনে হচ্ছে আদালত আইনের শাসন নয়, ধর্মীয় বিশ্বাসের আলোকে রায় দিয়েছেন।

এক সময় যা ছিল প্রান্তিক আদর্শ, ক্ষমতার পথে এগিয়ে যেতে যাদের জঙ্গি আন্দোলন গড়ে তুলতে হয়েছিল, তারাই এখন ভারতের কাণ্ডজ্ঞান নির্ধারণ করছে। বড় কথা হলো বিজেপি ভারতকে একটি হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।

রায় উদযাপন হিন্দু পুরোহিতদের

বিজেপির আধিপত্য প্রতিষ্ঠা

ভারতের হিন্দুত্ববাদের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপির উত্থান। বাবরি মসজিদের তালা খুলে হিন্দুদের পূজার অনুমতি দিতে আদালতে রায়কে সমর্থন দিয়ে সত্যিকার অর্থে ১৯৮৬ সালে রামজন্মভূমি আন্দোলন শুরু করেছিল কংগ্রেস। তবে দ্রুতই আন্দোলনটি চলে আসে বিজেপির নেতৃত্বে। যে দলটি বাবরি মসজিদ ভেঙে সেখানে মন্দির গড়ে তুলতে গণআন্দোলন শুরু করে।

বাবরি মসজিদ ভাঙার দুই দশক পর ২০১৪ সালে বিজেপি লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপি সরকার নয়া দিল্লিতে আসীন হওয়ার পর বিচার ব্যবস্থা ইস্যুটিতে প্রচলিত ধীরগতি কাটিয়ে গতি অর্জন করে এবং প্রায় প্রতিদিন শুনানি চলে। এটি ইঙ্গিত দেয় এই রায়ের কৃতিত্ব যেনও বিজেপি পায়, তা নিশ্চিত করা। বিজেপির ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট জেপি নড্ডা রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে এনডিএ সরকারের আমলে দেবতা রামের মন্দিরের ইস্যুটি সমাধিত হওয়া আমাদের জন্য বড় ধরনের সন্তুষ্টির।

লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার চেয়ে প্রয়োজনীয় আসন রয়েছে বিজেপির। দলটি যেভাবে ভারতকে মতাদর্শিকভাবে পরিবর্তিত করছে সেটির সঙ্গে কেবল ১৯৪৭ সালে কংগ্রেসের তুলনা চলে। এই রায়ে বিজেপির আধিপত্য প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত সম্পর্কে অবগত জেপি নড্ডা বলেন, যখনই এই দেশের ইতিহাস পুনরায় লেখা হবে, কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের কথা সোনালী অক্ষরে লেখা থাকবে।

রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তা ও ১৪৪ ধারা জারি করা হয়

মুসলিমদের প্রান্তিকীকরণ চূড়ান্ত

মাত্র তিন মাস আগে মোদির সরকার তাদের নির্বাচনি ইশতেহারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি হিসেবে ভারতের একমাত্র মুসলিম রাজ্য জম্মু-কাশ্মিরের বিশেষ অধিকার বাতিলের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছে। ওই সিদ্ধান্তের ফলে জম্মু-কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন ও বিশেষ অধিকার বাতিল এবং রাজ্যটিকে দুটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এই অনুচ্ছেদে বর্ণিত কাশ্মিরিদের বিশেষ সুবিধা অকার্যকর করার মধ্য দিয়ে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মিরের জনসংখ্যাতাত্ত্বিক চরিত্রে পরিবর্তন আনতে চাইছে বিজেপি। বিশ্লেষকদের মতে, মোদি সরকার আদতে কাশ্মিরে হিন্দু বসতি ও শিল্প গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে সেখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম সম্প্রদায়কে হুমকির মুখে ঠেলে দিতে চাইছে। এই সিদ্ধান্তকে তাই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের প্রশ্নে ইসরায়েলি নীতির সঙ্গে তুলনা করছেন কেউ  কেউ। তারা বলতে চাইছেন, কাশ্মিরকে ফিলিস্তিন বানানোর পাঁয়তারা করছে হিন্দুত্ববাদী সরকার।

মুসলিমদের বিরোধিতা করে হিন্দু জাতীয়তাবাদের প্রতিষ্ঠার বিষয়টি নজরে রেখে বলা যায় যে, হিন্দুত্ববাদে ঊর্ধ্বোগতির ফলে মুসলিমদের প্রান্তিকীকরণও অব্যাহত থাকবে। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এর বাস্তব চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে।  ১৯৫১ সালের পর সবচেয়ে কম অনুপাতে মুসলিমরা আসন পেয়েছে। আর্থ-সামাজিক সূচকের তথ্যে দেখা গেছে, দলিতদের তুলনায় মুসলমানদের অবস্থা খারাপ হয়েছে।

এবার এই প্রবণতা বিচার ব্যবস্থাতেও হাজির হয়েছে। যেমন- আইন অনুসারে স্ত্রীদের পরিত্যাগ করলে মুসলিম পুরুষদের শাস্তির মুখে পড়তে হবে।

এই রায়ের ফলে এটি স্পষ্ট যে, মুসলিমদের কাছে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনায় আইনের সহযোগিতা পাওয়ার সুযোগ খুব সামান্য। স্বাভাবিকভাবেই সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শনিবারের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন তারা করবে না।

শনিবার যখন রায় ঘোষণা করা হয় হিন্দু আইনজীবীরা আদালতের বাইরে রামের নামের স্লোগান দেন। এসময় হিন্দু পুণ্যার্থীরা শঙ্খ বাজিয়ে উদযাপন করে। বিরোধপূর্ণ ভূমির মাত্র কয়েক গজ দূরে এক হিন্দু পুরোহিত চিৎকার করে বলছিলেন, ভারত মাতার জয়। তবে পুরো অযোধ্যার চিত্র এমন ছিল না। শহরটির বেশিরভাগ মুসলিমদের রাস্তায় থাকতে দেওয়া হয়নি এবং মুসলমানরাও বিষয়টি নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেননি।

কার্নেগি এনডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস-র দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক মিলান বৈষ্ণব বলেন, আশু আশঙ্কা হলো সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা। কিন্তু দেশটি যে কোনও সময় সংঘাতে জড়াতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি আশঙ্কা হলো, ভারতের মুসলিম ও অন্য সংখ্যালঘুরা নিজেদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে মনে করা শুরু করবে।

রায়ের পর অযোধ্যা শহর

মুসলিম ইতিহাস মুছে ফেলার উদ্যোগ

বাবরি মসজিদ ১৫০০ শতাব্দীতে মোঘল শাসনামলে তৈরি। অনেক হিন্দু মনে করেন, ওই সময় মুসলিম দখলে হিন্দুদের ওপর নিপীড়ন হয়েছে। যদিও মোঘল আমলেই তাজ মহল তৈরি হয়েছে। এটিকে আবার বিখ্যাত ভারতীয় প্রতীক হিসেবে মনে করা হয়। উগ্র হিন্দুরা এটিকে অতীত নিপীড়নের সাক্ষ্য হিসেবে মনে করে।

অনেক হিন্দু জাতীয়তাবাদী ইতিহাসের এই অধ্যায়টি মুছে ফেলতে এবং ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্রের পরিণত করতে চায়। ভারতের ৮০ শতাংশ মানুষ হিন্দু। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব বলেন, ‘স্বাধীনতার পর আমরা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের সব প্রতীক মুছে ফেলেছি। তাদের নামের সড়কগুলোর নাম পরিবর্তন করা হয়েছে, রানি এলিজাবেথের ভাস্কর্য এবং সবকিছু সরানো হয়েছে’।

রাম মাধব আরও বলেন, মোঘল শাসনামলের সব প্রতীক মুছে ফেলতে একই উদ্যোগ নেওয়া উচিত ভারতের। মোঘল সম্রাটদের ৩০০ বছরের শাসন ছিল নির্মম। এটি একেবারে সোজা। বিষয়টি ধর্ম নিয়ে নয়। আমরা কোনও ধর্মের বিরোধী নই। ভারত বিশ্বের মধ্যে অন্যতম ধর্মীয় বৈচিত্র্যের দেশ।

ভারতের হিন্দুত্ববাদের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপির উত্থান

অর্থনৈতিক দূরাবস্থা থেকে নিঃশ্বাসের সুযোগ পেলো মোদি সরকার

১৯৭৫ সালে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সিকিমকে ভারতে একীভূত করার বিষয়ে সাংবাদিক বিজে ভার্গিস রসিকতা করে লিখেছিলেন, ‘হয়ত সাধারণ মানুষকে আর রুটি চাইতে হবে না। সে সিকিম পেয়ে গেছে’।

২০১৯ সালেও একই কথা খাটে। বিজেপির আশা, চলমান অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি ও দুর্বল মানবউন্নয়ন সূচকে ভারতের অবস্থান থেকে মানুষের মনোযোগ এখন মন্দির নির্মাণে কেন্দ্রীভূত হবে। এ বছরের নির্বাচনের পূর্বে মোদি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতকে ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত দেশটির প্রবৃদ্ধি নিম্নগামী এবং গত ৪৫ বছরের মধ্যে বেকারত্বের হার সর্বোচ্চ।

এক্ষেত্রে বিজেপিকে সহযোগিতা করেছে সুপ্রিম কোর্টের বিস্ময়কর রায়। মন্দির নির্মাণে ট্রাস্ট গঠনের দায়িত্ব পেয়েছে মোদির সরকার। নিশ্চিতভাবেই, আগামী কয়েক বছর মন্দির নির্মাণে বিজেপির ভূমিকা নিয়ে অনেক কথা শোনা যাবে। 

বাবরি মসজিদে পুলিশের পাহারা

বিজেপির মৌলিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের পথ উন্মুক্ত

রামজন্মভূমি আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য বাবরি মসজিদের স্থলে মন্দির নির্মাণের দাবি সুপ্রিম কোর্টেই অনুমোদিত হয়েছে। ফলে এখন বিজেপি তাদের প্রতিটি হিন্দু জাতীয়তাবাদী লক্ষ্য বাস্তবায়নে অগ্রসর হবে। যা এতোদিন ভারতীয় রাজনীতিতে সম্ভব বলে মনে হতো না।

রায় ঘোষণার পর কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং মুসলিম আইন বাতিলের বিষয়ে কথা বলেছেন। অন্যান্য পদক্ষেপগুলোর মধ্যে থাকতে পারে নাগরিকত্ব সংশোধন বিল যাতে ধর্ম গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে হাজির হবে। জাতীয় নাগরিক তালিকা যাতে মুসলমানদের নাগরিকত্ব যাচাই করা হবে। এছাড়া ধর্মান্তর থেকে গো-মাংস নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে আইন। আইনি ও নির্বাচনি সব বাধা দূর হওয়ার ফলে বিজেপি এখন আগামীতে যা করতে চায়, তা করার স্বাধীনতা পেয়ে গেছে।

  রায়কে কেন্দ্র করে অযোধ্যার একটি মসজিদে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী

এবার নজর অন্যান্য মসজিদেও

হিন্দু মতাদর্শ অনুসারে অযোধ্যাই একমাত্র স্থান নয় যেখানে মন্দিরের জায়গা মসজিদ নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে। সিতা রাম গোয়েল ও অরুণ সৌরির লেখা এক বই অনুসারে, এই সংখ্যা কয়েক হাজার।

শনিবার বিজেপি বা আরএসএস-র পক্ষ থেকে নতুন কোনও মসজিদকে টার্গেট করার কথা বলা হয়নি। তবে রায় ঘোষণার পর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ স্পষ্ট করেছে যে, বারানাসি ও মাথুরার মসজিদের ক্ষেত্রে ‘সুপ্রিম কোর্টের রায় শেষ কথা নয়, মাত্র শুরু’।

আরএসএস’র যে কোনও সংগঠনের তুলনায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বাবরি মসজিদ ভাঙা ও মন্দির গড়ে তোলার প্রচারণায় চালিয়েছে বেশি। এমনকি হিন্দু দেবতা রামের মামলায় আদালতে যুক্তিতর্ক তুলে ধরা মানুষের সঙ্গে এই সংগঠনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

আশঙ্কা করা হচ্ছে, হয়ত শিগগিরই বিজেপি নতুন কোনও মন্দির আন্দোলনে যাবে না শনিবারের রায়ের কারণে। কিন্তু গেরুয়া দলটির রাজনীতিতে এটি সব সময় গুরুত্বপূর্ণ। যখন প্রয়োজন হবে তখনই তা শুরু হবে।

রায় ঘোষণার পর মুসলিমরা পুনর্বিবেচনার আবেদন নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ধর্মীয় সম্প্রীতির কথা বলে এক পক্ষ আবেদন করতে আগ্রহী নয়, অন্যপক্ষের আশঙ্কা বাবরি মসজিদের পর নতুন মসজিদ ভাঙা হতে পারে।

অবশ্য আদালত রায় ঘোষণার পর পরিচয় গোপন করে উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের ফোন করে নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে, আর কোনও মসজিদ ভাঙা হবে না এবং দেশ গঠনে মনোযোগী হওয়া উচিত।

অযোধ্যায় নিজেরে বাড়ির উঠোনে বসে হাজি মাহবুব আহমেদ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, তিনি চেয়েছিলেন মসজিদটি নির্মাণ হোক। তবে বিরুদ্ধে গেলেও রায়টি মুসলমানরা মেনে নেবে। কিন্তু তিনি আশঙ্কা করছেন, উগ্র হিন্দুরা এতে উৎসাহিত হবে এবং আরও মসজিদ ভেঙে ফেলা হবে।

মাহবুব আহমেদের আশঙ্কা, মুসলমানদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বৃদ্ধি পাবে এবং তা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নেবে।

 

/বিএ/
সম্পর্কিত
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে নৌকাডুবিতে নিহত ৪
ভারতের গ্র্যান্ডমাস্টারকে হারিয়ে বাংলাদেশের মননের চমক
শেখ হাসিনাকে নরেন্দ্র মোদির ‘ঈদের চিঠি’ ও ভারতে রেকর্ড পর্যটক
সর্বশেষ খবর
‘বিএনপি বিরোধিতা করলেও তাদের অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে’
‘বিএনপি বিরোধিতা করলেও তাদের অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে’
পেনাল্টি নিয়ে বিবাদ, চেলসি কোচ যা বললেন
পেনাল্টি নিয়ে বিবাদ, চেলসি কোচ যা বললেন
লিটারে ১০ টাকা বাড়লো সয়াবিন তেলের দাম
লিটারে ১০ টাকা বাড়লো সয়াবিন তেলের দাম
কোপেনহেগেনের ঐতিহাসিক স্টক এক্সচেঞ্জ ভবনে আগুন
কোপেনহেগেনের ঐতিহাসিক স্টক এক্সচেঞ্জ ভবনে আগুন
সর্বাধিক পঠিত
কিছু আরব দেশ কেন ইসরায়েলকে সাহায্য করছে?
কিছু আরব দেশ কেন ইসরায়েলকে সাহায্য করছে?
সরকারি চাকরির বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, আবেদন শেষ ১৮ এপ্রিল
সরকারি চাকরির বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, আবেদন শেষ ১৮ এপ্রিল
শেখ হাসিনাকে নরেন্দ্র মোদির ‘ঈদের চিঠি’ ও ভারতে রেকর্ড পর্যটক
শেখ হাসিনাকে নরেন্দ্র মোদির ‘ঈদের চিঠি’ ও ভারতে রেকর্ড পর্যটক
৪ দিনেই হল থেকে নামলো ঈদের তিন সিনেমা!
৪ দিনেই হল থেকে নামলো ঈদের তিন সিনেমা!
বিসিএস পরীক্ষা দেবেন বলে ক্যাম্পাসে করলেন ঈদ, অবশেষে লাশ হয়ে ফিরলেন বাড়ি
বিসিএস পরীক্ষা দেবেন বলে ক্যাম্পাসে করলেন ঈদ, অবশেষে লাশ হয়ে ফিরলেন বাড়ি