X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রে ‘স্বাধীনভাবে বাঁচার’ সুযোগ পেলেন এক বাংলাদেশি মা

ব্রজেশ উপাধ্যায়, যুক্তরাষ্ট্র
১৪ নভেম্বর ২০১৯, ২৩:৫০আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০১৯, ২৩:৫৪

সালমা সিকান্দার যখন অনলাইনে দেখলেন যুক্তরাষ্ট্র তার আশ্রয়ের আবেদন গ্রহণ করেছে তখন প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। কিছুক্ষণের মধ্যেই তা আনন্দের কান্নায় বদলে যায়। আর কানেকটিকাটে বসবাসরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পরিবারটির সব সদস্য একসঙ্গে জড়ো হয়ে সেই কান্নায় অংশ নেয়। সালমার ছেলে সমির মাহমুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তিনি খুবই উতলা ছিলেন, কান্না থামাতে পারছিলেন না’। যুক্তরাষ্ট্রে ‘স্বাধীনভাবে বাঁচার’ সুযোগ পেলেন এক বাংলাদেশি মা

স্বামী আনোয়ার মাহমুদের সঙ্গে দেখা করতে ২০ বছর আগে পর্যটক ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করলে শুরু হয় সালমা সিকান্দারের টানাপোড়েনের গল্প। বাংলাদেশের রাজনৈতিক শরণার্থী আনোয়ারেরও তখন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের আইনগত ভিত্তি ছিলো না। ওই অবস্থাতেই ১৯৯৯ সালে তার সঙ্গে দেখা করতে যুক্তরাষ্ট্রে যান সালমা।

তারপরের দীর্ঘ সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়ের আবেদন চালিয়ে গেছেন সালমা সিকান্দারের স্বামী আনোয়ার মাহমুদ। ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিসেবে বাংলাদেশে ফিরলে নিপীড়নের মুখে পড়তে পারেন এমন যুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় আবেদন চালিয়ে গেছেন তিনি। তবে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে তা। এই সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নিয়েছে তাদের ছেলে সমির। তার যত্ন নেওয়ার যুক্তিতে নিজের আশ্রয়ের আবেদন চালিয়ে যান সালমা।

গত বছর ওই আবেদনের নিষ্পত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্ক কর্মকর্তারা ২৩ আগস্ট সালমা সিকান্দারকে দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত দেয়। অথচ এর মাত্র কয়েক দিন পরই কলেজ শুরু করার কথা ছিলো তাদের সন্তানের।

কর্মকর্তাদের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কানেক্টিকাটের অভিবাসন ও শুল্ক কার্যালয়ের সামনে আমরণ অনশনে বসেন আনোয়ার মাহমুদ। তার সঙ্গে যোগ দেয় আরও কয়েকজন। যাদের অনেকেই ছিলেন পথচারী। আবার স্থানীয় কর্মকর্তা, প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ও আইনপ্রণেতারাও তাকে সমর্থন জানান।

এই সময়ে সালমা সিকান্দারের গতিবিধির ওপর নজরদারি করতে তার পায়ে বাঁধা থাকতো জিপিএস ব্রেসলেট। তার ছেলে সমির বলেন এই সময়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে একা থাকতে বাধ্য হওয়ার চিন্তায় আচ্ছন্ন থাকতেন। তিনি বলেন, ‘ফ্লাইটে তুলে দেওয়ার মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে এক অভিবাসন বিচারক তাকে ফেরত পাঠানোর ওপর এক বছরের নিষেধাজ্ঞা দেয়’।

তারপরেও লড়াই চালিয়ে গেছে পরিবারটি। আর এক বছরেরও বেশি সময় পর তাদের আবেদনের জবাব এসেছে। সালমা সিকান্দার আর আনোয়ার মাহমুদ দুজনেরই আশ্রয়ের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। এক বছরের মাথায় তারা গ্রিন কার্ডের আবেদন করতে পারবেন।

সমির বলেন, এখন মা আমার মতোই স্বাধীনভাবে বাঁচতে পারবেন। কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে পড়তে থাকা সমির জানালেন প্রকৌশল পড়া শেষে রাজনীতিতে যুক্ত হতে চান তিনি।

আশ্রয়ের আবেদন গৃহীত হওয়ায় এখন পরিবার হিসেবে বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ পাবে পরিবারটি। সমির বলেন, ‘হয়তো ফ্লোরিডা বা হাওয়াইতে বেড়াতে যেতে চাইবেন তারা’। বাংলাদেশে যাওয়ার কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা হয়তো প্রথম বিদেশ ভ্রমণ হবে। তবে এই মুহূর্তে তা অগ্রাধিকারে নেই।

 

/জেজে/
সম্পর্কিত
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পুরস্কার পেলেন কুবির চার শিক্ষার্থী
ন্যাটোর অংশীদার হতে আগ্রহী আর্জেন্টিনা
সর্বশেষ খবর
জাপানি ছবির দৃশ্য নিয়ে কানের অফিসিয়াল পোস্টার
কান উৎসব ২০২৪জাপানি ছবির দৃশ্য নিয়ে কানের অফিসিয়াল পোস্টার
ড্যান্ডি সেবন থেকে পথশিশুদের বাঁচাবে কারা?
ড্যান্ডি সেবন থেকে পথশিশুদের বাঁচাবে কারা?
লখনউর কাছে হারলো চেন্নাই
লখনউর কাছে হারলো চেন্নাই
পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দফার ভোট শেষেই বিজয় মিছিল
পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দফার ভোট শেষেই বিজয় মিছিল
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া