২০১১ সাল থেকে সিরিয়া যুদ্ধে এ পর্যন্ত ২৯ হাজারের অধিক শিশু নিহত হয়েছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে লন্ডনভিত্তিক একটি মানবাধিকার সংগঠন। বুধবার (২০ নভেম্বর) বিশ্ব শিশু দিবস উপলক্ষে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে তারা। তুর্কি বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। দেশটিতে চলমান সংকট নিয়ে বিপরীত মেরুতে অবস্থান নিয়েছে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য তারা আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণাকারী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করছে। একইসঙ্গে তারা আইএসের বিরুদ্ধেও বিমান হামলা চালাচ্ছে। তবে আসাদ সরকারের দাবি, আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে যুক্তরাষ্ট্র মূলত আসাদবিরোধী বিদ্রোহীদের সহযোগিতা করতে সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা চালাচ্ছে। আর রাশিয়া বাশার আল আসাদকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। আসাদ সরকারের সমর্থনে রাশিয়া-ইরানও আইএস এবং বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে।
দ্য সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, আসাদ সরকার ও ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২২ হাজার ৭৫৩ জন শিশু নিহত হয়েছে। এর মধ্যে কমপক্ষে ১৮৬ শিশু সরকারের রাসায়নিক হামলায় নিহত হয়েছে এবং ৩০৫ শিশু অপুষ্টি ও ওষুধ স্বল্পতায় মারা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ বাহিনী আসার পর তাদের হাতে ১ হাজার ৯২৮ জন, সিরিয়ার বিরোধী বাহিনীর হাতে ৯৮৪ জন, আইএসের হাতে ৯৫৬ জন, মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক জোটের হাতে ৯২৪ জন ও কুর্দি যোদ্ধাদের হাতে ২১৪ জন শিশু মারা গেছে। এ ছাড়া ৫ হাজার ৩৪ জন শিশু আটক রয়েছে। এদের মধ্যে আসাদ সরকারের হাতে ৩ হাজার ৬১৮ জন এবং কুর্দি বাহিনীর হাতে ৭২২ জন।
অন্তত ৩২৬ শিশুকে আইএসের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ধরে রাখা হয়েছে।
জাতিসংঘ বলছে, গৃহযুদ্ধের কারণে সিরিয়ায় অবরুদ্ধ হয়ে আছে চার লাখ মানুষ। তাদের কাছে কোনও ধরনের মানবিক সাহায্য পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের তথ্য অনুযায়ী, সিরিয়া যুদ্ধে ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিহত হয়েছেন চার লাখ ৮০ হাজারের বেশি মানুষ।