করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে নিজ দেশের নাগরিকদের চীনের উহান শহর থেকে ফিরিয়ে আনছে বিভিন্ন রাষ্ট্র। বিশেষ বিমানেরও ব্যবস্থা করেছেন অনেকে। ইতোমধ্যে দেশে ফিরে এসেছে জাপান ও যুক্তরাজ্যের নাগরিকরা। ফিরতে আনা শুরু হয়েছে মার্কিনিদেরও। তবে উহান থেকে ফিরিয়ে আনা হলেও অস্ট্রেলীয় নাগরিকদের েএখনও মূল ভূখন্ডে নেওয়া হয়নি। তাদের রাখা হয়েছে নিকটবর্তী ক্রিসমাস দ্বীপে।
চীনে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৩২ জনে দাঁড়িয়েছে। আর আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৯৭৪। হুবেই ছাড়াও রাজধানী বেইজিংসহ ২৯টি প্রদেশে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, নেপাল, ফ্রান্স, সৌদি আরব, কানাডাসহ অন্তত ১৬টি দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে।
যুক্তরাজ্য
হুবেই থেকে শত শত বিদেশি নাগরিকদের তাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ব্রিটিশ সরকার সেখান থেকে ৩০০ জন নাগরিককে দেশে ফেরাতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে কিছু ব্রিটিশ নাগরিক কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করে অভিযোগ তুলেছেন যে, তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
অস্ট্রেলিয়া
চীন থেকে নিজ নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে একটি দ্বীপে আলাদা করে রেখেছে অস্ট্রেলিয়া। হুবেই থেকে এনে তাদের ক্রিসমাস দ্বীপে রাখা হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার পরিকল্পনা, চীন থেকে ফেরত আসা তাদের ৬০০ নাগরিককে মূল ভূখণ্ডে নেওয়ার আগে সতর্কতা হিসেবে দুই সপ্তাহের জন্য ক্রিসমাস আইল্যান্ডে রাখবে। যা মূল ভূখণ্ড থেকে ২ হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, আমরা উহান ও হুবেইয়ে আটকে থাকা অস্ট্রেলীয়দের ফিরিয়ে আনবো।
নিউজিল্যান্ড
অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের পাশাপাশি নিজেদের ৫৩ জন নাগরিককে ফিরিয়ে আনতে ক্যানবেরার সাথে একযোগে কাজ করবে নিউজিল্যান্ড।
জাপান
এদিকে জাপানের ২০৬ জন নাগরিককে উহান থেকে টোকিও নিয়ে এসেছে দেশটির সরকার। বুধবার সকালে টোকিওর হানেডা বিমানবন্দরে পৌঁছায় তারা। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী তোশিমিতসু মোতেগি বলেন, উহানে ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে থাকা ৬৫০ জন জাপানি এখন ঘরে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেছেন, সরকার জাপানি নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে সবকিছু করবে।
যুক্তরাষ্ট্র
আগেই নিজেদের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইতোমধ্যে ২৪০ মার্কিনিকে নিয়ে উহান থেকে যাত্রা শুরু করেছে বিশেষ এক বিমান। চীনে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস জানায়, আলাস্কা হয়ে ওই বিমান ওন্টারিও, ক্যালিফোর্নিয়ায় যাবে। আলাস্কাতে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে।
সিএনএন এর তথ্য মতে, তাদেরকে কম পক্ষে দুই সপ্তাহ ধরে বিমান বন্দরের হ্যাঙ্গারে তৈরি করা বিশেষ ব্যবস্থায় থাকতে হবে।
দক্ষিণ কোরিয়া
দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে চারটি ফ্লাইটে তাদের ৭০০ নাগরিককে ফিরিয়ে নেয়া হবে। কিন্তু তাদেরকে আলাদাভাবে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি, কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, সংক্রমণের শিকার নাগরিকদের সব খরচ সরকার বহন করবে। এ পর্যন্ত, দেশটিতে চার জন আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ফ্রান্স
আলাদাভাবে, দুটি বিমান ইউরোপের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার কথা রয়েছে, এরমধ্যে প্রথম ফ্লাইটে ২৫০ জন ফরাসি নাগরিক চীন ছাড়বেন।
এছাড়া চীনের মূল ভূখণ্ডের সাথে আন্তঃসীমান্ত ভ্রমণ বন্ধের পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছে হংকং।