X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাজনৈতিক নেতা নন, একজন শিক্ষক হতে চান কানহাইয়া

বিদেশ ডেস্ক
০৫ মার্চ ২০১৬, ১৮:২৪আপডেট : ০৫ মার্চ ২০১৬, ১৮:২৪

‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভাপতি কানহাইয়া কুমার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মূলধারার রাজনীতিতে আসবার ইচ্ছে তার নেই। তিনি বরং একজন শিক্ষক হতে চান। তার শর্তাধীন জামিনের পর ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির অনেক নেতা দাবি করছেন, কানহাইয়া জামিনের শর্ত ভঙ্গ করছেন। তবে এ দাবি উড়িয়ে দিয়ে কানহাইয়া বলেছেন, সত্যের একমাত্র কেন্দ্র নাগপুর নয়। উল্লেখ্য, নাগপুরেই বিজেপির মতাদর্শিক পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান কার্যালয়। সেদিকে ইঙ্গিত করেই কানহাইয়া এমন মন্তব্য করেছেন। শুক্রবার পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও অধিকার রয়েছে তা কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।’ তিনি দাবি করেছেন, আন্দোলনে তারা জয়ী হতে চান না, তারা চান ঐক্য।
৯ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে আফজাল গুরুর সমর্থনে আয়োজিত কর্মসূচিতে দেশবিরোধী স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে ১২ ফেব্রুয়ারি কানহাইয়া কুমারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের ২২ দিন পর বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তি পেয়ে কানহাইয়া বলেন, ‘ভারত থেকে নয়, ভারতেই স্বাধীনতা চান তিনি।’ ক্যাম্পাসে ফিরেই সম্প্রতি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে ওঠা ‘আজাদি’ তথা স্বাধীনতার প্রশ্নটি সামনে আনেন এই ছাত্রনেতা। বলেন, ‘ক্ষুধা, দুর্নীতি, বৈষম্য এবং পশ্চাদপদতা থেকে স্বাধীনতা চাই।’ এছাড়া ওইদিন ও পরের দিন তিনি সংবাদ সম্মেলনে ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করেন।

তিহার জেল থেকে মুক্তি পেয়ে কানহাইয়া এখনও হলে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কারও সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। তার বেশির ভাগ সময় কাটছে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে  অথবা তাদের কাছ থেকে পালিয়ে থাকতে। মিডিয়ার কাছ থেকেই কানহাইয়া জানতে পেরেছেন পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনে বামফ্রন্টের পক্ষে প্রার্থী হচ্ছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কথাগুলো কানে এসেছে কিন্তু এখনও আমি কিছু না। এমনকি আমি প্রস্তুতও না। আমাকে পিএইচডি করতে হবে।’ পড়ালেখা শেষ করে একজন শিক্ষক হওয়ার আগ্রহ রয়েছে বলে জানান তিনি। পিটিআইকে তিনি বলেন, ‘ছাত্র হিসেবে আমি একজন সক্রিয়তাবাদী (অ্যাকটিভিস্ট) এবং পড়ালেখা শেষ করে শিক্ষক হিসেবে সক্রিয় হতে চাই। মূলধারার রাজনীতির প্রতি আমার কোনও আগ্রহ নেই। জনগণের কাছ থেকে যে সমর্থন আমি পেয়েছি, তাকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে চাই না আমি।’

জামিন আদেশ নিয়ে বিতর্কে তিনি চিন্তিত জানিয়ে বলেন, ‘আমি যেভাবে জীবন-যাপন করি আদালত তারই কথা বলেছেন। তাই আমি আদালতের নির্দেশনার পথেই আছি। বিজেপির নেতাদের চাইতে জামিনের আদেশটি আমি সতর্কতার সঙ্গে পড়েছি, কারণ এটা আমার সম্পর্কে। সত্যের একমাত্র কেন্দ্র নাগপুর নয়’।

নিজেকে খুব বড় ছাত্রনেতা মানতেও রাজি নন কানহাইয়া। ‘এটা মেনে নেওয়ার মতো অবস্থায় আমি নেই। আমি মনে করি না এর কাছাকাছি যেতে পেরেছি। আমি কোনও নেতা নই। আমি শিক্ষার্থীদের দ্বারা নির্বাচিত হয়েছি।’ 

কানহাইয়া জানান, শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের বৈঠক হবে। বৈঠকে চলমান আন্দোলনের করণীয় ঠিক হবে। তিনি বলেন, মামলার বিষয়ে আদালত রায় দেবেন। কিন্তু যা ঘটেছে, যারা করেছে এবং শিক্ষার্থীদের ওপর যে প্রভাব পড়েছে, এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদেরকেই পদক্ষেপ নিতে হবে।

শুধু বাম রাজনৈতিক দলের কারণেই জেএনইউ-র এ আন্দোলন গড়ে ওঠেনি বলে মনে করেন কানহাইয়া। তিনি বলেন, আম্বেদকারী, সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট এবং যারা ডানে না বামে যাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না, তারা সবাই এ আন্দোলনে শরিক হয়েছে। সরকারের বিরোধী কোনও নির্দিষ্ট একটি দল নয়।

এ সংগ্রাম শিগগিরই শেষ হয়ে যাবে বলেও মনে করেন না তিনি। বলেন, অনেকেই জেলে ছিল, অনেকে এখনও আছে, আরও অনেকে হয়ত যাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা জয়ী হতে চাই না, আমরা একত্রিত হতে চাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গায়ে যে ‘দেশবিরোধী’ তকমা লাগানো হয়েছে তা মুছে ফেলার অঙ্গীকার করেন কানহাইয়া। ক্যাম্পাসের যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ছিল তাও বজায় থাকবে বলে জানান তিনি। বলেন, কেউ আমাদের এ অধিকার কেড়ে নিতে পারবে না। জেএনইউ’র শিক্ষার্থীরা যা করে সেসবকে কোনওভাবেই দেশবিরোধী বলা যায় না।

কানহাইয়া বলেন, ‘জনগণের ট্যাক্সের টাকায় ভর্তুকিতেই চলছে জেএনইউ এবং জনগণের অর্থ সঠিক জায়গাতেই ব্যয় হচ্ছে। কিন্তু অনেক ভুল জায়গায় জনগণের অর্থ ব্যয় হচ্ছে, বড় বড় বাংলো, গাড়ি কেনা এবং বিমান যাতায়াতে অর্থ খরচ হচ্ছে। এসব অর্থ আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যয় হওয়া উচিত। তাহলে রেমো ও কানহাইয়ার মতো শিক্ষার্থীরা পিএইচডি করতে পারবে, জাতির জন্য লড়াই করতে পারবে। আমরা ও উমর, অনির্বাণ, আশুতোষ ও অনন্ত সবাই দরিদ্র পরিবার থেকে এসেছি।’

ছাত্র সংসদের সভাপতি হিসেবে নিজের দায়িত্বের কথা তুলে ধরেন কানহাইয়া। তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া জনগণের ট্যাক্সের টাকা বিফলে যাচ্ছে না, এটা মানুষকে বোঝানোই এখন কাজ। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, ফার্স্টপোস্ট

/এএ/বিএ/

সম্পর্কিত
ভারতে দ্বিতীয় দফায় ভোটপ্রচণ্ড গরমেও ভোটকেন্দ্রে ভোটার, ভোটদানের হার ৬১ শতাংশ
ভোট গণনা প্রক্রিয়ায় কোনও পরিবর্তন হবে না: ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট
কেমন চলছে ভারতের লোকসভার দ্বিতীয় দফার ভোট?
সর্বশেষ খবর
প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক
প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক
‘শো মাস্ট গো অন’
চিকিৎসা সুরক্ষা আইন জরুরি‘শো মাস্ট গো অন’
ছাদে আম পাড়তে গিয়ে নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু
ছাদে আম পাড়তে গিয়ে নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু
বেয়ারস্টো-শশাঙ্কে হেসেখেলে ২৬২ রান করে জিতলো পাঞ্জাব
বেয়ারস্টো-শশাঙ্কে হেসেখেলে ২৬২ রান করে জিতলো পাঞ্জাব
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!