বিদ্যায়তনিক জগতে রিপ্রেজেন্টেশন কিংবা পরিবেশনার রাজনীতি নিয়ে যারা কাজ করেন, তারা আমাদের শিখিয়েছেন বাস্তবতাকে আসলে কখনও বর্ণনা করা যায় না। বর্ণনা করলে সেটা আর বাস্তব থাকে না। হয়ে যায় পরিবেশনা কিংবা রিপ্রেজেন্টেশন। রিপ্রেজেন্টেশনের তাত্ত্বিকরা আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন, বাস্তবতা উপস্থাপন করার মধ্য দিয়ে আসলে নতুন বাস্তবতা নির্মাণ করা হয়। উপস্থাপিত বাস্তব তাই প্রকৃত বাস্তব নয়। উপস্থাপনকারীর নিজস্ব মূল্যবোধ-বিশ্বাস-দৃষ্টিভঙ্গি-শ্রেণীগত অবস্থানের সাপেক্ষেই বাস্তবতা নির্মিত নয়। চলচ্চিত্রের সঙ্গেও বাস্তবতার সম্পর্কও এমনই। চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়েও এর পরিচালক ও কুশলীরা নতুন বাস্তবতা নির্মাণ করেন। বাংলা ট্রিবিউনের এই প্রতিবেদন হলিউডের চলচ্চিত্র নিয়ে। সেখানকার চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে কিভাবে শ্বেতাঙ্গ-সামরিক আধিপত্যকে নিরঙ্কুশ করার আর মুসলমানদের নিয়ে নেতিবাচক অনুভূতির বাস্তবতা নির্মাণ করা হয়েছে তা তুলে ধরা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।
প্রকৃতপক্ষে এক শতকেরও বেশি সময় ধরে মার্কিন চলচ্চিত্রগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য আর সামরিক অগ্রগতি বজায় রাখার অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্যবহার করা হচ্ছে মুসলিম বিরোধিতা এবং তাদের নিয়ে ভীতি ছড়ানোর বাস্তবতা তৈরীর কাজে। চলচ্চিত্রগুলোতে বর্ণবাদ- শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য আর মুসলিম বিরোধিতার বীজ এতটাই সুনিপুণভাবে বপন করে রাখা হয়েছে যে সেগুলো কার্যত শনাক্ত করা কঠিন। এগুলো অনেকটা কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের মতো; অর্থাৎ মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হওয়া ছাড়া তা শনাক্ত হয় না।
১৮৯৬ সালে লুমিয়ার ভ্রাতৃদ্বয় প্রথমবারের মতো চলচ্চিত্র বানানোর পর থেকেই একটি কার্যকর বর্ণবাদী প্রচারণা যন্ত্রে পরিণত হয় মার্কিন চলচ্চিত্র। আর সে ধারা এখনও বিরাজমান আছে; যার ছোঁয়া দেখা গেছে এবারের অস্কার আয়োজনেও।