১৯৮২ সালে ফকল্যান্ড দ্বীপের মালিকানা নিয়ে আর্জেন্টিনা ও যুক্তরাজ্যের সংঘাত শুরুর পর প্রথমবারের মতো দ্বীপটি ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজের নজরদারিশূন্য হয়ে পড়েছে। রুশ নৌচলাচল পর্যবেক্ষণের জন্য অতিরিক্ত যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন, জনবল সংকট এবং রয়েল নেভির বিধ্বংসী জাহাজের ইঞ্জিন নষ্ট হওয়ার কারণে দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরে আর কোনও ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ নেই। এরইমধ্যে ফকল্যান্ডকে আর্জেন্টিনার অংশ বলে রায় দিয়েছে জাতিসংঘ। এমন অবস্থায় ফকল্যান্ড দ্বীপ এলাকায় যুদ্ধজাহাজের উপস্থিতি না থাকাকে অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে শিগগিরই সেখানে জাহাজ মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন ব্রিটিশ ছায়া প্রতিরক্ষামন্ত্রী এমিলি থর্নবেরি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেনডেন্টের নিজস্ব অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে এইসব তথ্য।
৩৪ বছর আগে আর্জেন্টিনার সঙ্গে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য ফকল্যান্ড দ্বীপ দখল করে যুক্তরাজ্য। এরপর থেকে দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরে স্থায়ীভাবে একটি বড় যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন রাখার সিদ্ধান্ত নেয় দ্য রয়েল নেভি। তবে ২০১৫ সালের নভেম্বরের পর থেকে প্রথমবারের মতো ফকল্যান্ড দ্বীপ এলাকায় কোনও ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজের উপস্থিতি দেখা যায়নি বলে জানিয়েছে ইনডিপেনডেন্ট।
এ ব্যাপারে এমিলি বলেন, ‘ফকল্যান্ড দ্বীপের সুরক্ষা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করার পরও এ ব্যাপারে সরকারের ব্যর্থতা অগ্রহণযোগ্য। ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে দ্বীপের বাসিন্দারা এ ধরনের সুরক্ষা আশা করতেই পারেন। শিগগিরই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে।’
সম্প্রতি দক্ষিণ আটলান্টিক সাগরে অবস্থিত ফকল্যান্ড দ্বীপকে আর্জেন্টিনার সমুদ্রসীমার অন্তর্বর্তী বলে রায় দেয় জাতিসংঘের মহীসোপানের (মহাদেশগুলির প্রসারিত পরিসীমা অঞ্চল) সীমা নির্ধারণকারী কমিশন। আর এর মধ্য দিয়ে আর্জেন্টিনার সমুদ্রসীমা আগের চেয়ে ৩৫ শতাংশ বেড়ে যায়। জাতিসংঘ কমিশনের সিদ্ধান্ত জানার পর ব্রিটিশ সরকারের তরফে বলা হয়,দ্বীপের অধিবাসীদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাদের ওপর আর্জেন্টাইন সার্বভৌমত্ব চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।
তবে দক্ষিণ আটলান্টিকে রয়েল নেভির ভূমিকা এবং যুদ্ধজাহাজের উপস্থিতি না থাকার এ বিতর্ক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনকে লজ্জায় ফেলেছে বলে উল্লেখ করেছে ইনডিপেনডেন্ট। কেননা, ফকল্যান্ড দ্বীপকে আর্জেন্টিনার সমুদ্র এলাকার অঙম উল্লেখ করে জাতিসংঘ কমিশনের রায়ের পর মঙ্গলবার ক্যামেরন দ্বীপের অধিবাসীদের অধিকার রক্ষার জন্য লড়াইয়ের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
এ ঘটনাটি ব্রিটিশ মন্ত্রীদেরও লজ্জায় ফেলেছে। কারণ জনবল সংকট ও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে রয়েল নেভির বেশ কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ বন্দরে পড়ে থাকার খবর খুব একটা স্বস্তিদায়ক নয়। সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট
/এফইউ/বিএ/