X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের অপেক্ষায় 'প্রেসিডেন্টের বস'

বিদেশ ডেস্ক
০৬ এপ্রিল ২০১৬, ১০:৩৮আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০১৬, ১২:৪৩

প্রধানমন্ত্রীর সমমর্যাদার রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা পদে আসীন হওয়ার প্রক্রিয়ায় আরেক ধাপ এগিয়ে গেলেন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি। তার এ পদে দায়িত্ব গ্রহণ এখন কেবল প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের অপেক্ষায়। মঙ্গলবার মিয়ানমারের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষও সু চির জন্য রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টার পদ সৃষ্টির করতে প্রস্তাবিত বিলটি পাস করেছে। পার্লামেন্টে এক-চতুর্থাংশ আসনের অধিকারী সেনা সদস্যদের অধিবেশন বয়কটের মধ্যেই নিম্নকক্ষে বিলটি পাস হয়। এ বিল অসাংবিধানিক, এমন অভিযোগ তুলে সেনাসদস্যরা পার্লামেন্ট বয়কট করেন। এর আগে পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষে বিলটি পাস হয়েছিল। সু চির রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা পদে আসীন হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। কেননা, প্রেসিডেন্ট থিন কিয়াও একসময় সু চির ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। সাংবিধানিক বাধার কারণে প্রেসিডেন্ট না হতে পারলেও এ পদের আওতায় সু চি প্রেসিডেন্টের ঊর্ধ্বে থাকার ক্ষমতা পাবেন। দলীয় নেতাদের কেউ কেউ এ পদটিকে  ‘প্রেসিডেন্ট’স বস’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

গত ৩০ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করা প্রেসিডেন্ট থিন কিয়াও এবং এনএলডি সরকারের কার্যক্রম ১ এপ্রিল থেকে শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু আকস্মিকভাবে ৩১ মার্চ পার্লামেন্টে সু চি’কে রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা করার প্রস্তাব করা হয়। বিলটি সংবিধানবিরোধী, পার্লামেন্টের সেনাসমর্থিত এমপিরা আপত্তি তুললেও সংখ্যাগরিষ্ঠ এনএলডি’র এমপিরা বিনা বাধায় সেটি উভয় কক্ষে পাস করিয়ে নেন। এখন প্রেসিডেন্ট কিয়াওয়ের স্বাক্ষর পেলেই সেটি আইনে পরিণত হবে। আর এতে সু চি’কে কোনও রকম বাধার মুখে পড়তে হবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

অং সান সু চি

দুই ছেলে ও প্রয়াত স্বামীর বিদেশি নাগরিকত্বের কারণে সংবিধান অনুসারে প্রেসিডেন্ট হতে না পারা সু চি তার সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু এবং স্কুলজীবনের সহপাঠী কিয়াওকে প্রেসিডেন্ট পদে বসান। সু চি’র প্রতি কিয়াওয়ের প্রশ্নাতীত আনুগত্য সত্ত্বেও সরকার কাঠামোয় সু চিকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানোর স্বার্থে এনএলডি ‘রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা’র পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করেছে। পার্লামেন্টে এনএলডি’র নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে কোনও রকম পরিবর্তন ছাড়াই বিলটি পার্লামেন্টে পাস হয়।

এর আগে মিয়ানমারের শিক্ষা এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়া কথা ছিল সু চি’র। পরে সেটা পাল্টে তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর সমমর্যাদার উপদেষ্টার দায়িত্বেই স্থির হচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে বিজয় লাভ করে সু চি’র দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি)। প্রেসিডেন্ট হতে সু চি’র ক্ষেত্রে সাংবিধানিক বিধিনিষেধ থাকায় তার সহযোগী থিন কিয়াওকে প্রেসিডেন্ট মনোনীত করা হয়।

মিয়ানমারের সংবিধান অনুযায়ী কোনও বিদেশিকে বিয়ে করলে বা সন্তানদের কেউ অন্য দেশের নাগরিক হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি দেশটির প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। সু চি’র স্বামী মাইকেল অ্যারিস ছিলেন একজন ব্রিটিশ শিক্ষাবিদ। তার দুই সন্তানও ব্রিটিশ নাগরিক। আর তাই নির্বাচনের আগেই ‘প্রেসিডেন্টের ঊর্ধ্বে’ থেকে সরকার পরিচালনার অঙ্গীকার করেন সু চি। আর থিন কিয়াওকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করাকে সু চি’র সে শপথের বাস্তবায়ন বলেই মনে করা হয়।

প্রেসিডেন্ট থিন কিয়াওয়ের সঙ্গে সু চি

রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টার পদটি সু চি’কে সরকারের সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কাজ করার ক্ষমতা দেবে। তিনি নিজের খুশিমতো যে কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন। অন্যান্য দেশে প্রধানমন্ত্রীরা যে ধরনের দায়িত্ব পালন করেন, অনেকটা সেভাবেই ‘রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা’ পদটি তৈরি করা হয়েছে।

১৯৬২ সাল থেকে মিয়ানমারের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। এ সময়ের মধ্যে জান্তা সরকারের রোষানলে ১৫ বছর সু চি’কে গৃহবন্দী অবস্থায় কাটাতে হয়েছে। গত ২০ বছর ধরে মিয়ানমারে সু চি’র দলকে সরকারের প্রতিপক্ষ মনে করা হতো। এ সময়ে দলটির বহু নেতাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে ২৫ বছর পর প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে সু চি’র দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও দেশটির পার্লামেন্টে সেনাবাহিনীর প্রভাব থাকছে। কারণ তাদের জন্য ১৬৬টি আসন সংরক্ষিত রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকছে সেনাবাহিনী। সূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি।

/এমপি/এফইউ/

সম্পর্কিত
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট শুরু
চীনে আমেরিকার কোম্পানিগুলোর প্রতি ন্যায্য আচরণের আহ্বান ব্লিঙ্কেনের
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
সর্বশেষ খবর
ডুবন্ত শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেলো আরেক শিশুরও
ডুবন্ত শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেলো আরেক শিশুরও
‘ডে আফটার টুমরো’ নয়, টুডে
‘ডে আফটার টুমরো’ নয়, টুডে
জিম্মি মুক্তির বিষয়ে আন্তরিক হলেও গাজায় আগে যুদ্ধবিরতি চায় হামাস
জিম্মি মুক্তির বিষয়ে আন্তরিক হলেও গাজায় আগে যুদ্ধবিরতি চায় হামাস
হাসিনা-তাভিসিন আন্তরিক বৈঠক, থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ দলিল স্বাক্ষর
হাসিনা-তাভিসিন আন্তরিক বৈঠক, থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ দলিল স্বাক্ষর
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ