ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরিয়া জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে তার দেশে অনুভূত হওয়া শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৪৬ জনে দাঁড়িয়েছে। শনিবার টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ‘দেশ এখন সংকটে রয়েছে। কষ্টের দিন পার করছে।’ ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আটদিনের রাষ্ট্রীয় শোকও ঘোষণা করেছেন রাফায়েল।
গত ১৬ এপ্রিল ইকুয়েডরের উপকূলে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ইকুয়েডরের মুইজন থেকে ২৩ কি.মি. দক্ষিণ-পূর্বে। স্থানীয় সময় রাত আটটার দিকে পরপর দুটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। প্রথম ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৪.৮। তবে দ্বিতীয় ভূমিকম্পটি ছিল খুবই শক্তিশালী। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭.৮ এবং গভীরতা ১৯ কিলোমিটার। এরপর ৭শটিরও বেশি আফটার শক অনুভূত হয়। আরও কয়েক সপ্তাহ ধরে এমন আফটার শক অনুভূত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শনিবার রাফায়েল কোরিয়া জানান, ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ১৩০ জন। ভূমিকম্পে ৭ হাজারটি ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ২৬ হাজারেরও বেশি মানুষ অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে দিন কাটাচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে লুটপাট শুরু হওয়ায় সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর ১৪ হাজার সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে। ইকুয়েডরের সরকার ও বিদেশি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে খাবার, পানি ও ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে ভূমিকম্পে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া ও রাস্তাঘাটের নাজুক অবস্থার কারণে কোনও কোনও এলাকায় ত্রাণ পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে বলে স্বীকার করেন রাফায়েল।
ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট জানান, ভূমিকম্পের কারণে তার দেশকে ২ বিলিয়ন-৩ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণের আর্থিক ক্ষতির শিকার হতে হয়েছে।
ইকুয়েডরে উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে এমন ২৭টি দেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান রাফায়েল। সূত্র: বিবিসি, গার্ডিয়ান
/এফইউ/