নান্দনিক স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন তুরস্কের ইস্তাম্বুল নগরীতে অবস্থিত নীল মসজিদ। এর অফিসিয়াল নাম ‘সুলতান আহমেদ মসজিদ’ হলেও চমৎকার নীল গম্বুজের সুবাদে লোকমুখে এটি ‘ব্লু মস্ক’ বা ‘নীল মসজিদ’ নামে অধিক পরিচিত। মসজিদের দেয়ালেও প্রাধান্য পেয়েছে নীল রঙের টাইলস। ১৯৩৪ সালে হাজিয়া সোফিয়াকে মিউজিয়ামে রূপান্তরিত করার পর এটি ইস্তাম্বুলের প্রধান মসজিদে পরিণত হয়। তুরস্কে বেড়ানোর ক্ষেত্রে অন্যতম পর্যটন গন্তব্য এই সুলতান আহমেদ মসজিদ।
ইস্তাম্বুলে বসফরাস প্রণালির তীর ঘেঁষে মুসলিম ঐতিহ্যের জানান দিচ্ছে সপ্তদশ শতকের এই সৌন্দর্যমণ্ডিত মসজিদ। চমৎকার স্থাপত্যশৈলীর সুবাদে উসমানীয় বা অটোমান সুলতানদের নির্মিত ইবাদতের গৃহগুলোর মধ্যে এই মসজিদকে ব্যতিক্রম ধরা হয়। এর দৈর্ঘ্য ২৪০ ফুট। প্রস্থ ২১৩ ফুট। এখানে ১০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।
উসমানীয় সুলতান প্রথম আহমেদের শাসনামলে ১৬০৯ থেকে ১৬১৬ সালের মধ্যে নির্মিত হয় মসজিদটি। তার নামানুসারেই এর নামকরণ হয়। তার কবরও এই মসজিদে অবস্থিত। ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের ধর্মগুরু পোপ বেনেডিক্ট ২০০৬ সালে তুরস্ক সফরকালে মসজিদটি ঘুরে দেখেছেন। জানার চেষ্টা করেছেন এর সমৃদ্ধ ইতিহাস।
নীল মসজিদ কমপ্লেক্সে রয়েছে মাদ্রাসা, এতিমখানা ও হলরুম। দেয়ালঘেরা সুপরিসর আঙিনায় রয়েছে কয়েকটি ফোয়ারা। মসজিদ চত্বরে ব্যবহৃত মার্বেল পাথরগুলো আনা হয়েছিল মর্মরা সাগরের একটি দ্বীপ থেকে।
ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য স্থাপনাভুক্ত হাজিয়া সোফিয়া জাদুঘরের সামনেই ছয় মিনারের এই মসজিদ। অপরাপর মসজিদে সাধারণত এক, দুই বা চারটি মিনার থাকে। নীল মসজিদের মিনারগুলোর ওপর সোনার প্রলেপযুক্ত তামার তৈরি ইস্পাত ব্যবহার করা হয়েছে। এর নয়টি গম্বুজের মধ্যে একটি বেশ বড়, অন্যগুলো আকারে অপেক্ষাকৃত ছোট।
* ভিডিওতে দেখুন নীল মসজিদ: