ভ্রমণের বেলায় অনেকের কাছে বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা ক্লান্তিকর মনে হয়। যতটা সম্ভব তাড়াতাড়ি নিরাপত্তাজিনিত কাজগুলো সম্পন্ন করতে চায় প্রত্যেকেই। চেক-ইন ও সিকিউরিটি চেকিং প্রক্রিয়া মাঝে মধ্যে জটিল লাগে। তবে বিচক্ষণতার সঙ্গে একটু বুদ্ধি খাটালে দ্রুত এসব ঝক্কির কাজ সেরে নেওয়া যেতে পারে। বিমানবন্দরে এসব টিপস কাজে লাগিয়ে দ্রুত চেক-ইন ও সিকিউরিটি চেকিং সম্পন্ন করা যায়।
বাঁ-দিকে যান
বিশেষজ্ঞদের অভিমত, বিমানবন্দরের সিকিউরিটি এলাকায় ঢোকার পর বেশিরভাগ যাত্রী ডান দিকে যান। তাই তারা বাঁ-দিকে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। ডান দিকে যাওয়ার প্রবণতা বেশি বলে স্বাভাবিকভাবে বাঁ-দিকে গেলে বেশিক্ষণ লাইনে দাঁড়াতে হয় না। এতে করে সময়ও বাঁচে।
পোশাক নিয়ে ভাবুন
ভ্রমণের সময় স্বাচ্ছন্দ্যকে প্রাধান্য দেওয়া দরকার। বিশেষ করে দীর্ঘ যাত্রার ক্ষেত্রে জুতসই পোশাক পরলে বিমানবন্দরে আরামদায়কভাবে ঘোরাফেরা করা যায়। নেটফ্লাইটস ডটকমের বিপণন পরিচালক পল হপকিনসনের পরামর্শ, বুদ্ধিমানের মতো পোশাক বেছে নিলে ভালো। একসঙ্গে অনেক পোশাক আর ভারী বুট ও জুতা এড়িয়ে চলুন। কারণ সিকিউরিটি চেকিংয়ে সবই খুলে রেখে ও পর আবার পরতে হয়। সেক্ষেত্রে সময় বেশি লাগে।
ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসে পর্যাপ্ত চার্জ রাখুন
ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের সময় মোবাইল ফোনের ব্যাটারি শেষ হয়ে যাওয়া খুব বিরক্তিকর। তাই ভ্রমণের আগে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসে পর্যাপ্ত চার্জ দিয়ে নেওয়া জরুরি। হিথ্রো বিমানবন্দরের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, সিকিউরিটি থেকে ডিভাইস চালু করতে বলার পর ব্যর্থ হলে সেটি নিয়ে বিমানে ওঠা যায় না। তাই অনাকাঙ্ক্ষিত বিলম্ব এড়াতে ডিভাইসে চার্জ আছে কিনা সেদিকে সজাগ থাকুন।
লাগেজের কথা মনে রাখুন
একইরকম দেখতে অনেক স্যুটকেস চোখে পড়া অস্বাভাবিক নয়। এ কারণে ট্রানজিটে লাগেজ হারালে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এক্ষেত্রে সহজ টিপস হলো, চেক-ইনের আগে লাগেজের ছবি তুলে রাখুন। ব্যাগ হারানোর মতো ঘটনার সম্মুখীন হলে তা খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে বিমানবন্দর কর্মীদের জন্য সহায়ক হবে ওই ছবি। ইংরেজি ভাষাভাষির লোক না থাকলেও এই পন্থা কাজে আসবে।
যথাযথ কাগজপত্র সঙ্গে রাখুন
সিকিউরিটি চেকিংয়ে পাসপোর্ট নয়, প্রয়োজন বোর্ডিং পাস। তাই শেষ মুহূর্তে তালগোল পাকিয়ে ফেলার আগে স্ক্যানের প্রয়োজনীয়তার জন্য যাত্রীকে এই কাগজ হাতে রাখতে হবে।
লিকুইড টয়লেট্রিজ আলাদা ব্যাগে রাখুন
তরল পদার্থের কারণে সিকিউরিটি চেকিংয়ে হঠাৎ লাগেজ পুনরায় গোছানোর ঝামেলায় পড়েন অনেকে। তাই লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের পরামর্শ— ক্রিম, জেল, পেস্ট, স্প্রে ও অ্যারোসলসহ সব ধরনের লিকুইড টয়লেট্রিজ একটি স্বচ্ছ প্লাস্টিক ব্যাগে রাখুন। লাগেজ থেকে আলাদাভাবে এক্স-রে করার সুবিধার্থে এই পন্থা যাত্রীদের সময় বাঁচাবে। সব পণ্যই হতে ১০০ মিলিলিটার বা ১০০ গ্রামের কন্টেইনারের মধ্যে। এর মধ্যে ইলেক্ট্রনিক সিগারেটও যুক্ত।
আলাদা ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য
ল্যাপটপ ও আইপ্যাডসহ বড় আকারের ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য পৃথকভাবে এক্স-রে করার জন্য হাতের ব্যাগের বাইরে রাখুন।
ঝামেলামুক্ত সিকিউরিটি চেকিংয়ের টিপস
* দেশের বাইরে সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে গেলে নিজেদের নামের শেষাংশে পার্থক্য থাকলে সম্পর্কের প্রমাণ দেওয়ার মতো যথাযথ কাগজপত্র রাখুন।
* ভ্রমণের দিন থেকে কমপক্ষে ছয় মাসের মেয়াদ রয়েছে এমন বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে।
* ডিউটি-ফ্রি সুবিধায় কত পণ্য আনা-নেওয়া করতে পারবেন তা কেনার আগেই শুল্ক বিভাগ থেকে জেনে নিন।
* মোবাইল ফোনে নির্দিষ্ট এয়ারলাইন ও ও বিমানবন্দরের অ্যাপ ডাউনলোড করুন। এর মাধ্যমে ভ্রমণকালে সবশেষ তথ্য পাওয়া যাবে।
* একাধিকবার ব্যবহারযোগ্য বোতল সঙ্গে রাখুন। এরপর প্রয়োজনমাফিক তাতে পানি রাখুন। তা না হলে সিকিউরিটি চেকিং পুরো বোতলটাই ফেলে দিতে হবে।
* অটিজমে আক্রান্ত শিশু সঙ্গে থাকলে দ্রুত সিকিউরিটি চেকিংয়ের সুবিধা দিয়ে থাকে বিশ্বের কিছু বিমানবন্দর।
* বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সুব্যবহার করুন ও তাদের বোঝার মানসিকতা রাখুন। কারণ দিনভর প্রচুর ব্যস্ত থাকতে হয় তাদের।
সূত্র: সানডে এক্সপ্রেস