X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৫ বৈশাখ ১৪৩১

জাহাজে ১৪ দিন ১৩ রাতে কলকাতা থেকে সুন্দরবন ছুঁয়ে ঢাকায়

জার্নি ডেস্ক
০৮ নভেম্বর ২০১৮, ১৮:০৬আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০১৮, ১৮:০৬

জাহাজে ১৪ দিন ১৩ রাতে কলকাতা থেকে সুন্দরবন ছুঁয়ে ঢাকায় ইউরোপের দানিউব বা রাইন নদীর বুকে জাহাজ ভ্রমণ সারা দুনিয়ার পর্যটকদের আকর্ষণ করে। দুই বাংলার অপূর্ব নদীপথেও ভ্রমণবিলাসীদের জন্য তৈরি হয়েছে সেই সুযোগ। কলকাতা থেকে সুন্দরবনের নদী-নালা বেয়ে ঢাকা অভিমুখী বিলাসবহুল ক্রুজ ভারত ও বাংলাদেশের পর্যটনে যোগ করেছে নতুনমাত্রা।

ভারতের বেশকিছু ক্রুজ অপারেটর মনে করছে, নদীমাতৃক বাংলাদেশে রিভার ক্রুজের পর্যটন সম্ভাবনা আছে। সেই সূত্রে এখন চলাচল করছে কলকাতার লাক্সারি ক্রুজ অপারেটর ‘ভিভাডা ক্রুজ’। কলকাতা থেকে ঢাকায় দুই সপ্তাহের এই ভ্রমণ ধীরে ধীরে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে পর্যটকদের কাছে। প্রমোদতরীতে ভ্রমণের সুবাদে তারা উপভোগ করছেন দুই বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নদী, নদীমাতৃক জীবন, গ্রামবাংলা, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন ও বাঘের অভয়ারণ্য সুন্দরবন, বন্যপ্রাণী, বনভূমি, ইতিহাস, ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য। ভাগ্যে থাকলে মিলে যেতে পারে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সাক্ষাৎ! ক্রুজ অপারেটরদের আশা, গ্রামবাংলার শান্ত সুন্দর জীবনের অপূর্ব দৃশ্যপট মন কাড়ছে পর্যটকদের।

কলকাতা থেকে শুরু করে ধীরলয়ে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের গা ঘেঁষে বরিশাল হয়ে চাঁদপুরে ইলিশের জন্য থেমে ১৩ দিনের মাথায় সোনারগাঁও ছুঁয়ে ঢাকায় নোঙর ফেলছে এই প্রমোদতরী। চলুন দেখি ভিভাডা ক্রুজের রুট।

জাহাজে ১৪ দিন ১৩ রাতে কলকাতা থেকে সুন্দরবন ছুঁয়ে ঢাকায় প্রথম দিন
কলকাতায় ভিভাডা জাহাজ-ঘাটায় চেক-ইন। হাতে সময় থাকলে নিজ খরচে এই শহরের অলিগলিতে বেড়ানো যাবে।

দ্বিতীয় দিন
দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির ভ্রমণ। কলকাতার ৪০ কিলোমিটার উত্তরে ইউরোপীয় পাঁচটি বাণিজ্যস্থল রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে দুটি কিংবা সবকটিতে ঘুরে আসতে পারেন সময় থাকলে। এছাড়া ব্রিটিশ গভর্নরের বাসস্থান ব্যারাকপুর, ডেনিশ উপনিবেশ শ্রীরামপুর, ফরাসি উপনিবেশ চিনসুরা, পর্তুগিজ শাসনামলের ডাচ বাণিজ্য বন্দর।

তৃতীয় দিন
কালনায় টেরাকোটা মন্দির ও শান্তিপুরে তাঁতিদের গ্রাম ঘুরে দেখা। বর্ধমানের মহারাজা তার শাসনামলে বেশ কয়েকটি দর্শনীয় মন্দির গড়ে তোলেন। এর মধ্যে রাজবাড়ির আদলে মূল টেরাকোটা মন্দিরটি ১৮০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।

চতুর্থ দিন
কলকাতায় পায়ে হেঁটে কিংবা গাড়িতে চড়ে ঘোরা। সঙ্গে থাকবেন একজন গল্পকথক।

পঞ্চম দিন
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে জীববৈচিত্র্য উপভোগ করা, সুন্দরবন গ্রামে ঢুকে কৃষি জমি, মাছভর্তি পুকুর, বাড়িঘর ও বাজার আর ইউনেস্কোর একটি বিশ্ব ঐতিহ্য ঘুরে দেখা।

ষষ্ঠ দিন
সুন্দরবনের হেমনগরে ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা। হেমনগরে বাংলাদেশ কাস্টমস থেকে আংটিহারায় ঢুকতে লাগবে চার ঘণ্টা।

সপ্তম দিন
মংলা বন্দরের দিকে বাঘের অভয়ারণ্যের বাংলাদেশ অংশ ঘুরে দেখা। ঘন বনাঞ্চল ও প্রশস্ত নদী আর খালের সৌন্দর্য উপভোগ করা। হাতে সময় থাকলে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদে যাওয়া।

অষ্টম দিন
সুন্দরবনে ৮৪ প্রজাতির ম্যানগ্রোভ ও পরিযায়ীসহ ১৪০ রকমের পাখি আছে। এদিন ম্যানগ্রোভ বনে পায়ে হেঁটে ঘুরতে হবে। এজন্য পাড়ি দিতে হবে কাদা। সঙ্গে থাকবেন সশস্ত্র রক্ষী। সুনসান নীরব পরিবেশে পাখি, সরীসৃপ প্রাণী ও বিভিন্ন পশু চোখে পড়বে। বুনো জীবন দর্শনে ছোট নদী-নালা পারাপারে চড়তে হবে নৌকায়। সবশেষে সৈকতে বিশ্রাম।

নবম দিন
সুন্দরবন থেকে জাহাজ যেতে থাকবে বরিশালের দিকে। পথিমধ্যে হরিণঘাটায় বাঘের অভয়ারণ্যে কিছুক্ষণ ঘুরে দেখা হবে।

জাহাজে ১৪ দিন ১৩ রাতে কলকাতা থেকে সুন্দরবন ছুঁয়ে ঢাকায় দশম দিন
আটঘর কুরিয়ানার কাছে স্বরূপকাঠির খালবিল ধরে এগোবে জাহাজ। পেয়ারা, ফলমূল, সবজি ও ফুলের জন্য এই জেলার আলাদা সুনাম আছে। প্রচুর ভেলাও দেখা যায় সেখানে।

একাদশ দিন
এদিন ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরে পৌঁছাবে জাহাজ। নাশতার পর মাছের আড়ত ঘুরে সরাসরি বেচাকেনা দেখবেন পর্যটকরা।

জাহাজে ১৪ দিন ১৩ রাতে কলকাতা থেকে সুন্দরবন ছুঁয়ে ঢাকায় দ্বাদশ দিন
অবিভক্ত বাংলার প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁওয়ে যাবে জাহাজ। সেখানে ঊনিশ শতকের শেষের দিকে ব্রিটিশ শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত পানাম সিটি ঘুরে দেখা হবে।

ত্রয়োদশ দিন
জাহাজ থেকে চেক-আউট করতে হবে পর্যটকদের। এরপর তারা চলে যাবেন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার হোটেলে। ষোড়শ শতকের শেষ ভাগে ভারতীয় উপমহাদেশে সবচেয়ে সমৃদ্ধ ও বৃহৎ শহর ছিল এটি। সপ্তদশ ও অষ্টদশ শতকে ঢাকা হয়ে ওঠে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কেন্দ্র। এই শহরে আছে সাজানো বাগান, স্মৃতিস্তম্ভ, মসজিদ, মন্দির, গির্জা, বাজার। ঢাকায় ঘুরে বেড়ানোর জন্য গল্পকথকের সহায়তা নিতে পারেন ভ্রমণপিপাসুরা।

জাহাজে ১৪ দিন ১৩ রাতে কলকাতা থেকে সুন্দরবন ছুঁয়ে ঢাকায় চতুর্দশ দিন
ঢাকা থেকে চেক-আউট। এরপর সোনারগাঁও, চাঁদপুর, স্বরূপকাঠি, বরিশাল, হরিণঘাটা, সুন্দরবন, মংলা বন্দর, বাগেরহাট, আংটিহারা, হেমনগর, সুন্দরবন গ্রাম, কলকাতা, টেরাকোটা মন্দির ও শান্তিপুর, দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির হয়ে কলকাতায় জাহাজ-ঘাটায় গিয়ে চেক-আউট করবেন পর্যটকরা।

/জেএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
মানব ও সুপারি পাচারের অভিযোগে ভারতে শুল্ক কর্মকর্তা গ্রেফতার 
মানব ও সুপারি পাচারের অভিযোগে ভারতে শুল্ক কর্মকর্তা গ্রেফতার 
ভুয়া পরিচয়ে ভারতে বসবাস বাংলাদেশির, ৪ বছরের কারাদণ্ড
ভুয়া পরিচয়ে ভারতে বসবাস বাংলাদেশির, ৪ বছরের কারাদণ্ড
৫ কোটি টাকা নিয়ে ব্যবস্থাপক নিখোঁজ, পূবালী ব্যাংকের ৮ কর্মকর্তাকে বদলি
৫ কোটি টাকা নিয়ে ব্যবস্থাপক নিখোঁজ, পূবালী ব্যাংকের ৮ কর্মকর্তাকে বদলি
সর্বাধিক পঠিত
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন