ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল আয়তনের বাংলাদেশের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্য, বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি, দৃষ্টিনন্দন জীবনাচার মন কাড়ে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, ঐতিহাসিক মসজিদ ও মিনার, নদী, পাহাড়, অরণ্যসহ হাজারও সুন্দরের রেশ ছড়িয়ে আছে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত।
দেশের আট বিভাগে (ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ) ৬৪ জেলা। প্রতিটি জেলার নামকরণের সঙ্গে রয়েছে ঐতিহ্যপূর্ণ ইতিহাস। এসব ঘটনা ভ্রমণপিপাসু উৎসুক মনকে আকর্ষণ করে। তাই বাংলা ট্রিবিউন জার্নিতে ধারাবাহিকভাবে জানানো হচ্ছে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার নামকরণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।
দিনাজপুর জেলা
সাহিত্য ও সংস্কৃতির ঐতিহ্যমণ্ডিত দিনাজপুরের ইতিহাস অত্যন্ত প্রাচীন ও সমৃদ্ধ। বাংলাদেশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের সূচনায় সৃষ্ট আদি জেলা শহরগুলোর মধ্যে দিনাজপুর অন্যতম। ইংরেজ সেনারা পলাশী যুদ্ধের আট বছর পর ১৭৬৫ সালে এই অঞ্চল জয় করে। ফলে নবাবি শাসনের অবসানের সঙ্গে পতন হয় সাবেক রাজধানী ঘোড়াঘাট নগরের। তারপর থেকে গড়ে উঠতে শুরু করে দিনাজপুর শহর।
লোকশ্রুতি অনুযায়ী, জনৈক দিনাজ অথবা দিনারাজ দিনাজপুর রাজপরিবারের প্রতিষ্ঠাতা। তার নামানুসারেই রাজবাড়িতে অবস্থিত মৌজার নাম হয় ‘দিনাজপুর’। পরবর্তী সময়ে ব্রিটিশ শাসকরা ঘোড়াঘাট সরকার বাতিল করে নতুন জেলা গঠন করে ও রাজার সম্মানে জেলার নাম রাখে ‘দিনাজপুর’।
দিনাজপুর জেলা লিচুর জন্য বিখ্যাত। এখানে দেশের বিভিন্ন জাতের সেরা লিচু উৎপন্ন হয়। দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে স্বপ্নপুরী, দিনাজপুরের মহারাজদের অন্যতম কীর্তি রামসাগর দীঘি, অষ্টাদশ শতাব্দীর কান্তনগর মন্দির, সীতাকোট বিহার, সিংড়া ফরেস্ট, নয়াবাদ মসজিদ, শুরা মসজিদ ইত্যা।