ঘুরে বেড়ানোর সময় দাঁতে দাঁত লেগে যাওয়া ঠাণ্ডা উপভোগ করেন অনেক পর্যটক। তাদের জন্য জুতসই আয়োজন হতে পারে ‘হারবিন ইন্টারন্যাশনাল আইস অ্যা স্নো স্কাল্পচার ফেস্টিভ্যাল’। নাম দেখেই বোঝা যাচ্ছে, বরফ আর তুষারের ভাস্কর্য নিয়ে সাজানো এই আয়োজন।
চীনের উত্তরে হেইলংজিয়াঙ প্রদেশে বিশ্বের বৃহত্তম তুষার ও বরফের এই উৎসব প্রতি বছর ৫ জানুয়ারি শুরু হয়। তবে উদ্বোধনের আগেই কিছু আকর্ষণ দেখার সুযোগ পান দর্শনার্থীরা। ডিসেম্বরে চালু হয়ে গেছে হারবিন আইস অ্যান্ড স্নো ওয়ার্ল্ড। মাসব্যাপী এই আয়োজনে বরফ আর তুষার নিয়ে প্রচুর চোখধাঁধানো ইনস্টলেশন দেখা যায়। এবারও উৎসব চলবে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
এ বছর ৬ লাখ বর্গমিটারেরও বেশি জায়গায় হারবিন আইস অ্যান্ড স্নো ওয়ার্ল্ডের ব্যাপ্তি। ১ লাখ ১০ হাজার ঘন মিটার বরফ ও ১ লাখ ২০ হাজার ঘন মিটার তুষার দিয়ে বানানো শতাধিক ভাস্কর্য রাখা হয়েছে এখানে। হেইলংজিয়াঙের কাছের সংহুয়া নদী থেকে তুলে আনা বরফখণ্ড দিয়ে বানানো হয়েছে এসব শিল্পকর্ম।
উৎসবের বিভিন্ন আকর্ষণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিশাল আলোকিত বরফ দুর্গ ও সাড়ে চার হাজার ঘন মিটারেরও বেশি তুষার দিয়ে সাজানো দর্শনীয় বুদ্ধ মূর্তি। এছাড়া আছে থ্রিডি লাইট শো, ৩৪০ মিটার দীর্ঘ সুমেরুপ্রভার থিমে বরফের স্লাইড ও ২৪ মিটার দীর্ঘ বরফের ট্রেন।
এসব ভাস্কর্য ও শিল্পকর্ম নির্মাণে কাজ করেছেন ১২টি দেশের ভাষ্কর। বার্ষিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জায়গা করে নিয়েছেন তারা। হারবিন আইস অ্যান্ড স্নো ওয়ার্ল্ডের প্রবেশমূল্য ৪৮ মার্কিন ডলার (চার হাজার টাকা)।
ফেব্রুয়ারির শেষ দিন পর্যন্ত হেইলংজিয়াঙ শহর জুড়ে বিনামূল্যে চিত্তবিনোদনের আরও অনেক সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম নদীতে গড়ে তোলা তুষারে গঠিত ২ হাজার ১৯টি (২০১৯) মানবমূর্তি দর্শন। এছাড়া ঝাওলিন পার্কে বরফের লণ্ঠন প্রদর্শনী ও সংহুয়া নদীর ওপর আইস স্লেডিং অন্যতম।
২০১৭ সালে উৎসবটিতে দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৮০ লাখ। প্রতিবারের মতো অসংখ্য মানুষ উৎসবে ভিড় করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
হেইলংজিয়াঙের ঐতিহ্যবাহী বরফের লণ্ঠনে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৮৫ সাল থেকে উদযাপন করা হচ্ছে হারবিন ইন্টারন্যাশনাল আইস অ্যা স্নো স্কাল্পচার ফেস্টিভ্যাল। লণ্ঠনগুলো মূলত খোদাই করা বরফে মোমবাতির আলো। এবার এই উৎসবের ৩৫তম আসর।
হারবিন ইন্টারন্যাশনাল আইস অ্যা স্নো স্কাল্পচার ফেস্টিভ্যালকে বিবেচনা করা হয় বিশ্বের সেরা শীত উৎসবগুলোর মধ্যে অন্যতম। এ তালিকায় বিখ্যাত তিনটি আয়োজন হলো জাপানের সাপোরো স্নো ফেস্টিভ্যাল, কানাডার ক্যুবেক উইন্টার কার্নিভাল ও নরওয়ের হলমেনকলেন স্কি ফেস্টিভ্যাল।
সূত্র: সিএনএন