X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১
ট্রাভেলগ

রসের খোঁজে ঢাকার অদূরে মিথিলা গ্রামে একদিন

ওয়ালিউল বিশ্বাস
২০ জানুয়ারি ২০১৯, ১৭:৫৫আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৮:৫৫

রসের খোঁজে ঢাকার অদূরে মিথিলা গ্রামে একদিন যাবো মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর। কিন্তু প্রধানতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে সামনে এলো এই কনকনে শীতে ভোরে ওঠা। তবে শীত যত বেশি, খেজুরের রস তত মিষ্টি ও স্বচ্ছ। আরও একটা বড় ব্যাপার আছে। যত ভোরবেলা খাওয়া যাবে, রস তত অমৃত!

এসব ভাবতে ভাবতে দেখলাম— ভালো, স্বচ্ছ ও মিষ্টি রস যদি পান করতেই হয়, তাহলে ঘুম থেকে উঠতে হবে ভোর সাড়ে ৫টায়। এর আধঘণ্টার মধ্যে মোটরবাইকে চেপে বসতেই হবে। এর বিকল্প নেই। মুস্তাফিজ, কনক ও রোহানকে নিয়ে বসে সেভাবেই সূচি চূড়ান্ত করা হলো।

ভ্রমণসঙ্গীদের মিট পয়েন্ট যেন গন্তব্যের দিকে হয় সেজন্য বেছে নিলাম ধানমণ্ডির শঙ্কর। ঘুম থেকে ওঠা যাদের কাছে মহাসমস্যা তারা মোবাইল ফোনে অ্যালার্ম দেওয়ার পাশাপাশি নিজেরা একে অন্যকে জাগিয়ে তুলতে পারেন।

আমাদের গন্তব্য সিঙ্গাইরের জায়গীর বাজারের মিথিলা গ্রাম। পথটা বেশ সহজ। গাবতলী থেকে আমিন বাজার পেরিয়ে হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ড। সেখানে চাইলে বিরতি দিয়ে দু’এককাপ চায়ে চুমুক দিতে পারেন।

মিথিলা গ্রাম শীতে ধোঁয়া ওঠা চা উপভোগের পর হাতের বাঁ-দিক দিয়ে হাইওয়ে ধরে সিঙ্গাইরের জায়গীর বাজারের দিকে যাত্রা করতে হবে। সামনে পড়বে তিন রাস্তা। সেখানে পৌঁছে হাতের ডানদিক দিয়ে সোজা যেতে হবে। চাইলে দু’একজনকে জিজ্ঞেসও করে নিতে পারেন। প্রায় ৭-৮ কিলোমিটার পর ডানদিকে সরু মাটির রাস্তা ধরে নামতে হয়। মোট দূরত্ব ২০ কিলোমিটার।

রসের সুবাদে গ্রামটি বেশ প্রসিদ্ধ। হেমায়েতপুর থেকে যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই সব তথ্য মিলবে। তবে দলে বেশ কয়েকজন থাকলে যাওয়ার আগে দু’একজন চাষির সঙ্গে যোগাযোগ করে গেলে ভালো হয়। কারণ প্রতিদিনই প্রায় শ’দুয়েক মানুষ এখানে রস খেতে আসেন। অনেকে অগ্রিম ফরমায়েশ দিয়ে রস নিয়েও যান।

গ্রামে ঢুকে দু’জন গাছির সঙ্গে কথা হয় আমাদের। একজনের নাম মিলন, অন্যজন হাতেম। দু’জনই সৌম্য চেহারার বিনয়ী মানুষ। তারা আবার গোপনে কিছু রস সংরক্ষণ করেন। কারণ শেষদিকে রস নিয়ে রসকষহীন কাণ্ডও ঘটে; তর্কাতর্কি বাকবিতণ্ডা আর কী!

হাতেম ও মিলন ভাই আমাদের জানান, এই গ্রামে প্রায় দেড় থেকে দুই মন খেজুর রস হয়ে থাকে। সবচেয়ে বড় কথা, তারা কখনও ভেজাল রস দেন না। যতটুকুই হয়, তা খাঁটি ও সতেজ রস। দামাদামিরও সুযোগ নেই। প্রতি লিটার ৭০ টাকা।

অভিজ্ঞতা বলে, আয়েশ করে রস পানের জন্য জুতসই জায়গা এটি। ব্যাগে ভরে একটি মাদুর অথবা চাদর, কয়েকটা গ্লাস ও মুড়ি নিয়ে যেতে পারেন। পাশে শস্য ক্ষেত, সরিষা ক্ষেত, পাখির কিচিরমিচির বোনাস। সেখানেই মাদুর পেতে গ্রামের অপরূপ সোনালি সূর্য ওঠা দেখতে পারেন। পাশাপাশি মুড়ি-রসে হালকা করে চুমুক দিতে পারেন। অসাধারণ লাগবে।

লেখকের সেলফি যেভাবে যাবেন
নিজস্ব গাড়ি বা মোটরসাইকেল থাকলে খুবই ভালো হয়। তা না হলে গাবতলী থেকে সাভারের বাসে চেপে বসতে পারেন। ভোর থেকেই এই রুটে বাস চলাচল শুরু হয়। হেমায়েতপুর নেমে ইঞ্জিনচালিত রিকশা নিলেই হলো।

যা যা সঙ্গে রাখবেন
গ্লাস, মাদুর অথবা চাদর, মুড়ি, গ্লাভস, সানগ্লাস, মাফলার বা মানকি টুপি, ভ্যাসলিন. পাওয়ার ব্যাংক ও হেডফোন।



/জেএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে নিজেকে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি, গ্রেফতার ১
প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে নিজেকে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি, গ্রেফতার ১
ইরান হামলা বন্ধ করলেও ছায়াশক্তিরা সক্রিয়
ইরান হামলা বন্ধ করলেও ছায়াশক্তিরা সক্রিয়
খিলগাঁওয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
খিলগাঁওয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
এই জন্মদিনে আরেক সিনেমার ঘোষণা
এই জন্মদিনে আরেক সিনেমার ঘোষণা
সর্বাধিক পঠিত
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী