রাঙামাটি এখন পর্যটকদের পদচারণায় মুখর। শহরের যান্ত্রিকতা ছেড়ে নৈসর্গিক প্রকৃতিতে সময় কাটাতে এখানে ভিড় জমিয়েছেন ভ্রমণপ্রেমীরা। ফলে জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পটে এখন হাজারও পর্যটক সমাগম দেখা যাচ্ছে। টানা কয়েকদিনের ছুটির সুবাদে বেড়ানোর সুযোগ পেয়েছেন অনেকে।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরো শহর ভ্রমণপ্রেমীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। ওইদিন থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত লক্ষাধিক পর্যটকের আগমন ঘটে জেলায়। নগরজীবনের একঘেঁয়েমি কাটাতে এসে পাহাড়ি এই জনপদের অপার সৌন্দর্যে মুগ্ধ তারা। ঝুলন্ত সেতু, পলওয়েল, ডিসি বাংলোসহ পর্যটক স্পটগুলোতে এখন তাদের সরব উপস্থিতি।
কুড়িগ্রাম থেকে ঘুরতে আসা নাইমা ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কাপ্তাই হ্রদ ও পাহাড়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্য এককথায় অতুলনীয়। রাঙামাটিতে ঘুরতে না এলে জানাই হতো না আমাদের দেশে এত সুন্দর জায়গা আছে। এখানে এসে বুঝতে পারছি বাংলাদেশকে কেন নদীমাতৃক দেশ বলা হয়।’
ঢাকা থেকে বেড়াতে এসেছেন নবদম্পতি সোহেল রানা ও সানজিদা। কাপ্তাই হ্রদের চারপাশে সবুজ পাহাড় ও স্বচ্ছ জল দেখে তাদের মন উৎফুল্ল। দু’জনই বললেন, ‘এখানকার প্রকৃতির রূপ দেখে সবারই ভালো লাগার মতো। বিদেশে যাওয়ার আগে নিজেদের দেশটা ঘুরে দেখলে মন ভরে যাবে। বাংলাদেশ অনেক সুন্দর।’
রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, প্রতি বছর রাঙামাটি জেলায় পাঁচ লাখ পর্যটকের উপস্থিতি থাকে। তবে গত পাঁচ দিনে লক্ষাধিক ভ্রমণপিপাসু এসেছে। টানা ছুটিতে রাঙামাটির পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে এখন পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়।
গত কয়েকদিনে পর্যটকদের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা। এমন আশাব্যঞ্জক পরিস্থিতি থাকলে দুই বছরের লোকসান পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করেন শহরের মতিমহল হোটেল ম্যানেজার। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বললেন, ‘আমাদের হোটেলসহ প্রায় সব হোটেলে ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত রুম বুকিং রয়েছে। মার্চেরও কয়েকদিনের বুকিং আছে কিছু।’
রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক সৃজন কান্তি বড়ুয়াও একই তথ্য দিলেন, ‘ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত পর্যটন করপোরেশনের সব রুম বুকিং রয়েছে। মার্চের শুরুর কয়েকদিনের জন্যও কিছু বুকিং পাওয়া গেছে। গত বছরের চেয়ে এবার দ্বিগুণ পর্যটক এসেছে বলে এই চাপ যাচ্ছে।’
এদিকে পর্যটকদের নির্বিঘ্নে ঘোরাফেরা ও বেড়ানোর জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটির ট্যুরিস্ট পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ওহিম।