X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

এপ্রিলে ঘুরে বেড়ানোর সেরা পাঁচটি জায়গা

নুসরাত টিসা
০৩ এপ্রিল ২০১৯, ২৩:০০আপডেট : ০৩ এপ্রিল ২০১৯, ২৩:১৭

ভ্রমণপিপাসুদের অনেকের কাছে ঘুরে বেড়ানোর জন্য এপ্রিল মাস বেশ উপযোগী। এই সময় গন্তব্য অনুযায়ী তুলনামূলক কম খরচে ছুটি কাটানো যায়। সেজন্য হোটেল, এয়ার টিকিট, গাড়ি ভাড়া আগেভাগে চূড়ান্ত করে ফেলা ভালো। যদিও ঝড়-বৃষ্টিসহ এপ্রিলের আবহাওয়া নিয়ে আগে থেকে কিছু বলা যায় না! গন্তব্যের ওপর নির্ভর করে আবহাওয়া কেমন থাকবে। পরিবার কিংবা কাছের মানুষদের নিয়ে এপ্রিলে ঘুরে বেড়ানোর সেরা পাঁচটি জায়গার কিছু তথ্য জেনে নিন।

প্যারিসের বিখ্যাত স্থাপনা আইফেল টাওয়ারের নিচে চেরি ফুল প্যারিস (ফ্রান্স)
অন্নদাশঙ্কর রায়ের ‘পথে প্রবাসে’ গ্রন্থের ‘পারী’ অর্থাৎ প্যারিস পৃথিবীর সুন্দরীতমা শহরের তালিকায় অন্যতম। ফ্রান্সের রাজধানী সারাবছরই জ্বলজ্বলে। তবে বসন্তকালে বিশেষ মুগ্ধতা ছড়ায় সেখানে। এপ্রিলের মাঝামাঝি শহরটিতে বৃষ্টির পরিমাণ কমে আবহাওয়া কিছুটা উষ্ণ হতে শুরু করে। তাই শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা তিন ধরনের আবহাওয়ার উপযোগী প্যাকিং করাই উত্তম।

প্যারিসে আইফেল টাওয়ারের আশেপাশে মন রঙিন করে দেওয়া ফুল ফোটে এপ্রিলে। শিল্পপ্রেমীরা চাইলে এ মাসে ঘুরে আসতে পারেন গ্র্যান্ড প্যালেতে। সেখানে কাচের সিলিংয়ের নিচে ৪ থেকে ৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে ‘আর্ট প্যারিস আর্ট ফেয়ার’। এই আয়োজনে শতাধিক গ্যালারি সমকালীন চিত্রকলার পসরা নিয়ে সমবেত হবে। প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ, অঞ্চল ও মহাদেশের শৈল্পিক কীর্তি বিশেষ ফোকাস পেয়ে থাকে এতে।

নটরডেম ক্যাথেড্রাল বসন্তে নটরডেম ক্যাথেড্রাল দেখতে দ্যুতিময় হয়ে ওঠে। দ্বাদশ শতকে এর কাজ শুরু হয়েছিল। এটি সম্পন্ন করতে লেগেছে ৩০০ বছর। এটি প্যারিসের সবচেয়ে টেকসই প্রতীক। নটরডেম ক্যাথেড্রাল থেকে সাঁন্ত শাপেলের মাঝামাঝি ‘ইল দঁলা সিতে’ (আইল্যান্ড অব দ্য সিটি) নামক স্থানে রয়েছে চমৎকার ফুলের বাজার। ১৮৩০ সাল থেকে এখানে বেচাকেনা চলছে। এটি বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের খুব পছন্দের একটি জায়গা।

লুক্সেমবুর্গ গার্ডেনস স্থানীয় ও পর্যটকদের প্রিয় বাগানের স্পট হলো লুক্সেমবুর্গ গার্ডেনস। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে প্যালেস অফ ভারসাই বাগানের ৫৫টি ফোয়ারার বেশকিছু জীবন্ত হয়ে ওঠে সুরের মূর্ছনায়। প্যারিসের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত পার্ক মনচিউ অন্যতম। ভোজনরসিকরা বেছে নিতে পারেন বিস্ট্রো পল বার্ট।
১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত গ্র্যান্ড মস্ক অব প্যারিসে রয়েছে চোখজুড়ানো সবুজের সমারোহ। বর্ণনাতীত সৌন্দর্যমণ্ডিত পেরে লেশেজ সমাধিক্ষেত্রে চিরশায়িত আছেন অস্কার ওয়াইল্ড, এডিথ পিয়াফ ও জিম মরিসনের মতো বিখ্যাত শিল্পীরা।

কিয়োটো শহরেই জাপানিজ ঐতিহ্যের উত্থান কিয়োটো (জাপান)

সুদৃশ্য স্থাপত্যশিল্প, সুস্বাদু জাপানি খাবার ও গেইশা সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে বছরের যেকোনও সময়ে কিয়োটোতে ভ্রমণের জুড়ি নেই। তবে জাপানের এই ঐতিহাসিক শহরে এপ্রিলের শুরু থেকে মাঝামাঝি পর্যন্ত চেরি ফুলের প্রাচুর্যে হারিয়ে যাওয়া যায়।

এপ্রিলে চেরি ফুলের প্রাচুর্য দেখা যায় কিয়োটোতে কিয়োটোতেই জাপানিজ ঐতিহ্যের উত্থান। সেখানকার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে কামোগাওয়া নদীর তীর, হাজারও গোলাপি চেরি ফুলের সান্নিধ্যে থাকা শিন্তো হাইয়ান মন্দির ও পর্যটকপ্রিয় গেইশা সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র গিয়ন অঞ্চল।

সাগানো ব্যাম্বু ফরেস্ট নয়নাভিরাম সবুজের সমারোহ উপভোগের জন্য সাগানো ব্যাম্বু ফরেস্টের জুড়ি মেলা ভার। ছুটির দিনগুলোতে সেখানে বিভিন্ন দেশের দর্শনার্থীদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো। তাই বাঁশবন নিরিবিলি ঘুরে দেখতে খুব সকালে গেলে ভালো।

গিয়ন ছাড়াও কিয়োটোর অন্যান্য গেইশা প্রধান অঞ্চলগুলোতে এপ্রিলে মনোরম গেইশা নৃত্য উপভোগ করা যায়। এই নিরবধি সৌন্দর্য বারবার দেখতে ইচ্ছে করবে!

জাপানের কিয়োটোতে কিয়োমিজু-দেরা মন্দির ৭৮০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত কিয়োমিজু-দেরা মন্দিরে এপ্রিলে চেরি ফুল ফোটে। শহরটিতে বৌদ্ধ নিরামিষ খাবারের জন্য মনে রাখার মতো অভিজ্ঞতার জন্য কিয়োটোর ‘ওকুডান শিমিজু’ নামক ৪০০ বছরের পুরনো রেস্তোরাঁর বিকল্প নেই।

পূর্ব এশিয়ার বাইরের দেশগুলোর ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য কিয়োটোতে যাওয়া দীর্ঘ যাত্রার ব্যাপার। এজন্য অ্যালকোহল, ক্যাফিনযুক্ত পানীয় ও লবণাক্ত খাবার এড়িয়ে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করলে ভালো।

অস্টিন ও সান অ্যান্টোনিও, টেক্সাস (যুক্তরাষ্ট্র)
আমেরিকার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে গ্রীষ্মকাল আগেভাগে দেখা দেয়। এর সুবাদে শহরটি হয়ে ওঠে ভ্রমণ উপযোগী। এপ্রিলে সেখানে থাকে নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া। পাহাড়ি এলাকা টেক্সাসে পর্যটক প্রিয় দুটি স্থান হলো অস্টিন ও যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় ১০ শহরের মধ্যে অন্যতম সান অ্যান্টোনিও। অস্টিন ও এর চেয়ে ৮০ মাইল দূরে অবস্থিত সান অ্যান্টোনিওতে ভ্রমণপিপাসুরা দুই ধরনের স্বাদ পান।

এপ্রিলে টেক্সাস হিল কান্ট্রি অস্টিন: গান-বাজনার জন্য শিল্প-সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ শহরটি সুপরিচিত। শিল্পপ্রেমীদের জন্য এ মাসে সেখানে রয়েছে বেশকিছু আয়োজন। ৪ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে অস্টিন আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসব। এতে অংশ নেবেন দেশ-বিদেশের কবি ও কবিতাপ্রেমীরা।

জ্যাজ, ব্লুজ ও ব্লুগ্রাস সংগীতানুরাগীদের জন্য জুতসই অস্টিনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ডেলের কাছে আগামী ১১ থেকে ১৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য ওল্ড সেটলারস সংগীত উৎসব। পর্যটকরা চাইলে সেখানে ক্যাম্পিং করতে পারেন।

নিজেদের অদ্ভুত আয়োজনগুলো নিয়ে গর্ব করে অস্টিনবাসী। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য ইওজ বার্ষিক জন্মদিনের পার্টি। এতে থাকে অ্যাক্রোব্যাটস, ড্রাম সার্কেল, কস্টিউম প্রতিযোগিতা। 

মার্চের শুরু থেকে অক্টোবর পর্যন্ত অস্টিনের অ্যান ডব্লিউ.রিচার্ডস কংগ্রেস এভিনিউ ব্রিজের পাদদেশে গেলে লাখ লাখ বাদুরের উড়ে যাওয়ার অভাবনীয় দৃশ্য দেখার সুযোগ মেলে।

টেক্সাসে রোদ্দুর উপভোগের দারুণ জায়গা জিলকার পার্ক। সেখানকার মনোরম প্রাকৃতিক জলাশয় বার্টন স্প্রিংসের ঝকঝকে জল তৃপ্তি এনে দেয় স্থানীয় ও পর্যটকদের।

শহরটির সাউথ কংগ্রেস এভিনিউর গুয়েরো’স ট্যাকো বারে খেয়ে ভোজনবিলাসীরা কন্টিনেন্টাল ক্লাবের পথ ধরে হাঁটলে সুরেলা গান ভেসে আসবে। হোটেল সান হোসে রাতে থাকলে তো কথাই নেই। সারারাত ভাসবেন সুরের সাম্পানে!

এপ্রিলে টেক্সাস হিল কান্ট্রিকে প্রাণবন্ত রাখে নীল রঙা বুনোফুল। সেখানে বসন্তের শোভা উপভোগের জন্য লেডি বার্ড জনসন ওয়াইল্ডফ্লাওয়ার সেন্টার দারুণ।

টেক্সাসে কলোরাডো নদী অস্ট্রিনের বাসিন্দারা ভ্রমণপ্রেমী। তবে তাদের শহরের বাইরে যেতে হয় না। কারণ কলোরাডো নদীতেই কায়াকিং করা যায়।

ব্রোকেন স্পোকে নাচ কয়েক দশক ধরে ব্রোকেন স্পোকে নাচ উপভোগ করেন ভ্রমণপিপাসুরা। কাউবয়, হিপ্পিসহ সহজবোধ্য মিশ্র সংস্কৃতি বিদ্যমান সেখানে।

সান অ্যান্টোনিওতে মিশন সান হোসে সান অ্যান্টোনিও: অস্টিনের এই প্রতিবেশী এলাকায় আমেরিকান ও মেক্সিকান সংস্কৃতির চমৎকার মেলবন্ধন চোখে পড়ে। এ শহরে বেশকিছু মিশনের পাশাপাশি দর্শনীয় স্থানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক দুর্গ অ্যালামো। সেখানে দুপুর থেকে বিকালের মাঝের সময়টাতে লোকজনের ভিড় কিছুটা কম থাকে। অ্যালামোর চেয়ে কম ভিড় থাকে মিশন সান হোসেতে। এটি ‘কুইন অব দ্য মিশনস’ নামে পরিচিত। সান অ্যান্টোনিওতে গিয়ে রিভারওয়াক না করা বোকামি! নদীঘেঁষা ফুটপাত, হোটেল, ক্যাফে ও বিনোদন কেন্দ্র একঘেঁয়েমি লেগে গেলে নৌকায় চড়তে পারেন পর্যটকরা।

সান অ্যান্টোনিওর বিভিন্ন ভেন্যুতে আগামী ১৮ এপ্রিল থেকে শুরু হবে ফিয়েস্তা। পার্টি চলবে ২৮ এপ্রিল অবধি। এতে থাকবে বৈচিত্র্যময় খাবার, ফ্যাশন শো, লাইভ মিউজিক, সেনা প্যারেড। গত ১ এপ্রিল শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী ভ্যালেরো টেক্সাস ওপেন শীর্ষক গলফ টুর্নামেন্ট। সান অ্যান্টোনিও বই উৎসব রয়েছে ৬ এপ্রিল। পোটিট শহরে ৫ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত রয়েছে স্ট্রবেরি উৎসব।

চেরো নেগ্রো আগ্নেয়গিরি নিকারাগুয়া
মধ্য আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে কোস্টারিকা ও পানামার চেয়ে পর্যটক তুলনামূলক কম নিকারাগুয়ায়। তাই ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে বেড়ানোর জন্য দেশটি জুতসই। নিকারাগুয়ার আটলান্টিক মহাসাগরমুখী অংশের আবহাওয়া এপ্রিলে বেশ আর্দ্র ও বর্ষণমুখর হয়ে থাকে। ফলে সেখানকার ল্যান্ডস্কেপ দেখতে আকর্ষণীয় লাগে। সবখানে ঊষ্ণ আবহাওয়া থাকলেও পাহাড়গুলো এ সময় কিছুটা শীতল মনে হবে।

ক্যাথেড্রাল অব গ্রানাডা ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে নিকারাগুয়ার প্রিয় এমারেল্ড কোস্ট। সেখানে প্রায় ৩০ মাইল দীর্ঘ তটরেখা ও শুষ্ক বনের প্রাকৃতিক প্রাচুর্য রয়েছে। বিশ্বমানের সার্ফ, বন্ধুসুলভ মানুষ ও পরিবেশবান্ধব বিলাসবহুল রিসোর্ট পাওয়া যাবে ওই অঞ্চলে।

ইতিহাসপ্রিয় ও স্থাপত্যপ্রেমীরা লেক মানাগুয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝামাঝি লিয়নে যেতে উন্মুখ থাকেন। অষ্টাদশ শতকের শুরুতে প্রতিষ্ঠিত ‘ক্যাথেড্রাল অব লিয়ন’ মধ্য আমেরিকার সবচেয়ে বড় গির্জা। ২০১১ সালে এটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষণা করা হয়।

লিটল কর্ন আইল্যান্ড লেক নিকারাগুয়ার পাশে রয়েছে ইতিহাস ও পুরনো দর্শনীয় ভবনের আরেক শহর গ্রানাডা। সংস্কৃতিপ্রেমীদের জন্য সেখানে কাঙ্ক্ষিত স্থান পার্ক সেন্ট্রাল। স্নোর্কেল ও স্কুবা ডাইভিংয়ের জন্য ক্যারিবীয় উপকূলের লিটল কর্ন আইল্যান্ড জনপ্রিয়। এর সৈকতজুড়ে রয়েছে পাম গাছের সারি।
চেরো নেগ্রো আগ্নেয়গিরি হাইকিং ট্যুরের মাধ্যমে নিকারাগুয়ার আগ্নেয়গিরিময় ল্যান্ডস্কেপ দেখার সুযোগ মিলবে। লিয়ন শহরের অদূরে চেরো নেগ্রোতে পর্যটকদের রোমাঞ্চকর অনুভূতি এনে দিতে পারে আগ্নেয়গিরি-বোর্ডিং।

মধ্য আমেরিকায় প্রথমবার বেড়ানোর ক্ষেত্রে ভ্রমণ সংক্রান্ত কাগজপত্র, ভ্রমণের রোডম্যাপ ও জরুরি যোগাযোগের তথ্যের বাড়তি ফটোকপি সঙ্গে রাখলে ভালো। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে এসব ভাগাভাগি করা যেতে পারে। মূল কপি হারিয়ে গেলেও তাতে অসুবিধা হবে না।

মরক্কো
পৃথিবী ও অন্যান্য পশ্চিমা সংস্কৃতির সবচেয়ে প্রেমময় স্থানের মধ্যে মরক্কো অন্যতম। স্পেনের জিব্রাল্টার পেরিয়ে অবস্থিত দেশটি। ফলে ইউরোপ থেকে অনায়াসে যাওয়া যায় সেখানে। এপ্রিলে বেশ উষ্ণ হতে শুরু করে মরক্কো। পাহাড়-পর্বত আর মরুভূমির অসাধারণ সংমিশ্রণে রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়া প্রত্যাশা করা ভালো সেখানে। এর মধ্যে বৃষ্টি বিরল। তবে রাত থাকে শীতল।

মারাকেশে জেমা এল-ফনা মার্কেট ঘুরে বেড়ানোর জন্য দেশটির মারাকেশ শহর পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে শীর্ষে। এর প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে মূল মার্কেট জেমা এল-ফনা। সেখানে এদিক-ওদিক স্থানীয়দের পথনাটক দেখা যায়। এছাড়া ক্যাসাব্ল্যাঙ্কার ওল্ড মদিনায় যেতে এপ্রিল চমৎকার সময়। শৌখিন ক্রেতাদের কাছে জায়গাটি কার্পেট, স্লিপার আর সিরামিক সামগ্রীর যেন স্বর্গরাজ্য!

মারাকেশে এপ্রিলে দর্শনীয় হয়ে ওঠে এমন কয়েকটি স্থানের কথা বলা যাক। ফুলবাগান জর্দান মেজোরেলে দেখা যায় বিভিন্ন দুর্লভ ফুল। ষোড়শ শতকে নির্মিত সুলতানের প্রাসাদ ‘এল বদি প্যালেস’ জরাজীর্ণ হয়ে পড়লেও পর্যটকদের নজর কাড়ে।

উটের পিঠে মরুযাত্রী দল শহরটিতে শেষ বিকালে গোধূলি আলোয় উটের পিঠে চড়ে ভ্রমণ চিরকাল মনে রাখার মতো ব্যাপার। এর মাধ্যমে ক্ষণিকের জন্য সাহারা জীবনধারা অনুভব পাওয়া যায়। পছন্দমাফিক ট্যুরের ক্ষেত্রে বাজেটের ব্যাপারে ট্রাভেল এজেন্ট অথবা গাইডবুকের শরণাপন্ন হলে ভালো।

মারাকেশ ছাড়াও মরক্কোতে আরও কিছু দর্শনীয় জায়গা আছে। বন্দরনগরী ট্যাঞ্জিয়ার্সের ক্যাফে সংস্কৃতি ভ্রমণপ্রেমীদের বেশ পছন্দের। ক্যাসাব্লাঙ্কা শহরে রয়েছে সমুদ্রতীরবর্তী দ্বিতীয় হাসান মসজিদ। আফ্রিকার বৃহৎ ও বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত মসজিদগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। সেখানে একসঙ্গে ২৫ হাজার মানুষ অবস্থান করতে পারে। অমুসলিমদের জন্যও এই মসজিদ উন্মুক্ত। আটলান্টিক মহাসাগরের সুবাদে দ্বিতীয় হাসান মসজিদ বেশ দর্শনীয়।

দ্বিতীয় হাসান মসজিদ নাগরিক জীবন পেরিয়ে যেতে চাইলে জুতসই অ্যাটলাস মাউন্টেন। সেখানে অজপাড়া গাঁ ও চোখধাঁধানো দৃশ্যাবলী দেখা যায়। পর্বতে মিলবে তুষারের ছোঁয়া। এপ্রিলে মরক্কোর আলেজেরিয়া সীমান্তে হয়ে থাকে সংস্কৃতিপ্রেমীদের কাঙ্ক্ষিত বার্ষিক মেরজুগা উৎসব। এতে প্রকৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত সংস্কৃতি, শিল্পকলা ও সংগীতের অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটে। স্থানীয় গাইডরা খুব বন্ধুভাবাপন্ন। তারা যথাযথ পরামর্শ দিতে পারবে।

পোশাকের বেলায় মরক্কোতে হালকা ওজন ও বিনয়ী দেখাবে এমন কিছু বেছে নিলে ভালো। যেমন লম্বা প্যান্ট ও কলারের জামা। নারীদের জন্য লম্বা স্কার্ট কিংবা প্যান্ট ও কামিজ সবচেয়ে উপযুক্ত। মসজিদ কিংবা পবিত্র স্থানে যেতে নারীদের হাতের কব্জি ও গোড়ালি ঢাকা পোশাক আর স্কার্ফ কিংবা হিজাব দিয়ে চুল ঢেকে নিতে হবে। মসজিদে জুতা পরে ঢোকা যায় না। তাই জুতা রাখার জন্য ব্যাকপ্যাক কিংবা ব্যাগ থাকা সুবিধাজনক। নীরবতা পালনও আবশ্যকীয়, বিশেষ করে শুক্রবার বিকালে।

সূত্র: সিএনএন

/জেএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ফিরেই ফর্টিসকে বিধ্বস্ত করলো মোহামেডান
ফিরেই ফর্টিসকে বিধ্বস্ত করলো মোহামেডান
লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু
লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
ওজন কমিয়ে সাকিব পুরো ফিট, সন্তুষ্ট সহকারী কোচ
ওজন কমিয়ে সাকিব পুরো ফিট, সন্তুষ্ট সহকারী কোচ
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা