ফ্রেমবন্দি কয়েকটি মসজিদ। পাশে আরও কিছু দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যের স্থিরচিত্র। ফ্রেমে ফ্রেমে ফুটে উঠেছে সংস্কৃতি ও ইতিহাসের গল্প। এ যেন ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনী! ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ফেয়ারে (বিটিটিএফ) মধ্য এশিয়ার দেশ উজবেকিস্তানের স্টলে শোভা পাচ্ছে ছবিগুলো।
রাজধানীর আগারগাঁওস্থ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনের এই আন্তর্জাতিক মেলার আয়োজন করেছে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)। গত ১৮ এপ্রিল এর উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ১৯৯১ সালের ৩১ আগস্ট স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে উজবেকিস্তান। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সভ্যতা সমৃদ্ধ দেশটির জাদুঘরগুলোতে প্রায় ২০ লাখের মতো প্রত্নবস্তু রয়েছে। এছাড়া আছে বিখ্যাত মসজিদ ও ইসলামি স্মৃতিস্তম্ভ। হাজার বছরের সংস্কৃতি ও ইতিহাস জানতে সেখানে প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা বেড়াতে যায়। তাদের মধ্যে মুসলিমদের আগ্রহ চোখে পড়ার মতো।
নিজেদের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে উজবেকিস্তানের ট্যুর অপারেটরগুলো বিভিন্ন দেশের মেলায় অংশ নেয়। বাংলাদেশি পর্যটকদের কাছে উজবেকিস্তানকে তুলে ধরতে বিটিটিএফে এসেছে নিকা ট্রাভেল ট্যুরিজম কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক আলিশের বাইসভ ও তার সহকর্মী গুলসিনা বাইসবা স্টলে সাজিয়ে রাখা স্থিরচিত্র দেখিয়ে নিজের দেশের গল্প শোনালেন।
ছবিগুলো উজবেকিস্তানের হলেও ফ্রেমবন্দি করেছেন বাংলাদেশি আলোকচিত্রী সানজির হোসেন। ২০১৮ সালের আগস্টে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। তখন ক্যামেরায় উজবেকিস্তানের বোখারা, সামারকান্দ ও রাজধানী তাসখন্দের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ফ্রেমে ধরে রাখেন এই ছবিয়াল। তার ৪০টি ছবি উজবেকিস্তানের স্টলটিতে প্রদর্শন করা হয়েছে।
নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে সানজির হোসেন বলেন, ‘নিকা ট্রাভেল ট্যুরিজম কোম্পানির আমন্ত্রণে উজবেকিস্তানে গিয়েছিলাম। দেশটি খুব সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন। মানুষগুলো অমায়িক ও বন্ধুসুলভ। শহরগুলো হাজার হাজার বছরের পুরনো হলেও সংরক্ষিত আছে যত্নে। সেখানে বেড়িয়ে মুগ্ধ হয়েছি। সেই অনুভূতি খুঁজে পাবেন এসব ছবিতে।’
নিকা ট্রাভেল ট্যুরিজম কোম্পানির মহাপরিচালক আলিশের বাইসভ বলেন, ‘আপনারা জানেন তাসখন্দ হলো উজবেকিস্তানের রাজধানী। প্রাচীন ঐতিহ্যের জন্য তাসখন্দ বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। উজবেকিস্তানে অনেক মাজার, মসজিদ আর সমাধি আছে। এগুলো পর্যটকদের অভিভূত করে। আমাদের সমৃদ্ধ ইতিহাস জানতে প্রতি বছর ভ্রমণপ্রেমীরা বেড়াতে আসেন।’
বাংলাদেশ থেকে উজবেকিস্তান যাওয়ার সরাসরি কোনও ফ্লাইট নেই। ভারতের দিল্লি, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও আবুধাবি কিংবা রাশিয়ায় ট্রানজিট নিয়ে দেশটিতে যাওয়া যায়। সেখানে ভ্রমণ ব্যয়বহুল না হলেও সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় আকাশপথে যাতায়াত খরচ পড়ে একটু বেশি।
এদিকে আয়োজকরা জানিয়েছেন, বিটিটিএফে দেশি-বিদেশি প্রায় ১৪০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। চারটি হলে ১৫টি প্যাভিলিয়ন ও ১৬০টি স্টলসহ মোট ২২০টি স্টলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের সেবা ও পণ্য উপস্থাপন করছে। মেলায় উজবেকিস্তান ছাড়াও ভারত, নেপাল, ভুটান, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ট্যুর অপারেটররা অংশ নিচ্ছেন। দর্শনার্থীদের সামনে নিজেদের দেশে ভ্রমণে বিভিন্ন ট্যুর প্যাকেজ তুলে ধরছেন তারা।