নতুন গন্তব্যে যাওয়া ভ্রমণপিপাসুদের জন্য বরাবরই রোমাঞ্চকর। বিশেষ করে উড়োজাহাজে চড়ে মুগ্ধকর কোথাও পৌঁছালে অন্যরকম আনন্দ হয়। যেমন ফ্রান্সের নিস। ইস্তানবুল হয়ে তার্কিশ এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজে চড়ে সেখানে পৌঁছাতে লাগলো সোয়া দুই ঘণ্টা। এর রানওয়ে দেখতে যেন ছবির মতো! বিমান অবতরণের চোখধাঁধানো রানওয়েগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক এভিয়েশন প্রতিষ্ঠান প্রাইভেট ফ্লাইয়ের দৃষ্টিতে— ২০১৯ সালে যেসব রানওয়েতে উড়োজাহাজের অবতরণ সবচেয়ে সুন্দর দেখাবে, সেই তালিকায় তৃতীয় হয়েছে ফ্রান্সের নিস কোত দা’জুর। এটি দেশটির ব্যস্ততম বিমানবন্দরের মধ্যে তৃতীয়। জানালায় তাকিয়ে যতদূর চোখ যায় শুধু নীল জলরাশি দেখেছি। ইচ্ছে হচ্ছিল, সাগরের জলে কিছুক্ষণ মন ভিজিয়ে দীর্ঘযাত্রার ক্লান্তি কাটানো গেলে ভালোই হতো।
নিসের রানওয়ে স্পর্শ করার সময় বিমানের আসনে বসে মনে হবে বুঝি সাগরের জল পা ছুঁয়ে যাবে! এই বিমানবন্দরে নামার ঠিক আগ মুহূর্তে উপভোগ করা যায় রূপবতী ভূমধ্যসাগর। ভ্রমণপ্রেমী সবারই মন জয় করার মতো রানওয়ে এটি। বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর চারপাশের অপূর্ব দৃশ্য মুগ্ধ করে যাত্রীদের। সেখান থেকে মনোরম উপকূলীয় সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
বেসরকারি জেট বিমানের বুকিং প্ল্যাটফর্ম প্রাইভেট ফ্লাইয়ের বার্ষিক এই জরিপে অংশ নিয়েছে ভ্রমণ বিশেষজ্ঞ ও এভিয়েশন ভক্তদের একটি প্যানেল। বিশ্বের ১২৯টি বিমানবন্দরের মধ্য থেকে নির্বাচন করা হয়েছে সেরা ১০। এর মধ্যে নিস অন্যতম। প্রায়ই ভ্রমণকারীরা নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছাতে তড়িঘড়ি করেন। তবে ফ্রান্সের এই শহরে যাওয়ার বেলায় জানালা দিয়ে নীল জলরাশির সুন্দর উপভোগ করতে চায় সবার মন।
নিস কোত দা’জুর ছিমছাম একটি বিমানবন্দর। খুব বেশি বড় নয়, কিন্তু বেশ পরিপাটী। এক নম্বর টার্মিনাল থেকে দুই নম্বরের কিছুটা দূরত্ব আছে। একটি থেকে অন্যটিতে যাওয়ার শাটল বাস আছে। তার্কিশ এয়ারলাইনস অবতরণ করেছে এক নম্বরে। উড়োজাহাজ থেকে নেমে ইমিগ্রেশনের দিকে এগোতেই বাইরে চোখে পড়লো, ‘নাইস টু মিট ইউ’। নিসের বানান ইংরেজি নাইস। বাইরে চোখ মেলে রানওয়ের অপূর্ব দৃশ্য উপভোগের সুযোগ হাতছাড়া করিনি।
বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে সোজা তাকাতেই চোখে পড়লো ‘আই লাভ নিস’ লেখা লাল, নীল ও সাদা রঙা স্ট্যান্ড। পর্যটকরা এর সামনে দাঁড়িয়ে ছবি ও সেলফি তোলায় ব্যস্ত। এক যুগল এসে তাদের ছবি তুলে দেওয়ার অনুরোধ করলো। হাতে অঢেল সময়, তাই আনন্দ নিয়ে তাদের ফ্রেমবন্দি করলাম। এখান থেকে দাঁড়িয়ে দূর পাহাড়ের হাতছানি উপভোগ্য মনে হলো। রাত ৭টা বেজে গেছে। কিন্তু সূর্য হাসিমুখে দিব্যি রোদ্দুর মেলে রেখেছে। ফ্রান্সে সে অস্ত যাবে রাত ৯টার পর!