মসজিদের শহর হিসেবে বাগেরহাটের আলাদা সুনাম রয়েছে। বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের এই জেলায় অবস্থিত। বাগেরহাটে ৫০ বর্গকিলোমিটারের মধ্যেই রয়েছে ৩৬০টি মসজিদ। তাই জেলাটিকে মসজিদের শহর হিসেবে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে চীনা ইংরেজি ভাষার সংবাদ চ্যানেল সিজিটিএন। চীনা এই গণমাধ্যমের শিরোনাম ‘দ্য লস্ট সিটি উইথ কমপ্লিট মেমোরিস: মস্ক সিটি অব বাগেরহাট’। এর বাংলা করলে দাঁড়ায়— স্মৃতিঘেরা হারানো শহর: মসজিদের শহর বাগেরহাট।
চীনা গণমাধ্যমটি মনে করিয়ে দিয়েছে, মার্কিন ব্যবসা-সংক্রান্ত ম্যাগাজিন ফোর্বসের দৃষ্টিতে বিশ্বের ১৫ হারানো শহরের তালিকায় বাগেরহাট অন্যতম। সেজন্যই তারা প্রতিবেদনটির এমন শিরোনাম করেছে। এতে উল্লেখ করা হয়, ‘১৪৫৯ সালে খান জাহানের মৃত্যুর পর বাগেরহাট পরিণত হয় জঙ্গলে। শতাব্দী পর এটি আবিষ্কৃত হয়েছে।’
সিজিটিএনের ‘নো এশিয়া বেটার’ অর্থাৎ ‘এশিয়াকে ভালোভাবে জানুন’ সিরিজের অংশ হিসেবে এবার বাংলাদেশ তথা বাগেরহাট নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বাগেরহাটের মসজিদগুলো প্রাচীনকালে বাংলার মুসলিম স্থাপত্যের পরিচয় বহন করে। পঞ্চদশ শতকে ইসলাম ধর্মের প্রচারক উলুঘ খান জাহান শহরটি গড়ে তোলেন। এর আগে খলিফতাবাদ নামে পরিচিত ছিল এটি। এখানে মধ্যযুগীয় ইসলামি শহরের সব বৈশিষ্ট্য সংরক্ষিত আছে।
প্রতিবেদনে স্বাভাবিকভাবে গুরুত্ব পেয়েছে ষাটগম্বুজ মসজিদ। বাগেরহাট শহর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়কের পাশে অবস্থিত হজরত খান জাহানের (র.) অমর সৃষ্টি। সাড়ে ৬০০ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক এই স্থাপনার পুরাকীর্তিগুলোতে রয়েছে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের নিদর্শন।
ষাটগম্বুজ মসজিদ থেকে মাইলখানেক দূরে অবস্থিত চুনা খোলা মসজিদের একটি ছবি প্রকাশ করেছে সিজিটিএন। মনে করে, খান জাহানের মাজার বাগেরহাটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতিস্তম্ভ। এটি ভালোভাবে সংরক্ষিত আছে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। প্রতিদিন শত শত মানুষ সেখানে গিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বলে জানান লেখক ওয়াঙ লা। তিনি আরও লিখেছেন, ‘১৯৮৫ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় স্থান পায় বাগেরহাট।’
‘নো এশিয়া বেটার’ সিরিজে এশিয়ার ৪৭টি দেশের সেরা স্থাপত্য, শিল্পকলা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের কথা জানাচ্ছে সিজিটিএন। তাদের প্রতিবেদনের সুবাদে বাগেরহাটে বিদেশি পর্যটক সমাগম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সিজিটিএন আগে সিসিটিভি-নাইন ও সিসিটিভি নিউজ নামে পরিচিত ছিল। বেইজিং ভিত্তিক চায়না সেন্ট্রাল টেলিভিশনের অংশ চায়না গ্লোবাল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক গ্রুপের সংবাদ চ্যানেল এটি।