মিসরে আবিষ্কৃত নারী, পুরুষ ও দুই শিশুর মমিসংবলিত ৩০টি কাঠের কফিন তিন হাজার বছরের পুরনো। দেশটির প্রত্নতত্ত্ব মন্ত্রণালয় এই অভিমত দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এগুলো মধ্যবিত্ত মহাযাজকদের পরিবারবর্গের। নীলনদের তীরে নয়নাভিরাম শহর লাক্সরের কাছে আল-আসাসিফ কবরস্থানে আবিষ্কার করা হয় চমৎকারভাবে সংরক্ষিত এসব কফিন। ২০২০ সালের শেষ নাগাদ গিজা পিরামিডের কাছে চালু হতে যাওয়া গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়ামে এগুলো প্রদর্শন করা হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে গত ১৫ অক্টোবর আবিষ্কৃত কফিনগুলোর ছবি পোস্ট করে মিসরের প্রত্নতত্ত্ব মন্ত্রণালয়। এর ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘অক্ষত ও সিল দেওয়া কফিন।’
মিসরের প্রত্মতত্ত্ব পরিষদের মহাসচিব মোস্তফা ওয়াজিরির দাবি, একশতাব্দীতে এটাই তাদের সবচেয়ে বৃহৎ প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার। অনেক বছর ধরে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের পর এটি মিসরীয়দের আবিষ্কার করা কফিনের প্রথম ভাণ্ডার। এর আগে ১৮৮১ ও ১৮৯১ সালে বিদেশিদের নেতৃত্বে খনন কর্মসূচি পরিচালিত হয়।
লাক্সরে ভ্যালি অব দ্য কিংসে হাটসেপসুট মন্দিরে কফিনগুলো উন্মোচন করা হয়। প্রত্নতত্ত্বমন্ত্রী খালিদ আল-আনানির মন্তব্য, প্রাচীন মিসরীয়রা কফিনগুলো যেভাবে রেখে গেছে এখনও সেসব তেমনই আছে! এগুলোর রঙ খুব বেশি মলিন হয়নি। মমিগুলো পুরোপুরি কাপড় দিয়ে ঢাকা। তাই কফিনের ওপর হাতের আকার দিয়ে তাদের লিঙ্গ চিহ্নিত করা হয়েছে। যেসব হাত খোলা সেগুলোর নারী আর মুষ্টিবদ্ধ হাত পুরুষের।
প্রত্নতাত্ত্বিক জাহি হাওয়াস মনে করেন, শিশুদের কফিন আবিষ্কারের ঘটনা বিরল। এ দুটি কফিন সারাবিশ্বের পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ হবে বলে আশাবাদী তিনি। তার তথ্যানুযায়ী, মাটি থেকে ৩০ ফুট নিচে দুটি স্তরে স্তূপের মতো ছিল ৩০টি কফিন। ডাকাতি এড়াতেই এই পন্থা বেছে নেওয়া হয়েছিল বলে ধারণা প্রত্নতাত্ত্বিকদের।
কফিনগুলোর ওপর মিসরীয় দেবদেবীদের অবয়বসহ বিভিন্ন নকশা খোদাই করা আছে। হাজার বছর যেন রঙ অটুট থাকে সেজন্য প্রাচীন মিসরীয়রা চুনাপাথর, লাল ওক ও ফিরোজার মতো প্রাকৃতিক রঙ ব্যবহার করতেন। ফলে এগুলোতে চকচকে উজ্জ্বলতা এখনও দৃশ্যমান।
সূত্র: সিএনএন
আরও পড়ুন-
মিসরে মাটির নিচে সংরক্ষিত প্রাচীন ২০টি কফিন আবিষ্কার