নারায়ণগঞ্জের হাজীগঞ্জ দুর্গ মুঘল আমলের ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অন্যতম বিরল পুরাকৃতি এটি। এর সংস্কার করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। রবিবার (৩ নভেম্বর) সকালে এখানে এসে তিনি বলেন, ‘কেল্লার বেদখল হয়ে যাওয়া জমি উদ্ধারের পর প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর ও সিটি করপোরেশন যৌথভাবে এর সৌন্দর্যবর্ধন করবে। এরপর পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে এটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘হাজীগঞ্জ দুর্গ ও আশেপাশের প্রায় ২০ একর ভূমির মালিক প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর। এসব জায়গা অন্য কোনও সংস্থা দাবি করলে তা বৈধ নয়।’
এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী। তিনি আশ্বাস দেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সিটি কপোরেশন প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের জায়গায় বনায়ন, লাইটিংসহ চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা করবে।
মেয়রের তথ্যানুযায়ী, দুর্গের পাশের গোলাঘর ও অন্যান্য স্থাপনা ভূমিদস্যুরা দখল করেছে। এছাড়া কেল্লার অভ্যন্তরের সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ারের অনেকাংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। দুর্গের জায়গা আরও কিছু ব্যবসায়ী দখল করে রেখেছেন। তাদের স্থাপনা সড়িয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। তার কথায়, পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী দেশে ফিরলে ওই ব্যবসায়ীদের অন্য জায়গা বরাদ্দ দিতে পাট মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি তুলে ধরা হবে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ১৫৮০ খ্রিষ্টাব্দে মুঘল সুবেদার মীর জুমলার শাসনামলে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে হাজীগঞ্জ দুর্গ নির্মাণ করা হয়। ভারতবর্ষের অন্যতম বিরল ত্রিভুজ স্থাপনাটি ‘খিজিরপুর দুর্গ’ নামে পরিচিত। এর অনেক প্রাচীন স্থাপনা ভেঙে গেছে। ভগ্নদশা হয়ে জরাজীর্ণ হয়ে পড়ছে বিরল এই নির্দশন। পুরাকীর্তিটি সংরক্ষণ করে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
অভিযোগ আছে, কালের বিবর্তনে স্থানীয় প্রভাবশালীরা দুর্গের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে। গত ২৪ অক্টোবর এর আশপাশে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা প্রায় অর্ধশত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জমিটি যৌথভাবে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর।
রবিবার সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আরও ছিলেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন ও সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এ এফ এম এহতেশামুল হক সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুবাস চন্দ্র সাহাসহ প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের কর্মকর্তারা।