গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিকে ঘিরে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। জাতির জনককে শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয় এখানে। জানা গেছে, স্থানীয় প্রশাসন শিগগিরই উন্নতমানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার সম্ভাব্যতা যাচাই করবে।
জাতির জনকের সমাধিকে ঘিরে পরিকল্পিত পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হলে এখানকার চিত্র ইতিবাচকভাবে বদলে যাবে বলে আশাবাদী প্রশাসন। এর সুবাদে পর্যটকের সংখ্যাও দিনে দিনে বৃদ্ধি পাবে। ফলে তৈরি হবে কর্মসংস্থান, বাড়বে পর্যটন ব্যবসার পরিধি।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান মো. সোলায়মান বিশ্বাস বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জাতির পিতার সমাধিকে ঘিরে টুঙ্গিপাড়াকে উন্নতমানের পর্যটন এলাকায় রূপান্তরিত করতে কাজ করছে পর্যটন কর্তৃপক্ষ।’
বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানো ছাড়াও অনেকে বনভোজন করতে প্রতিদিন ভিড় করেন টুঙ্গিপাড়ায়। বিশেষ করে শীত মৌসুমে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষা সফরে আসা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে এই জনপদ। শুক্র ও শনিবার হলে তো কথাই নেই! দূর-দূরান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসুরা জড়ো হন এখানে।
জাতির জনকের সমাধি কমপ্লেক্স, তার শৈশবের খেলার মাঠ, প্রিয় বালিশা আমগাছসহ আশেপাশের এলাকা এবং পাশেই শেখ রাসেল শিশু পার্কে ছুটির দিনগুলোতে যেন তিলধারণের জায়গা থাকে না। সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি এখানকার মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘরসহ তার পদচিহ্ন পড়েছে এমন কয়েকটি জায়গা ঘুরে শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে অনুপ্রেরণাদায়ক অনেক কিছু জানা যায়।
টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ আহম্মদ হোসেন মির্জা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা এখানে শিক্ষা সফরে এসে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে পারছে। যার ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা, তাকে ঘিরে ছাত্রছাত্রীদের কৌতূহল দেখলে মন ভরে যায়। অনেকের হয়তো শুধু পাঠ্যবইয়ের সুবাদে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানা ছিল। এখানে আসার পর তাদের উচ্ছ্বাস লক্ষণীয়। ছোটবড় সবার প্রিয় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে পেরে তারা বেশ খুশি।’
পর্যটনের সম্ভাবনা থাকলেও তেমন কোনও সুযোগ-সুবিধা নেই টুঙ্গিপাড়ায়। এখানে বেড়াতে আসা অনেকেই বিভিন্ন সমস্যার কথা জানিয়েছেন। এর মধ্যে অন্যতম মানসম্পন্ন খাবারের হোটেল না থাকা। তবে সবকিছুর সমাধান এনে একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে কর্তৃপক্ষ দ্রুত কাজ করবেন বলে আশা সবার।
ট্যুরিস্ট পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শওকত আলি বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, তাদের একটি টিম সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে। তার দাবি, পর্যটকদের যেন নিরাপত্তার অভাব না হয় সেজন্য সজাগ থাকেন তারা।