X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

কুষ্টিয়ায় শত বছরের সমাজবদ্ধ কোরবানি!

কুদরতে খোদা সবুজ, কুষ্টিয়া
০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৯:২২আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৯:২৮

 

সমাজের কোরবানি

মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। সমাজের সব স্তরের মানুষই এক কাতারে শামিল হয়ে এই ঈদুল আজহা উদযাপন করেন। তবে দেশের অন্যান্য জেলার থেকে কুষ্টিয়ায় কোরবানির প্রথায় কিছুটা ব্যতিক্রম রয়েছে। এই অঞ্চলে প্রায় শত বছর ধরে সমাজবদ্ধভাবে কোরবানি দেওয়ার রীতি চালু রয়েছে।

তথ্যমতে, ব্রিটিশ আমল থেকে কুষ্টিয়ায় সমাজবদ্ধভাবে কোরবানি দেওয়া হয়। কুষ্টিয়া জেলায় কয়েক হাজার সমাজ রয়েছে। প্রতি সমাজেই এই একই নিয়মে কোরবানি করা হয়। এসব সমাজ নির্দিষ্ট ব্যক্তিরা পরিচালনা করে থাকেন। নিয়ম অনুযায়ি গ্রামাঞ্চলে কোরবানি দিন গরু-ছাগল সব নিয়ে সমাজপতিদের বাড়ি অথবা একটি খোলা জায়গায় জড়ো করা হয়। এরপর সেখানে একে একে সবকটি পশু জবেহ করা হয়। তারপর কোরবানির মাংস নিয়মমাফিক তিন ভাগ করা হয়। যারা কোরবানি দিয়েছেন তারা তাদের এক ভাগ সেখান থেকে সংগ্রহ করেন। বাকি দুই ভাগ সব কোরবানির মাংসের সঙ্গে একত্রিত করা হয়। এরপর এলাকার বাসিন্দা অর্থাৎ গৃহকর্তার নামের তালিকা অনুযায়ী সবার একত্রিত করা মাংসের একটি ভাগ সবার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। আর একটি ভাগ এলাকার গরিব মানুষের মাঝে বন্টন করা হয়।

ভাগ হচ্ছে মাংস

এ মাংস বণ্টন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধর্মীয় বিধান মেনে করা হয়। এছাড়াও জবাইকৃত পশুর চামড়া দান করা হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা এতিমখানায়। অর্থাৎ যে কোনও শিক্ষা অথবা সেবামূলক কাজের জন্য এই চামড়ার অর্থ দান করা হয়।

এছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবেশের বিষয়টিও এখানে প্রাধান্য পেয়ে থাকে। কারণ পশু জবহের পর যে বর্জ্য জমা হয় তা পরিবেশ দূষণ করে। ফলে পরিবেশ দূষণ রোধে এসব বজ্য নির্দিষ্ট স্থানে পুঁতে ফেলা হয়।

সমাজবদ্ধ কোরবানি প্রসঙ্গে সদর উপজেলার খুদ্দআইলচারা গ্রামের স্থানীয় স্কুল শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলে সমাজবদ্ধ ভাবে কোরবানি দেওয়া হয়। প্রতিটি পরিবারের সমন্বয়ে একটি সমাজ গঠন করা হয়। প্রত্যেক সমাজের সদস্য সংখ্য প্রায় দুইশ পর্যন্ত হয়। কোরবানির দিন সমাজের সদস্যরাই পশু জবাহ থেকে শুরু করে মাংস প্রক্রিয়াকরণ করে থাকেন। এসব কাজে বাইরের কোন শ্রমিক দরকার পড়ে না।

মিরপুর পৌর এলাকার সমাজপতি ডাক্তার হামিদুর রহমান বলেন, কুষ্টিয়া জেলায় সমাজবদ্ধভাবে কোরবানির প্রথা অনেক প্রাচীন। এই প্রথা ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসছে। এই কোরবানি আমাদেরকে যেমন ত্যাগের শিক্ষা দেয়, তেমনি সামাজিক ভাবে একতাবদ্ধ থাকা যায়।

কুষ্টিয়ার সুলতানপুর সিদ্দিকিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মুফতি মাওলানা আব্দুল মান্নান ফারুকী বলেন, ইসলামের অন্যতম বিধান হলো কোরবানি। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমরা প্রতি বছর পশু কোরবানি করে থাকি। এই কোরবানি করতে গিয়ে সঠিক নিয়ম-পদ্ধতি না জানার কারণে আমরা অনেকেই বিভিন্নি ভুল-ত্রুটি করে থাকি। এমনকি কোরবানির যে মূল উদ্দেশ্য নিয়ত পরিশুদ্ধ করা, তাও অনেকের কাছে গুরুত্বহীন হয়ে চক্ষুলজ্জা, লোক দেখানো ইত্যাদি প্রাধান্য পাচ্ছে।

/এফএএন/

 

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী