X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১
৩ পেরিয়ে বাংলা ট্রিবিউন

ডিজিটাল লাইফস্টাইল!

নওরিন আক্তার
১৩ মে ২০১৭, ১৪:১১আপডেট : ১৩ মে ২০১৭, ১৫:০৮
image

দিনভর কর্মক্ষেত্রে থাকার পর ভিড়ের মধ্যে দোকানে ঘুরে কেনাকাটা করার ধৈর্য না হয় হলো। কিন্তু মার্কেটে পৌঁছানোর আগেই ঘণ্টাখানেক জ্যামে বসে থাকার কথা চিন্তা করেছেন তো? স্মার্টফোনের এ যুগে সবাই যখন সময়ের চেয়েও দ্রুত গতিতে ছুটতে ব্যস্ত, তখন যানজট ও ভিড় ঠেলে শপিংয়ে যাওয়ার সময়টুকু বের করা মুশকিলই বটে। তাই মানুষ এখন ভার্চুয়াল কেনাকাটাতেই স্বাচ্ছন্দ্য বেশি।

ডিজিটাল লাইফস্টাইল

হবে নাই বা কেন? কেবল একটি ক্লিকে নিমেষেই খুলে যাচ্ছে শপিংয়ের বিশাল দুনিয়া। কী নেই এখানে? পোশাক ও গয়নার মতো নিত্য ব্যবহার্য লাইফস্টাইল পণ্য তো রয়েছেই। পাশাপাশি কাঁচাবাজারের পণ্য থেকে শুরু করে বই পর্যন্ত কিনতে পারবেন ঘরে বসেই। মোবাইল, ল্যাপটপ, রান্না করা খাবার, তাজা ফলমূল যেমন কিনতে পারবেন, তেমনি সৌন্দর্যসেবা ও ভ্রমণসেবাও রয়েছে এই অনলাইন জগতেই। এখানে নেই অযথা ঘোরাঘুরি অথবা ট্রাফিক জ্যামের ঝামেলা। চাহিদা অনুযায়ী পছন্দের পণ্যটি বাসায় পৌঁছে যাবে দ্রুত, তাও আবার অনেক সময় বাজারের চেয়ে কম দামেই!
এখন বেশিরভাগ দোকানেরই রয়েছে অনলাইনে সেবা প্রদানের সুবিধা। অনলাইনভিত্তিক দোকানও এখন প্রচুর। গতানুগতিক পণ্যের বাইরে গিয়ে ব্যতিক্রমী কিছু করার প্রয়াস চোখে পড়বে এখানে হরহামেশাই।
শহরে গাছ লাগানো বিষয়ে সবাইকে সচেতন করতে কাজ করছে অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘নগর-কৃষি’। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটির একজন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাহফুজ মুনতাসির। তিনি জানালেন, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্র ও দুই শিক্ষক সরাসরি যুক্ত আছেন নগরকৃষির কার্যক্রমে। পরিবেশ দূষণের ফলে বদলে যাচ্ছে শহুরে পরিবেশ। তাপমাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এমন অবস্থায় গাছ লাগানোর কোনও বিকল্প নেই। যেহেতু শহরে সেভাবে গাছ লাগানোর জায়গা নেই, সেহেতু বারান্দা অথবা বাড়ির ছাদেই এক টুকরো বাগান তৈরি করে ফেলুন। এমন কনসেপ্ট থেকেই কাজ করছে নগরকৃষি। গাছ লাগানোর সুবিধার্থে জৈব সারসহ একেবারে তৈরি মাটিও দিচ্ছেন তারা। গাছ লাগানোর পাত্র, মাটি ও গাছের চারা নিয়ে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন ছোট্ট বাগান। আবার বারান্দা অথবা ছাদে যদি বাগান করতে চান তবে নগরকৃষিকে জানালে আপনার পছন্দের গাছসহ পূর্ণাঙ্গ নকশা করে দেবে তারাই।

নগরকৃষি গাছ লাগিয়ে দেবে আপনার বাসার ছাদে অথবা বারান্দায়

ছোটবেলা থেকেই নিজে সাজতে এবং অন্যকে সাজাতে পছন্দ করতেন কারিশমা রহমান। ২০১৩ সালে কেবল এই আগ্রহ থেকেই নিজের বাসার একটি রুমে হোম স্টুডিও শুরু করেন বিবিএ পড়ুয়া কারিশমা রহমান। ‘জুরি বাই কারিশমা’ নামক পেজের মাধ্যমে অনলাইনে বুকিং নিয়ে সৌন্দর্যসেবা প্রদান করতেন তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে দেখতে হয়নি তাকে। গ্রাহকদের হেয়ার সেটিং, ব্রাইডাল মেকআপ ও পার্টি মেকআপ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিশমা। মেকআপ বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের প্রস্তুতিও চলছে পুরোদমে।
অন্যদিকে এই ফরমালিনের যুগে তাজা ও ফ্রেশ মাছ সরবরাহ করার দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছে অনলাইন প্রতিষ্ঠান ‘মাটি’। মাটি’র প্রতিষ্ঠাতা ফয়সাল আব্দুল্লাহ জানালেন, মাটি দেশি ও সামুদ্রিক মাছ হোম ডেলিভারি দেয় ঢাকার মধ্যে। এছাড়া সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে বেশকিছু কাজও করেন তিনি। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বই ও ছবি আঁকার সরঞ্জাম প্রদান এর মধ্যে অন্যতম।

অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়াইল্ড অ্যাডভেঞ্চার কাজ করছে ভ্রমণ নিয়ে। রোমাঞ্চকর ভ্রমণের মাধ্যমে পর্যটকদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে নিত্যনতুন স্থানের সঙ্গে। ওয়াইল্ড অ্যাডভেঞ্চারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সাহিল আরমান জানালেন, মূল পেশার পাশাপাশি দুই বন্ধু মিলে নেওয়া এই উদ্যোগের উদ্দেশ্যটা কেবল ব্যবসায়িক নয়। ওয়াইল্ড অ্যাডভেঞ্চার ভ্রমণপিপাসুদের আনন্দের কারণ হতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গহিন বনে হাঁটা ও তাঁবুতে রাত্রিযাপন থেকে শুরু করে পাহাড় পাড়ি দেওয়ার মতো কাজগুলো করতে যারা আনন্দ পান, তারাই ওয়াইল্ড অ্যাডভেঞ্চারের সদস্য।

ওয়াইল্ড অ্যাডভেঞ্চারের আয়োজনে পর্যটকরা ঘুরছেন দেশের দর্শনীয় স্থানগুলোতে
বছর দুয়েক আগে ঘরোয়া পরিবেশে তৈরি খাবার সরবরাহের নিশ্চয়তা নিয়ে আসমা হক কান্তা অনলাইনে ছোট পরিসরে শুরু করেছিলেন পেজ ‘ধবল’-এর কার্যক্রম। মাত্র সাড়ে ৩ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করা ধবল এর মধ্যেই বেশ আস্থা অর্জন করেছে ক্রেতাদের কাছে। শুরুতে কান্তা খাঁটি দুধ ও ঘরে বানানো ঘি দিতেন তার ক্রেতাদের। এখন ধবলে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের আচার, গোটা মসলা, গুঁড়া মসলা, স্ন্যাকস, নাড়ুসহ আরও বেশকিছু আইটেম। খাবারের মান ও ক্রেতাদের ভালোবাসা নিয়েই এতদূর এসেছেন বলে জানান কান্তা।

ধবল এর আচার

অনলাইনে হুট করে কেনা পণ্য চট করে ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করছে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে অন্যতম মেঘস্বর কুরিয়ার সার্ভিস। প্রতিষ্ঠাতা জুন্নুনুর রহমান জানালেন, চাকরির পাশাপাশি নিজে কিছু একটা করার ইচ্ছা থেকে মাত্র দুটি সাইকেল আর ব্যাগপ্যাক নিয়ে শুরু করেছিলেন মেঘস্বর কুরিয়ার সার্ভিসের কার্যক্রম। ক্রেতাদের দুয়ারে স্বল্প সময়ে পণ্য পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর মেঘস্বর।

সাবধানতা
অনলাইন কেনাকাটায় প্রতারণার হারও একদম কম নয়। এক পণ্য দেখিয়ে অন্য পণ্য গছিয়ে দেওয়া, বুকিংয়ের টাকা নিয়ে পণ্য না দেওয়াসহ বিভিন্নভাবেই ঠকে যেতে পারেন। এ থেকে বাঁচতে সচেতনতার বিকল্প নেই। ই-কমার্স সাইট হোক কিংবা ফেসবুক পেজ, প্রথমবার পণ্য কেনার সময় একবারে বড় অংকের না কেনাই ভালো। প্রথমে সামান্য কিছু পণ্য নিয়ে দেখুন। সার্ভিস ও পণ্য ভালো লাগলে তবেই কেনাকাটা করুন সেখান থেকে। ফেসবুকে হঠাৎ কোনও পণ্য দেখেই আগ্রহী হয়ে কিনে ফেলবেন না। প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভালো করে খোঁজখবর নিয়ে তারপরই কিনুন পণ্য।

/এনএ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!